ভারত-যোগের প্রমাণ কই, ‘বন্ধু’র প্রশ্নে বিদ্ধ ক্যানাডা
এই সময় | ১৪ মার্চ ২০২৪
এই সময়: খালিস্তানি টাইগার ফোর্সের জঙ্গি নেতা হরদীপ সিং নিজ্জর-খুনে ভারতের হাত আছে বলে খাস পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে সরব হয়েছিলেন ক্যানাডার পিএম জাস্টিন ট্রুডো। কোনও প্রমাণ ছাড়াই! বস্তুত এর পর থেকেই ভারত-ক্যানাডা সম্পর্কে চিড় ধরে। শুরু হয় দু’পক্ষে ব্যাপক চাপানউতোর। সম্প্রতিই আবার নিজ্জর-খুনের সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ করেছে ক্যানাডা।যা নিয়ে আবার তুঙ্গে ওঠে তরজা। সিসি ফুটেজে স্পষ্ট, গত বছর জুনে ব্রিটিশ কলম্বিয়ার একটি গুরুদ্বারের সামনে কী ভাবে এলোপাথাড়ি গুলি চালিয়ে খুন করা হয় নিজ্জরকে। কিন্তু ভারত-যোগের প্রমাণ কই? প্রশ্নটা তুলে এ বার ক্যানাডার অস্বস্তি বাড়াল তাদেরই বন্ধু রাষ্ট্র নিউ জ়িল্যান্ড।
ক্যানাডারই একটা বড় অংশের দাবি, ট্রুডো নেহাত ঘরোয়া রাজনীতির স্বার্থে নিজ্জর-ইস্যুকে কাজে লাগাতে চাইছেন। কৌশলেই ক্যানাডার শিখ ভোটব্যাঙ্ককে হাতে রাখতে বারবার ভারতের দিকে আঙুল তুলছেন তিনি। তবে সূত্রের খবর, এ নিয়ে সম্প্রতিই ‘ফাইভ আই’ গোয়েন্দা গোষ্ঠীর বৈঠকে মুখ পুড়েছে ক্যানাডার।
ফাইভ আই মানে, ক্যানাডা, আমেরিকা, ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া এবং নিউ জ়িল্যান্ডের গোয়েন্দা বিভাগের জোট। সূত্রের খবর, নিজ্জর-কাণ্ডে ক্যানাডার পেশ করা ‘প্রমাণ’ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে ‘বন্ধু’ রাষ্ট্র নিউ জ়িল্যান্ডই। সূত্রের খবর, বৈঠকের মধ্যেই ক্যানাডা-রিপোর্ট নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন নিউ জ়িল্যান্ডের ডেপুটি পিএম উইনস্টন পিটার্স।
বিশেষত এই ঘটনায় ভারতের হাত থাকার বিষয়টি কোনও ভাবেই প্রমাণিত নয় বলে দাবি করেন তিনি। ঘটনাচক্রে এই মুহূর্তে ভারত সফরে রয়েছে পিটার্স। ভারতকে কি এই সন্দেহের কথা জানিয়েছেন? সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এটা স্পষ্ট না-করলেও নিউ জ়িল্যান্ডের ডেপুটি পিএম বলেন, ‘দেখুন, ওই ঘটনার সময়ে আমাদের সরকার ছিল না। আগের সরকার বিষয়টি দেখেছিল। তবে ফাই আই গোষ্ঠীর থেকে যে তথ্য সামনে আসছে, তার গুণমান-বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।’
প্রায় সাড়ে চার দশক রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত আইনজ্ঞ পিটার্সের কথায়, ‘আমি নিজে একজন আইনজীবী হয়ে বলছি, শুধু মামলা হলেই তো হবে না, প্রমাণ কোথায়?’ নিজ্জর-খুনের পর ভারত-ক্যানাডার সম্পর্ক এমন একটা অবস্থায় পৌঁছয়, যাতে দু’দেশই পালা করে কূটনীতিকদের বরখাস্ত করতে শুরু করেছিল। বেশ কিছু দিন বন্ধ ছিল ভিসা ইস্যুও।
তবে ধীরে ধীরে পরিস্থিতি যখন স্বাভাবিক হওয়ার পথে এগোচ্ছিল, তখনই নিজ্জর-খুনের ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসে। ওই ফুটেজে দেখা যায়, দু’টি গাড়ি করে এসে ৬ জন হামলা চালায় নিজ্জরের উপরে। ২০টিরও বেশি গুলিতে ছিন্নভিন্ন হয়ে যান খালিস্তানি নেতা। বোঝাই যায় যে, বেশ পরিকল্পিত ভাবেই হামলা করা হয়েছিল।
কিন্তু কাদের নির্দেশে কারা হামলা চালিয়েছিল, তা এখনও জানায়নি ক্যানাডা। নিউ জি়ল্যান্ড যা বলছে, তাতে বোঝাই যাচ্ছে যে, ভারত-বিরোধী কোনও তথ্যপ্রমাণই নেই ক্যানাডার কাছে।