লোকসভা নির্বাচনে হাওড়া থেকে নির্দল হয়ে দাঁড়াতে পারেন বলে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন স্বপন(বাবুন) বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইয়ের এই মন্তব্যে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছিল। এবার এই নিয়ে মুখ খুললেন স্বয়ং দলনেত্রী। তিনি ভাইয়ের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করলেন। শুধু তাই নয়, পরিবারতন্ত্রে যে তিনি বিশ্বাস করেন না, তা ঠারে ঠোরে বুঝিয়ে দিলেন।মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘ওর বিষয়ে আমার অনেক কথা কানে এসেছিল। আমি যেদিন থেকে পার্টি করি কোটি কোটি মানুষের সঙ্গে কাজ করি। আমার পরিবার বলে কিছু নেই। আমার পরিবার মানে মা মাটি মানুষের পরিবার। আমাদের ৩২ জন সদস্য বাড়ির। কেউ এমন নয়। এটাতে সবাই খুব ক্ষুব্ধ। বড় হলে অনেকের লোভ বেড়ে যায়। আমার পরিবারের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছেদ হয়ে গেল। দয়া করে আমার নামটা ব্যবহার করবেন না। আমাদের দল যাকে প্রার্থী করেছে তিনিই প্রার্থী।’ বাবা মারা যাওয়ার পর কী ভাবে তিনি ছোট ভাই সহ পরিবারকে সামলেছিলেন, সেই স্মৃতিও শোনা যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কণ্ঠে।
তিনি বলেন, 'আমার পরিবারের সবাই যদি বলে MP-MLA হওয়ার জন্য টিকিট চাই তার মানে তো আমি পরিবারতন্ত্র করব! আমি পরিবারতন্ত্রে বিশ্বাস করি না।' অতীতের স্মৃতি চারণ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'বাবা যখন মারা যায় তখন ওর বয়স ছিল আড়াই বছর। আমি দুধের ডিপোয় কাজ করে ৪৫ টাকা পেতাম এবং সংসার চালিয়েছি। সেই সময় রাজনীতি করতাম বলে ওকে মানুষ করতে পারিনি। বাকি সকলকে মানুষ করতে পেরেছি। ওর পাশে যেন আমাদের পরিবারের নাম না থাকে। আমি মানুষের পরিবার করি, তার জলজ্যান্ত উদাহারণ দিয়ে দিলাম।'
প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি দায়বদ্ধতা বেড়ে গেল বলে দাবি করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, 'কিছু লোভী লোক আমাদের প্রার্থীকে চ্যালেঞ্জ করেছে। তাঁদের জবাব দিতে হবে।'
তিনি আরও বলেন, ‘অনেক কাজ অনেকদিন ধরে পছন্দ করি না। কারণ আমি অন্যায় সহ্য করতে পারি না। তবে সবটা সব সময় বলা যায় না। অনেক সময় বুক ফাটে তবু মুখ ফোটে না। এই নিয়ে তর্কের কোনও প্রয়োজন নেই।আমাদের প্রার্থী প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়। ওর সঙ্গে (স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়) আমার সঙ্গে কোনও সম্পর্ক রাখবেন না। আজ থেকে কোনও সম্পর্ক থাকবে না। যে যার স্বাধীনতা নিয়ে লড়াই করতে পারে। নিজেদের ছোটবেলাটা ভুলে গেছে।