প্যারিস: মঙ্গলে জনবসতি গড়ার স্বপ্ন না দেখে পৃথিবীকে বাসযোগ্য রাখার চেষ্টা করা উচিত, কারণ জলবায়ু পরিবর্তন বা পরমাণু যুদ্ধ ঘটে গেলেও পৃথিবী লালগ্রহের থেকে অনেক বেশি বাসযোগ্য থাকবে— প্যারিসের এক জলবায়ু সংক্রান্ত বৈঠকে এমন বার্তাই দিলেন আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।সিলিকন ভ্যালির টাইকুনদের বুঝিয়ে দিলেন, মহাকাশযান বানানোর থেকে পৃথিবীকে রক্ষা করা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ওবামা কারও নাম না করলেও ইলন মাস্ক, জেফ বেজ়োসের মতো টেক-টাইকুনরাই তাঁর নিশানা বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
বুধবার প্যারিসের সম্মেলনে ওবামা বলেন, ‘সিলিকন ভ্যালির টাইকুনদের অনেকেই মহাকাশযান বানাচ্ছেন। তাঁদের ধারণা, পৃথিবীর পরিবেশ খারাপ হতে হতে আর বাসযোগ্য থাকবে না। আর তাই মঙ্গলে জনবসতি গড়ার কথা ভাবছেন তাঁরা। আমি তাঁদের দিকে তাকিয়ে ভাবি, কী সব বলছেন? পরমাণু যুদ্ধ ঘটে গেলেও পৃথিবী মঙ্গল গ্রহের থেকে অনেক বেশি বাসযোগ্য থাকবে। আমরা যদি ক্লাইমেট চেঞ্জ বা জলবায়ু পরিবর্তন রোখার জন্য কিছুই না করি, তবু পৃথিবীতে অক্সিজেন থাকবে। যতদূর জানি মঙ্গলগ্রহে কিন্তু সেটা নেই। আমার তাই মনে হয়, এই পৃথিবীর যত্ন নেওয়ার জন্য আমাদের বিনিয়োগ করা উচিত। জ্ঞান আহরণ এবং নতুন আবিষ্কারের জন্য মহাকাশ নিয়ে গবেষণা চলতে পারে, কিন্তু মনুষ্যসমাজের জন্য নতুন বসতি তৈরির জন্য নয়। আমরা এই পৃথিবীতে বসবাসের যোগ্য, তাই এই গ্রহটিকে বাসযোগ্য করে রাখাই অনেক বেশি দরকার।’
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ইলন মাস্কের ‘স্পেসএক্স’ তাদের স্টারশিপ মেগা-রকেট তৃতীয় বারের জন্য পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করতে চলেছে। উদ্দেশ্য— মঙ্গলগ্রহ মানুষের বসবাসের উপযোগী কি না, তা খতিয়ে দেখা। ২০৫০ সালের মধ্যে মঙ্গলগ্রহে কয়েক লক্ষ মানুষ পাঠানোর ব্যাপারে আশাবাদী মাস্ক।
অন্যদিকে, জেফ বেজ়োসের ‘ব্লু ওরিজিন’ আগামী অগস্টেই তাদের ‘নিউ গ্লেন’ মেগা রকেট পরীক্ষা করতে চলেছে। এই পরিস্থিতিতে ওবামার মন্তব্য নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ। ২০০৯-২০১৭ আমেরিকার প্রেসিডেন্ট থাকাকালীনও জলবায়ু পরিবর্তন রোখার ব্যাপারে সওয়াল করেছেন ওবামা। যদিও তাঁর উত্তরসূরি ডোনাল্ড ট্রাম্প জলবায়ু রক্ষার বিষয়টিকে গুরুত্ব না দিয়ে ২০২৫-এর প্যারিস চুক্তি থেকে আমেরিকাকে বের করে আনেন।