• ভোট মিটলেই পাহাড়ের উন্নয়ন বোর্ডগুলিকে অর্থবরাদ্দ রাজ্যের
    এই সময় | ১৩ মার্চ ২০২৪
  • এই সময়, শিলিগুড়ি: লোকসভা নির্বাচন পর্ব মিটলেই পাহাড়ের জনজাতি উন্নয়ন বোর্ডগুলিকে অর্থ বরাদ্দ করবে রাজ্য সরকার। মঙ্গলবার শিলিগুড়ির দীনবন্ধু মঞ্চে আয়োজিত এক সভায় এই আশ্বাস দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিন তিনি দীনবন্ধু মঞ্চে উত্তরবঙ্গের একাধিক জনজাতিকে নিয়ে একটি সভা করেন।ওই সভায় লেপচা, ভুটিয়া, তামাং, শেরপা, বিশ্বকর্মা, লিম্বু, খাস, মঙ্গর, রাই, থামি, ভূজেল, কামি, নেওয়ার সমেত প্রায় ১৭টি জনজাতি উন্নয়ন বোর্ডের প্রতিনিধিরা ছিলেন। সদ্য গঠিত নস্য শেখ উন্নয়ন কমিটির সদস্যরাও ছিলেন সেখানে। নস্য শেখ উন্নয়ন বোর্ডকে এদিন ৩ কোটি বরাদ্দ করার কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। আদিবাসী উন্নয়ন দপ্তরকে দ্রুত টাকা বরাদ্দ করারও নির্দেশ দেন।

    সদ্য গঠিত এই উন্নয়ন বোর্ড এখনও সরকারি বরাদ্দ না-মেলায় কাজে নামতে পারছে না। অন্য দিকে, বাকি বোর্ডগুলিকে গত বছরই অর্থ বরাদ্দ করা হয়। তামাং বোর্ডের হাতে এখনও বরাদ্দ টাকার একাংশ রয়েছে।

    মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘নস্য শেখদের আপাতত ৩ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হলো। নস্য শেখদের কমিটিতে আরও কয়েক জন সদস্যকে অন্তর্ভূক্ত করতে হবে। লেপচা বোর্ডের চেয়ারম্যানের প্রয়াণের পরে নতুন চেয়ারম্যান মনোনীত হয়েছেন। তাঁদেরও কমিটি ফের তৈরি করে দেওয়া হবে। বাকি বোর্ডগুলিকে নির্বাচন মিটলে অর্থ বরাদ্দ করা হবে।’

    লোকসভা নির্বাচনের আগে মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণায় সন্তুষ্ট জনজাতি বোর্ডগুলির সদস্যরা। তামাং বোর্ডের চেয়ারম্যান সঞ্জয় তামাং বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী লোকসভা নির্বাচনের পরে অর্থ বরাদ্দ করবেন বলেছেন। ঠিক আছে। আমাদের বোর্ডের হাতে এখনও কিছু টাকা রয়েছে। সেই টাকায় কাজ চলছে। তবে অনেক বোর্ডের চেয়ারম্যানই ভেবেছিলেন যে, আজ নতুন করে অর্থ বরাদ্দ করা হবে।’

    লোকসভা ভোটে পাহাড়ে জনজাতিদের গুরুত্ব অপরিসীম। কেননা, পাহাড়ের জনসংখ্যার বেশির ভাগই জনজাতি অন্তর্ভূক্ত। কালিম্পং জুড়ে বসবাস করেন লেপচারা। পাহাড়ে জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছেন তামাং, রাই, গুরুং, লিম্বু, শেরপা ও ভুটিয়া সম্প্রদায়ের মানুষেরা। ২০১৯ সাল থেকেই জনজাতিদের সমর্থনের উপরে ভিত্তি করে পাহাড়ে তৃণমূল ও তাঁদের জোটসঙ্গী ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার ভোট বাড়তে শুরু করে।

    জিটিএ এবং পঞ্চায়েত নির্বাচনে পাহাড়ের বেশির ভাগ আসন দখল করে তৃণমূল ও তাদের জোটসঙ্গী বিজিপিএম। লোকসভা নির্বাচনেও জনজাতিদের সমর্থন কোনদিকে যাবে, সেদিকে চেয়ে রয়েছে প্রতিটি রাজনৈতিক দলই। জিএনএলএফ অবশ্য মনে করে, জনজাতিদের নিয়ে সভা করে লোকসভা ভোটে দার্জিলিং আসনে কোনও ফায়দা নিতে পারবে না তৃণমূল।

    দলের নেতা মহেন্দ্র ছেত্রী বলেন, ‘রাজ্য সরকারের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতেই পাহাড়ের জনজাতি বোর্ডগুলির বিরুদ্ধে টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ রয়েছে। পুলিশে অভিযোগ দায়ের হলে বিপাকে পড়তে পারেন ভেবে অনেকেই আজ মুখ্যমন্ত্রীর সভায় গিয়েছিলেন। লোকসভা ভোটে জনজাতিদের সমর্থন তৃণমূল কিংবা বিজিপিএম পাবে না।’
  • Link to this news (এই সময়)