‘সবার বাবার জন্মের শংসাপত্র আছে তো? আমার নেই’, CAA নিয়ে মমতার সাবধানবাণী
এই সময় | ১২ মার্চ ২০২৪
নাগরিকত্ব আইন আসলে বিজেপির একটি ‘জুমলা’ বলে ব্যাখ্যা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হলেও বেশ কিছু নথি চাওয়া হবে, এই অধিকার প্রদানে। সেই নথি কি সব মানুষ খুঁজে পাবেন? প্রশ্ন তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।সিএএ আইনের বিজ্ঞপ্তির কিছু পয়েন্ট তুলে ধরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, এখানে নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য তাঁর বাবার বার্থ সার্টিফিকেট জমা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘ আবেদনের এক জায়গায় বলা হয়েছে বাবার বার্থ সার্টিফিকেট নিয়ে আসতে হবে।’ জনগণের উদ্দেশে তিনি প্রশ্ন করেন, ‘সবার বাবার বার্থ সার্টিফিকেট আছে তো? আমার তো নেই? আমার বাবা-মায়ের জন্মদিন কবে জানি না।’ উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় হাবড়ায় একটি সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠান হাজির ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখান থেকে তিনি জানান, অনেক পরিবার আছে, ব্যক্তি আছেন যাঁদের ৫০-৬০ বছর বয়স। তাঁদের বাবার জন্ম শংসাপত্র খুঁজে পাবেন তো?
নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলনে মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়
মমতা বলেন, ‘আমি মনে করি, এটা পুরোটাই ভাঁওতা।’সিএএ আইনটি এনআরসির সঙ্গে যুক্ত বলেও স্পষ্ট বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর। তিনি জানান, কিছুদিন পরেই সিএএর সঙ্গে যুক্ত করে দেবে। মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষকে উদ্দেশ্য করে মমতার বার্তা, আপনারা কি আদৌ বিশ্বাস করেন আইনটাকে? যদি, তাই হয় তাহলে এতদিন বাদে আইনটিকে কেন চালু করা হল? নির্বাচনের দুদিন আগেই কোনও আইন করলেন, সেটি আদৌ আইনে পরিণত হয়। তাঁর কথায়, ‘বিজেপি অনেক রকম কথা বলবে, ওগুলো সব মিথ্যা।’
এনআরসি প্রসঙ্গ তুলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, আসামে যখন এনআরসি হয়েছিল, তখন ১৯ লাখ মানুষ নাগরিকত্ব হারিয়েছিল, তার মধ্যে বাঙালি হিন্দুরাও ছিল। সেখানে ডিটেনশন ক্যাম্প করে তাঁদের রাখা হয়েছিল। এই রাজ্যে কোনওভাবেই ডিটেনশন ক্যাম্প করতে দেওয়া হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রসঙ্গত, সোমবার সন্ধ্যায় হঠাৎ গোটা দেশ জুড়ে সিএএ কার্যকর করল কেন্দ্রীয় সরকার। এই আইন নিয়ে আজকে হাবড়ার সভা থেকেও বিস্তারিত জানাবেন বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। পুরো আইনের বিজ্ঞপ্তি পড়ে তারপর এই বিষয় নিয়ে বিস্তারিত মতামত দেওয়ার ব্যাপারে মতামত দিয়েছিলেন তিনি। সেইমতো, এদিনের সভা থেকে এই আইনের চরম বিরোধিতা করতে দেখা যায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।