• CAA নিয়ে মতুয়াদের বিশেষ বার্তা মমতার, ঠিক কী কী বিষয় তুলে ধরলেন মুখ্যমন্ত্রী?
    এই সময় | ১২ মার্চ ২০২৪
  • সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন চালু করার ফলে ব্যাপক প্রভাব পড়বে মতুয়াদের উপর। রাজ্যের একাধিক জেলায় বিস্তীর্ণ অংশে মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষের বসবাস। মঙ্গলবার উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় হাবড়ার একটি সরকারি প্রদান অনুষ্ঠানে গিয়ে মতুয়া সম্প্রদায়দের বিশেষ বার্তা দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই আইন চালু করার ফলে অনেকেই নাগরিকত্ব হারাতে পারেন, সেক্ষেত্রে তাঁদের ভোটাধিকার থাকবে কিনা, সে নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী।এদিনের সভা থেকে মতুয়াদের উদ্দেশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘কী মতুয়া ভাই-বোনেরা আপনারা এই আইনটিকে বিশ্বাস করেন? তাহলে এতদিন এই আইনটিকে চালু করা হয়নি কেন?’ এই আইন ভোটের আগে চালু করা হল, সেই আইনের বৈধতা কতোটা আছে? প্রশ্ন তোলেন তিনি। মমতা বলেন, ‘এই আইন এতদিন কেন হয়নি? এটা ২০২০ সালে পাশ করা হয়ে গিয়েছিল। ভোটের আগে কোনও আইন চালু করলে সেটা কি থোড়াই আইন হয়। আপনার অধিকার থাকবে কিনা সন্দেহ আছে। অর্থাৎ, আপনি ভোটটাও দিতে পারবেন কিনা সন্দেহ আছে।’

    এদিনের সভা থেকে সিএএ নিয়ে চরম বিরোধিতা জানান মুখ্যমন্ত্রী। একদিকে, বিজেপির রাজ্য নেতারা যখন বলছেন, এই আইনের পর কারও নাগরিকত্ব যাবে না। সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যুক্তি, এই আইনের পরিপ্রেক্ষিতে আবেদন জানানোর যে নথি চাওয়া হচ্ছে, সেখানে তো বাবার বার্থ সার্টিফিকেট চাওয়া হয়েছে। সবাই আদৌ তাঁর বাবার বার্থ সার্টিফিকেট দিতে পারবেন? সন্দেহ প্রকাশ করেন তিনি।

    এই আইনের সঙ্গে আগামী দিনে এনআরসি যুক্ত করা হবে বলেও সাবধানবাণী মমতার। কিছুদিন আগেই একাধিক জেলায় অনেকেই আধার কার্ড বাতিল করা হচ্ছিল। সেই প্রসঙ্গ টেনে মমতা বলেন, ‘কিছুদিন আগেই মতুয়াদের আধার কার্ড কেন বাতিল করে দেওয়া হচ্ছিল? নমশূদ্রদের আধার কার্ড বাতিল করেছিলেন কেন? এটা পরিষ্কার রাজনীতির খেলা।’ তিনি জানান, এই আইন অনুযায়ী নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করা মানেই, আগেই আপনি বেআইনি হয়ে যাচ্ছেন। সেক্ষেত্রে, একাধিক সরকারি প্রকল্প থেকে তাঁরা বঞ্চিত হতে পারেন বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী।

    রাজ্যের একাধিক জেলায় মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষের বসবাস। বিশেষ করে উত্তর ২৪ পরগনা, নদিয়া জেলার মধ্যে মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষের আধিক্য রয়েছে। মতুয়াদের উদ্দেশে বিজেপির ‘পাতা ফাঁদ’-এ পা না দেওয়ার জন্য আবেদন জানান তিনি। তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্দেশে জানান, যদি এই আইন সঠিকভাবে আইন বলবৎ করার সদিচ্ছা থাকত, তাহলে এক বছর আগে এটা করা যেত। তাতে মানুষ বুঝে যেত, তাঁরা সঠিকভাবে নাগরিকত্ব পাচ্ছেন কিনা। তিনি বলেন, ‘এখন আপনার সেই অধিকার নেই। উল্টে আপনার অধিকার কেড়ে নিল।’
  • Link to this news (এই সময়)