এই সময়: লোকসভা ভোটের মুখে সুপ্রিম কোর্টে ধাক্কা খেল মহারাষ্ট্রের বিজেপি-শিবসেনা (শিন্ডে) সরকারের সঙ্গী অজিত পাওয়ার-পন্থী এনসিপি। মূল ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি (এনসিপি)-র প্রতিষ্ঠাতা শরদ পাওয়ারের নাম-ছবি বা শরদদের এতদিনের প্রতীক ঘড়ি অজিত পাওয়াররা ব্যবহার করতে পারবেন না বলে বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তী নির্দেশে জানিয়েছে বিচারপতি সূর্যকান্ত ও বিচারপতি কেবি বিশ্বনাথনের বেঞ্চ।মূল দল থেকে যখন বিচ্ছিন্নই হয়েছেন অজিতরা, তখন নির্বাচন এলে কেন তাঁদের শরদ পাওয়ারের নাম-ছবি ব্যবহারের দরকার পড়ে, তেমন তির্যক মন্তব্যও করেছে শীর্ষ আদালত। অজিতদের নিজস্ব পরিচিতি নিয়ে চলার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। গত ৬ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন কমিশন অজিতদেরই মূল এনসিপি ঘোষণা করে ঘড়ি প্রতীক ব্যবহারের ছাড়পত্র দিয়েছিল।
কমিশনের সেই সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন প্রবীণ মারাঠা-নেতা শরদ পাওয়ার। লোকসভা ভোটের মুখে কমিশনের সিদ্ধান্তে বিপাকে পড়েছিলেন শরদ। অন্য দিকে, উল্লসিত হয়েছিল অজিত-শিবির। মহারাষ্ট্রে ঘড়ি প্রতীকের সঙ্গে এনসিপি, শরদ পাওয়ার অঙ্গাঙ্গী ভাবে যুক্ত।
এই প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের বৃহস্পতিবারের অন্তর্বর্তী নির্দেশে নিশ্চিত ভাবেই আপাতত স্বস্তি পেলেন শরদ। অন্য দিকে, অজিতরা পড়লেন মহাফাঁপরে। নির্বাচন কমিশন তাদের সিদ্ধান্ত জানানোর সময়ে মহারাষ্ট্র বিধানসভায় এনসিপির মোট বিধায়ক সংখ্যার গরিষ্ঠ অংশের হলফনামা অজিতই পেশ করেছেন বলে ঘোষণা করে। মোট ৮১ জন বিধায়কের মধ্যে ৫৭ জনের হলফনামা অজিত পেশ করেছিলেন বলে জানিয়েছিল কমিশন।
শুধু বিধানসভায় বিধায়ক সংখ্যার নিরিখে কোনও দলের প্রতীকের অধিকার নিয়ে কমিশন সিদ্ধান্ত নিতে পারে না বলে এ দিন সওয়াল করেন শরদের আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ভি। দলের গঠনতন্ত্র, সাংগঠনিক কাঠামো, সংগঠনে পদাধিকারী নির্বাচনে দলীয় নিয়মের মতো বিষয়গুলি কমিশন বিবেচনা করেনি বলে অভিযোগ করেন সিঙ্ভি।
তাঁর আরও অভিযোগ, অজিতরা ভোট-প্রচারে শরদের ছবিও ব্যবহার করছেন, যা পেটেন্ট সংক্রান্ত মৌলিক নীতিরও পরিপন্থী। শীর্ষ আদালত আগেই অজিত এবং কমিশনের বক্তব্য জানতে চেয়েছিল। এ দিন অজিতদের প্রতি নির্দেশে কোর্ট জানায়, শরদের ছবি এবং ঘড়ি প্রতীক তাঁরা ব্যবহার করবেন না--এই মর্মে মুচলেকা দিতে হবে। প্রচার-মাধ্যমেও বিষয়টি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানাতে হবে।
অজিতদের আইনজীবী মনিন্দর সিং কমিশনের সিদ্ধান্তের কথা বলার চেষ্টা করলে আদালত জানায়, সেই সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করেই মামলা হয়েছে। ফলে কমিশনের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি। ১৮ তারিখ অজিত শিবিরকে মুচলেকা দিতে হবে বলে জানিয়েছে আদালত। এর আগেই শরদ পাওয়ারকে এনসিপি নাম ব্যবহারে ছাড়পত্র দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। অন্য প্রতীকের বিষয়ে জানাতে কমিশনকেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।