• Election Commission Of India : ডেডলাইনের আগেই নির্বাচনী বন্ডের তথ্য ইসি-র ওয়েবসাইটে
    এই সময় | ১৫ মার্চ ২০২৪
  • নয়াদিল্লি: নির্ধারিত ডেডলাইনের একদিন আগেই ইলেক্টোরাল বা নির্বাচনী বন্ড সংক্রান্ত তথ্য তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে দিল ভারতের নির্বাচন কমিশন। কোন ব্যক্তি বা সংস্থা কোন তারিখে কত টাকার মূল্যের নির্বাচনী বন্ড কিনেছিল এবং কোন রাজনৈতিক দল কবে, কত টাকার বন্ড এনক্যাশ করেছে বা ভাঙিয়েছে, সেই সংক্রান্ত তথ্য ১২ মার্চ, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নির্বাচন কমিশনকে দিয়েছিল স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (এসবিআই)।সেই তথ্য নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করার জন্য ১৫ মার্চ বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত সময় দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। তার একদিন আগে, বৃহস্পতিবারই সেই তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন জানিয়ে দিল, এসবিআই যে ভাবে তথ্য দিয়েছে, সেই ভাবেই প্রকাশ করা হয়েছে।

    কমিশনের বিবৃতি, ‘এই ব্যাপারে ভারতের নির্বাচন কমিশন (ইসিআই) বরাবর স্বচ্ছতা এবং সব কিছু প্রকাশ্যে রাখার পক্ষপাতী। মাননীয় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশেও সেই অবস্থানই স্পষ্ট।’ প্রসঙ্গত, ২০১৭-১৮ সালে নির্বাচনী বন্ড ব্যবস্থা চালু করে তৎকালীন সরকার। এই স্কিমের মাধ্যমে যে কোনও ব্যক্তি বা সংস্থা নাম-পরিচয় গোপন রেখে নির্বাচনী বন্ড কিনে তা কোনও রাজনৈতিক দলকে অনুদান হিসেবে দিতে পারত।

    কিন্তু রাজনৈতিক অনুদান দেওয়ার এই পদ্ধতিকে অসাংবিধানিক এবং তথ্যের অধিকার আইনের পরিপন্থী বলে উল্লেখ করে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি তা বাতিল করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। সেই সঙ্গে ২০১৯-এর এপ্রিল থেকে ২০২৪-এর ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কে, কত টাকার বন্ড কিনেছে এবং কোন রাজনৈতিক দল কত টাকার বন্ড ভাঙিয়েছে, তার তথ্য ৬ মার্চের মধ্যে নির্বাচন কমিশনের কাছে জমা দিতে এসবিআইকে নির্দেশ দেয় আদালত।

    কোন বন্ড কে কিনেছে এবং তা কোন রাজনৈতিক দল পেয়েছে, সেই তথ্যকে কো-রিলেট করে প্রকাশ করতে ৩০ জুন পর্যন্ত সময় লাগবে বলে সুপ্রিম কোর্টে আর্জি জানিয়েছিল এসবিআই। সামনেই লোকসভা নির্বাচন। বিরোধী শিবির অভিযোগ তোলে, বিজেপিই নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি অনুদান পেয়েছে। অস্বস্তিকর এই সব তথ্য লোকসভা ভোটের আগে প্রকাশ্যে আসতে দিতে চায় না বলে নরেন্দ্র মোদী সরকারই এসবিআইকে ব্যবহার করে তথ্য প্রকাশে দেরি করাচ্ছে।

    সুপ্রিম কোর্ট অবশ্য সোমবার এসবিআইকে কড়া ভর্ৎসনা করে জানিয়ে দেয়, কো-রিলেট করা তথ্য চাওয়া হয়নি। বন্ড কেনা এবং এনক্যাশ করার যা তথ্য ব্যাঙ্কের কাছে আছে, সেটাই মঙ্গলবার বিকেলের মধ্যে নির্বাচন কমিশনের কাছে জমা করতে হবে।

    বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশন সেই তথ্যই তাদের ওয়েবসাইটে তুলে ধরেছে। https://www.eci.gov.in/disclosure-of-electoral-bonds ওয়েবসাইটে মিলবে এই তথ্য। দু’টি ভাগে রিপোর্টটি প্রকাশ করা হয়েছে। প্রথম ৩৩৭টি পাতায় কোন তারিখে কোন ব্যক্তি বা সংস্থা কত মূল্যের নির্বাচনী বন্ড কিনেছেন। আর দ্বিতীয় ভাগের ৪২৬ পাতায় কোন রাজনৈতিক দল কত তারিখে কত টাকার বন্ড ভাঙিয়েছে।

    বন্ডগুলো ১ লক্ষ, ১০ লক্ষ এবং ১ কোটি টাকার। তবে বন্ডের নম্বর প্রকাশ করা হয়নি, ফলে কোন সংস্থার কেনা বন্ড কোন রাজনৈতিক দল পেয়েছে, তা বোঝা সম্ভব নয়। তবে বন্ড কেনা এবং এনক্যাশের তারিখ ও অ্যামাউন্ট দেখে একটা ধারণা করা যেতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

    বন্ড ক্রেতা বা ডোনারদের তালিকায় রয়েছে গ্রাসিম ইন্ডাস্ট্রিজ, পিরামল এন্টারপ্রাইজ, অ্যাপোলো টায়ার, লক্ষ্মী মিত্তল, এডেলওয়েইজ, পিভিআর, কেভেন্টার্স, সান ফার্মা, ভারতী এয়ারটেল, ডিএলএফ কমার্শিয়াল ডেভেলপার্স, বেদান্ত লিমিটেডের মতো একাধিক সংস্থার নাম। অন্যদিকে, বন্ড বা অনুদান প্রাপকের তালিকায় রয়েছে বিজেপি, কংগ্রেস, এআইএডিএমকে, বিআরএস, শিবসেনা, টিডিপি, ওয়াইএসআর কংগ্রেস, ডিএমকে, জেডিএস, এনসিপি, তৃণমূল কংগ্রেস, জেডিইউ, আরজেডি, আপ, সমাজবাদী পার্টি।

    এসবিআই জানিয়েছে, ২০১৯-এর এপ্রিল থেকে ২০২৪-এর ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ২২,২১৭টি নির্বাচনী বন্ড ইস্যু করেছে তারা। তার মধ্যে ২২,০৩০টি বন্ড রাজনৈতিক দলগুলো ভাঙিয়েছে। বাকি ১৮৭টি বন্ড নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এনক্যাশড না হওয়ায় রিডিম করে প্রধানমন্ত্রী ত্রাণ তহবিলে জমা করা হয়েছে।
  • Link to this news (এই সময়)