'ভারতের CAA বৈষম্যমূলক', উদ্বেগ প্রকাশ জাতিসংঘ এবং আমেরিকার
এই সময় | ১৪ মার্চ ২০২৪
সোমবারই নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (CAA) জারি করার বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে কেন্দ্র। বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান থেকে হিন্দুসহ অন্যরা, যারা ধর্মীয় নির্যাতনের কারণে, ভারতে চলে আসতে বাধ্য হয়েছেন তাঁদেরকে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে ওই আইনে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। তবে এই আইনে মুসলিমদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কোনও সুযোগ নেই। এই আইন জারি হতেই প্রতিবাদ জানিয়েছে একাধিক রাজনৈতিক দল। এবার এই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে জাতিসংঘ এবং আমেরিকা। ভারতে CAA বাস্তবায়ন করাকে বৈষম্যমূলক বলে মন্তব্য করেছে তারা।উদ্বেগ প্রকাশ
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং জাতিসংঘ (UN) ভারতে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন-২০১৯ বাস্তবায়ন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। জাতিসংঘ আইনটিকে মৌলিকভাবে বৈষম্যমূলক বলে বর্ণনা করেছে। অন্যদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে যে তারা এটি পর্যবেক্ষণ করছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার অফিসের একজন মুখপাত্র বলেন, 'আমরা ২০১৯ সালেই এই নিয়ে বলেছিলাম। আমরা উদ্বিগ্ন। কারণ CAA মূলত বৈষম্যমূলক এবং ভারতের আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের বাধ্যবাধকতার লঙ্ঘন।' আইনটি বাস্তবায়নকারী বিধিবিধান আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ কিনা তাও তারা দেখছেন বলেও জানান ওই আধকারিক।
কী জানিয়েছে আমেরিকা?
ওই আইন জারি করা করা নিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর মার্কিন সরকারও জানিয়েছে তারা এই নিয়ে উদ্বিগ্ন। সেখানের স্টেট ডিপার্টমেন্টের একজন মুখপাত্র বলেন, 'আমরা সিএএ সংক্রান্ত জারি করা বিজ্ঞপ্তি নিয়ে উদ্বিগ্ন। আইনটি কীভাবে কার্যকর করা হবে তা আমরা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি।'
তিনি বলেন, 'ধর্মীয় স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধা এবং সকল সম্প্রদায়ের জন্য আইনের অধীনে সমান আচরণ মৌলিক গণতান্ত্রিক নীতি।' প্রসঙ্গত ২০১৯ সালে ভারতীয় সংসদে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন পাস হয়েছিল। তানিয়ে বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ হয়েছ। এই আইন অনুযায়ী পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে আসা হিন্দু ও শিখদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।
মানবাধিকার সংগঠনগুলির সমালোচনা
মোদী সরকারের আনা সিএএ জারি করার সমালোচনা করেছে মানবাধিকার কর্মী ও সংস্থাগুলি। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এবং অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল একে মুসলমানদের প্রতি বৈষম্যমূলক বলে বর্ণনা করেছে। মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলি বলছে যে এই নাগরিকত্ব আইন প্রতিবেশী দেশগুলির শিয়া মুসলিমদের মতন মুসলিম সংখ্যালঘু গোষ্ঠীগুলিকে বাদ দিয়েছে।
এ ছাড়াও, মায়ানমারের মতন প্রতিবেশী দেশ, যেখানে মুসলমানরা সংখ্যালঘু, তারাও এর বাইরে। যদিও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানান এই আইনটি মুসলিম বিরোধী নয়। কারোর নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার জন্য এই আইন করা হয়নি। কেন্দ্রের শাসক দলের নেতারা বলেন যে প্রতিবেশী মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলিতে নিপীড়নের সম্মুখীন সংখ্যালঘুদের সাহায্য করার জন্য প্রয়োজন ছিল। সেই কারণে এই আইন নিয়ে আসা হয়েছে। এই নিয়ে চলা বিক্ষোভকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে বর্ণনা করেছেন তারা।