Vladimir Putin: ধর্ষণ-হাতিয়ার মস্কোর! প্রমাণ পেয়েছি: ইউএন
এই সময় | ১৬ মার্চ ২০২৪
এই সময়: যুদ্ধের হাতিয়ার ধর্ষণ! ২০২২-এর নভেম্বরে এই থিমের একটি আন্তর্জাতিক আলোচনাসভায় অংশ নিয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ এনেছিলেন ইউক্রেনের ফার্স্ট লেডি ওলেনা জেলেনস্কি। দাবি করেছিলেন, 'ইউক্রেনীয় মেয়েদের ধর্ষণ করতে রুশ জওয়ানদের উসকানি দিচ্ছেন তাঁদের স্ত্রীরাই। আসলে, এটাই সম্ভবত রাশিয়ান আগ্রাসনের সবচেয়ে কুৎসিত দিক। কারও উপর ক্ষমতা প্রদর্শনের সবচেয়ে বর্বর এবং জান্তব পন্থা হচ্ছে যৌন হিংসা। যুদ্ধের সময় যাঁরা এই ধরনের হামলার শিকার হন, তাঁরা নিরাপত্তার খাতিরে সে ভাবে মুখও খোলেন না। রাশিয়ার সেনারা কিন্তু বুক ঠুকে ধর্ষণের প্রচার করেই চলেছে।' বন্ধ হোক ধর্ষণ- ওই বছরই কান চলচ্চিত্র উৎসবে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নগ্ন প্রতিবাদে সামিল হয়েছিলেন ইউক্রেনের এক তরুণী। রেড কার্পেটে দাঁড়িয়ে হঠাৎই নিজের পোশাক ছিঁড়ে ফেলতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। তরুণীর গায়ে আঁকা ছিল ইউক্রেনের পতাকা । তার উপর ইংরেজিতে লেখা- 'স্টপ রেপিং আস।' রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও তাঁর সেনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ উঠে এসেছে বিশ্বের নাান প্রান্ত থেকে। কিন্তু পরিস্থিতি বদলায়নি দু'বছর পরেও। ইউক্রেনের যুদ্ধে নেমে রাশিয়া 'সিস্টেম্যাটিক টর্চার অ্যান্ড রেপ' চালিয়ে যাচ্ছে বলে এ বার সরব হলো রাষ্ট্রপুঞ্জও। যুদ্ধের আবহে ইউক্রেনে অন্তত ১৬ বার গিয়ে প্রায় ৮০০ জন সাধারণ নাগরিকের সঙ্গে কথা বলেই তারা এই রিপোর্ট তৈরি করেছে বলে দাবি রাষ্ট্রপুঞ্জের। এমনকী, পুরুষ যুদ্ধবন্দিরাও 'নিরাপদ' নয় বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ।দু'বছরেরও বেশি সময় ধরে চলতে থাকা যুদ্ধে হালে কিছুটা হলেও সুবিধাজনক অবস্থানে রাশিয়া। ইউক্রেন পাল্টা হামলা জারি রাখলেও, তাদের বেশ কিছু ভূখণ্ড মস্কো ইতিমধ্যেই কব্জা করে নিয়েছে বলে খবর। সম্ভবত সেই কারণেই রাশিয়ার বাহিনী আরও বেপরোয়া অত্যাচার শুরু করেছে বলে সম্প্রতিই রিপোর্ট পেশ করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জের 'কমিশন অফ এনকোয়েরি' (সিওআই)। অত্যাচার শুধু মেয়েদের উপর নয়, তদন্ত কমিশনের প্রধান এরিক মোজ় সাংবাদিকদের বলেন, 'আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লঙ্ঘন করে কী ভাবে রাশিয়ার সেনা ইউক্রেনেরে সিভিলিয়ানদের উপর মারাত্মক সব অস্ত্রশস্ত্র প্রয়োগ করছে, আমরা তার বেশ কিছু প্রমাণ পেয়েছি।' অবশ্য রুশ বাহিনী আক্ষরিক অর্থেই ইউক্রেনে যুদ্ধাপরাধ চালাচ্ছে কি না, তা এমনও 'প্রমাণসাপেক্ষ' বলে মন্তব্য করেছে সিওআই। এখানেই শেষ নয়, ইউক্রেনীয় শিশুদেরও রাশিয়ার বাহিনী অন্যায় ভাবে তুলে নিয়ে গিয়ে নিজেদের এলাকায় রাখছে বলেও অভিযোগ।
রাশিয়া কিন্তু নিজের অবস্থানেই অনড়। আকারে-ইঙ্গিতে লাগাতার পরমাণু যুদ্ধের হুমকিও দিয়ে চলেছেন তিনি। বলছেন, এই যুদ্ধের আঁচ ছড়িয়ে পড়বে ইউরোপেও। যার পরিণতি হবে ভয়ঙ্কর। এই পরিস্থিতিতে এ দিন রাশিয়াকে প্রতিপক্ষ হিসাবে গণ্য করে বড়সড় আশঙ্কার কথা জানালেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমান্যুয়েল মাক্রঁ। তাই দুর্বল না হয়ে গোটা বিশ্বের শান্তি কামনায় ইউরোপের দেশগুলিকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকার ডাকই দিলেন তিনি। ফেব্রুয়ারিতেই ইউক্রেনে ন্যাটোর সেনা পাঠানোর বিষয়ে একটি প্রস্তাব দিয়েছিলেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট। আমেরিকা, জার্মানি, ব্রিটেনের মতো বেশ কিছু দেশ তা প্রত্যাখ্যান করে। আবার চলমান যুদ্ধের আবহে কিইভের সঙ্গে প্যারিসের একটি নিরাপত্তা চুক্তি নিয়ে ভোটাভুটিও হয় ফ্রান্সের পার্লামেন্টে। যেখানেও বিরোধীরা বেঁকে বসে। এই প্রেক্ষিতেই মাক্রঁ বলেন, 'রাশিয়াকে আমাদের প্রতিপক্ষ হিসেবেই দেখা উচিত। দু'বছর ধরে ইউক্রেন যুদ্ধ চলছে। কিন্তু পুতিন শুধু ইউক্রেনেই থেমে থাকবেন না। ইউক্রেন জয় হয়ে গেলে তিনি ইউরোপের বিরুদ্ধেও যুদ্ধ ঘোষণা করতে পারেন। আমাদের তৈরি থাকতেই হবে।
একাংশে সেই প্রস্তুতি পর্ব শুরুও হয়ে গিয়েছে। বড় পদক্ষেপ করল ন্যাটোর সদস্য ডেনমার্ক। সে দেশে এই প্রথম মেয়েদের জন্যও সেনাবাহিনীতে যোগদান বাধ্যতামূলক করার ব্যাপারে সরকারি তরফে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছে বলে খবর। সূত্রের খবর, ২০২৬ থেকে এই নীতি কার্যকর করতে চলেছে তারা। যদিও তাদের এই পদক্ষেপ লিঙ্গসমতা নিশ্চিত করতে বলেই দাবি ডেনমার্কের।