গাড়িতে গণধর্ষণ তরুণীর, প্রগতি ময়দানের ঘটনায় গ্রেপ্তার ২
এই সময় | ১৩ মার্চ ২০২৪
এই সময়: রাতের শহরে এক তরুণীকে গাড়ির মধ্যে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠল শহরে। ঘটনাটি ঘটেছে, রবিবার রাতে প্রগতি ময়দান থানা এলাকায়। নির্যাতিতার অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার রাতে দুজনকে গ্রেপ্তারও করেছে পুলিশ। ধৃতদের নাম, বিকাশ দত্ত এবং চন্দন গুপ্ত। এই দুজন ছাড়াও এই ঘটনায় শ্রীকান্ত নামে আরও এক যুবক জড়িত বলে দাবি তরুণীর।যদিও মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত তাকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। অভিযোগকারী এবং অভিযুক্তরা প্রত্যেকেই প্রগতি ময়দান থানা এলাকার বাসিন্দা। স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনায় প্রশ্নের মুখে রাতের শহরের নিরাপত্তা। পুলিশ সূত্রে খবর, প্রগতি ময়দান থানা এলাকার বাসিন্দা বছর উনিশের ওই তরুণীর গত বছর বিয়ে হলেও ডিভোর্স হয়ে গিয়েছিল।
তারপর থেকে মাস ছয়েক ধরে তিনি বাপের বাড়িতেই থাকছিলেন। সল্টলেক সেক্টর ফাইভের একটি কলসেন্টারে কর্মরত ওই তরুণীর সঙ্গে সামাজিক মাধ্যমে কিছুদিন আগে পরিচয় হয় চন্দনের। সেই সূত্রে ওই তরুণীকে ঘুরতে যাওয়ার প্রস্তাব দেয় একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মী চন্দন। আপত্তি করেননি ওই তরুণী।
রবিবার বিকেল পাঁচটা নাগাদ চন্দনের সঙ্গে বাইকে চেপে ঘুরতে বেরোন তিনি। উত্তর কলকাতার বেশ কয়েকটি জায়গায় ঘোরার পরে রাত ৯ টা নাগাদ অভিযুক্ত জানায়, তাঁর দুই বন্ধু খানিকটা দূরে অপেক্ষা করছে। রাতে সকলে একসঙ্গে মিলে রেস্তরাঁয় খেতে যাওয়া হবে। বাইপাসের পূর্ব পঞ্চান্নগ্রাম আসার পরে বিকাশ নামে চন্দনের এক বন্ধুর ট্রাভেরা গাড়িতে ওঠে সবাই।
অপরিচিত দুই যুবকের আচরণে প্রথমে কোনও অস্বাভাবিক কিছু দেখেননি ওই তরুণী। এমনকী, তাঁরা কোথাও খাওয়াদাওয়াও করেননি। রাত এগারোটা নাগাদ গাড়িটি ধাপার ডাম্পিং গ্রাউন্ডের দিকে যাওয়ার সময়েই ওই তরুণীর সঙ্গে তিন যুবক অশালীন আচরণ করতে শুরু করে বলে অভিযোগ। রাস্তা ফাঁকা থাকার সুযোগে তাঁকে ধর্ষণও করা হয় বলে দাবি ওই তরুণীর।
এরপরেই তাঁকে বাড়ির সামনে নামিয়ে দিয়ে চলে যায় গাড়িটি। প্রগতি ময়দান থানার তদন্তকারীদের কাছে নির্যাতিতা দাবি করেছেন, ‘ওরা ভেবেছিল পুলিশের কাছে আমি যাব না। কিন্তু পুরো বিষয়টি আমি মেনে নিতে পারিনি। তাই বাড়ি ফিরে চুপ করে না থেকে সোমবার সকালেই অভিযোগ দায়ের করি।’
লালবাজার সূত্রে খবর, ওই তরুণীর অভিযোগের ভিত্তিতে মোবাইলের টাওয়ার লোকেশনের সূত্র ধরে সোমবার রাতেই চন্দন গুপ্ত এবং বিকাশ দত্তকে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযুক্তদের শারীরিক পরীক্ষা করা হয়েছে এনআরএস হাসপাতালে। সেখানেই শারীরিক পরীক্ষা হয়েছে অভিযোগকারী তরুণীরও।
তবে, ঘটনার পর থেকেই অন্যতম অভিযুক্ত শ্রীকান্তর মোবাইল সুইচড অফ থাকায় তাকে ধরা সম্ভব হয়নি। ধৃতদের বিরুদ্ধে ৩৭৬ডি(গণধর্ষণ) ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। ধৃত দুজনকে মঙ্গলবার আলিপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। দুজনেই জেরার মুখে অপরাধের কথা স্বীকার করে নিয়েছে বলে দাবি পুলিশের।
আজ, বুধবার অভিযোগকারী তরুণীর গোপন জবানবন্দি নেওয়া হবে। এই ঘটনায় আরও কেউ জড়িত রয়েছে কিনা, ওই তরুণীর সঙ্গে এই তিন যুবকের কোনও পুরোনো শত্রুতা ছিল কিনা, তা জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। নির্যাতিতাকে কোথায়-কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, গাড়ির নম্বরের সূত্র ধরে তা জানার চেষ্টা করছেন পুলিশ কর্মীরা। লালবাজার সূত্রে দাবি করা হয়েছে, জলদি শ্রীকান্তকে গ্রেপ্তার করা হবে।