Nimta Murder Case : বান্ধবীর অ্যাকাউন্টেও টাকা ট্রান্সফার করেন অনির্বাণ!
এই সময় | ১৫ মার্চ ২০২৪
এই সময়: শুধুই টাকা নয়। ভবানীপুরের ব্যবসায়ী ভব্য লাখানি (৪৩) খুনের নেপথ্যে অতীতের আরও কোনও শত্রুতা রয়েছে বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা। যে নৃশংসতার সঙ্গে ওই ওষুধ ব্যবসায়ীকে আগাম পরিকল্পনা করে খুন করা হয়েছে, এবং প্রথম দফায় জিজ্ঞাসাবাদের সময়ে অন্যতম অভিযুক্ত অনির্বাণ গুপ্ত যে ভাবে মাথা ঠান্ডা রেখে তদন্তের মোড় ঘোরানোর চেষ্টা করেছেন তা থেকে এমনটাই মনে করছেন লালবাজারের গোয়েন্দারা। তবে কী সেই কারণ, তা এখনও স্পষ্ট নয়।ব্যবসায়ী খুনের ঘটনায় বৃহস্পতিবার নিজামুদ্দিন এবং সৈয়দ আবেদিন নামে দু’জনকে আটক করেছে পুলিশ। ভব্যর মৃতদেহটি জলের ট্যাঙ্কে আড়াই ফুট ইটের গাঁথনি দেওয়ার কাজে নিমতার বাসিন্দা ওই দুই রাজমিস্ত্রি যুক্ত ছিলেন বলে পুলিশ সূত্রের খবর। ভবানীপুরের ব্যবসায়ী খুনের তদন্তে নেমে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, ভব্য লাখানি গত ৬ মাসে ৫০ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন মূল অভিযুক্ত অনির্বাণকে। ওই টাকা তিনটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়েছিল।
এর মধ্যে ২০ লক্ষ টাকা একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করা হয়। সেই অ্যাকাউন্টটি এক মহিলার নামে রয়েছে। তিনি অনির্বাণের বান্ধবী বলে প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে। ওই মহিলা পুরো ঘটনা জানতেন কি না, ভব্যকে তিনি চিনতেন কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই মূল অভিযুক্ত অনির্বাণের পরিবারের সদস্য-বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জেনেছে, গত কয়েকবছর ধরেই বিলাসবহুল জীবনযাপন করছিল সে। বিভিন্ন নামী হোটেল, পানশালায় গিয়ে মোটা টাকা খরচ করত।
পেশায় স্কুল শিক্ষিকা স্ত্রী এবং সেনাবাহিনীর প্রাক্তন কর্মী শ্বশুরের থেকে বিলাসবহুল জীবনের জন্য মোটা টাকাও নিত অনির্বাণ। বৃহস্পতিবার অনির্বাণের নিমতার বাড়িতে গিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা। বেশকিছু নমুনাও সংগ্রহ করা হয়। পুলিশ জানতে পেরেছে, সোমবার সকালে ভবানীপুরের বাড়ি থেকে বেরিয়ে বালিগঞ্জ সার্কুলার রোডের অফিসে গিয়েছিলেন ভব্য। সেখান থেকে বেরিয়ে বেলা ১২টা নাগাদ তিনি নিমতায় বিজনেস পার্টনার অনির্বাণের বাড়িতে যান।
এরপর থেকে তাঁকে খুঁজে না পেয়ে পরিবার পরের দিন নিখোঁজ ডায়েরি করে বালিগঞ্জ থানায়। তদন্তে জানা যায়, ৫০ লক্ষ টাকা ফেরত চাওয়ায় সোমবার পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ওষুধ ব্যবসায়ীকে ডেকে পাঠায় অনির্বাণ। সেখানেই জোড়াবাগানের বাসিন্দা সুমন দাস নামে এক যুবকের সহযোগিতায় খুন করা হয় ভব্যকে। লালবাজারের গোয়েন্দাদের কাছে অনির্বাণ অবশ্য দাবি করেছে, ৫০ লক্ষ টাকার মধ্যে ৩৩ লক্ষ সে ফিরিয়ে দিয়েছিল। এরপর রাগের মাথাতেই এই ঘটনা।
যদিও তদন্তে যে তথ্য পুলিশের হাতে এসেছে তাতে তদন্তকারীরা নিশ্চিত, অন্তত মাসখানেক ধরে পরিকল্পনা করার পরেই খুন করা হয়েছে ওই ব্যবসায়ীকে। এদিন অরিন্দম-সুমনকে মুখোমুখি বসিয়েও জেরা করেন লালবাজারের সিনিয়র অফিসাররা। কলকাতা পুলিশের এক কর্তা বলেন,‘যে নৃশংসতার সঙ্গে খুন করা হয়েছে তা দেখে মনে হচ্ছে অতীতের কোনও রাগের কারণেই এই ঘটনা। সেটা কী শুধু ৫০ লক্ষ টাকার জন্য, না কি নেপথ্যে আরও কোনও কারণ রয়েছে তা আমরা খতিয়ে দেখছি।’