Local Train : লোকালের লাগামছাড়া লেটে ভোগান্তির শিকার রেলযাত্রীরা
এই সময় | ১৭ মার্চ ২০২৪
এই সময়: আগাম ঘোষণা ছিল রেল কর্তৃপক্ষের, সেই মতো দুর্ভোগের প্রস্তুতিও নিয়ে রেখেছিলেন যাত্রীরা। কিন্তু যে ট্রেনগুলির চলার কথা, সেগুলির চালচলনও যে এমন হবে সেই ধারণা ছিল না কারও, ফলে শনিবাসরীয় দুর্ভোগ আগাম আশঙ্কাকে ছাপিয়ে গেল। ট্রেনের ভরসায় যাঁরা কর্মস্থলে আসার কথা ভেবে রেখেছিলেন, বহু সময় নষ্ট করে ট্রেন-অটো-বাস-মেট্রোতে করে কোনও রকমে অফিসে পৌঁছতে হলো।তার কারণ, ট্রেনগুলি চলেছে অত্যন্ত দেরিতে এবং প্রতি স্টেশনে এত বেশি সময় দাঁড়িয়ে থেকেছে যে, যাত্রীদের পরিকল্পনার দফারফা হয়ে গিয়েছে। ফলে দিনভর চূড়ান্ত নাকাল হতে হয়েছে যাত্রীদের। শিয়ালদহ উত্তরে যে ট্রেনগুলি চলার কথা, কেন সেগুলিও সময়মতো চলল না, তার কোনও সদুত্তর রেল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি। তাদের ব্যাখ্যা, টেকনিক্যাল কারণেই ট্রেন চলাচল কিছুটা ব্যহত হয়েছে।
শিয়ালদহ উত্তর শাখায় ট্রেন লেট কার্যত দস্তুর হয়ে উঠেছে। ওখান থেকে লোকালগুলির যে সময়ে ছাড়ার কথা, সেই ট্রেন প্ল্যাটফর্মে ভিড়ছে নির্দিষ্ট সময়ের বেশ কিছুক্ষণ পরে। স্বাভাবিক ভাবেই ট্রেনে ভিড় বাড়ছে। তার সঙ্গে বাড়ছে যাত্রীদের বিরক্তি। এই দুর্ভোগ কাটাতে, ট্রেন যাত্রা আরও মসৃণ করতে দমদম স্টেশনে ইন্টারলকিং সিস্টেম ঢেলে সাজানোর কাজ শুরু করে রেল।
১৬ অর্থাৎ শুক্রবার মধ্যরাত থেকে শুরু হওয়ার কথা ছিল এই কাজ। কিন্তু শুক্রবার রাত ১০টার পর থেকেই গোলমাল শুরু হয়ে যায়। রাত ১০.৫০-এর রানাঘাট লোকাল শিয়ালদহ প্ল্যাটফর্মে ঢোকে সাড়ে ১১টার পরে। ১১.১৫-এর নৈহাটি লোকাল ঢোকে আরও পরে। স্বাভাবিকভাবেই অফিস ফেরত যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
মূলত শিয়ালদহ-ব্যারাকপুর-নৈহাটি সেকশনে এবং শিয়ালদহ-দমদম ক্যান্টনমেন্ট সেকশনে ট্রেন বাতিল থাকছে। গোটা শিয়ালদহ ডিভিশনে ৮৯২টি ট্রেনের মধ্যে ৭৪৯টি ট্রেন চলবে বলে জানিয়েছিল রেল। সব মিলিয়ে বাতিল হওয়ার কথা ১৪৩টি লোকাল ট্রেনের। এছাড়া ৪৬টি ট্রেনকে অন্য পথে ঘুরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
তিনটি এক্সপ্রেস ট্রেনও বাতিল করা হয়েছে। দুর্ভোগের সময়সীমা ৫২ ঘণ্টা বলা হলেও তার পরেও ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হবে কিনা, তা নিয়ে যাত্রীদের সংশয় থাকছে। শিয়ালদহ-বনগাঁ ও শিয়ালদহ-কৃষ্ণনগর শাখার সমস্ত মাতৃভূমি লোকাল আপাতত সাধারণ ট্রেন হিসেবে চলছে।
শনিবার কিছু অফিস ছুটি থাকলেও যাত্রীদের চাপ বিশেষ কম থাকে না। নিত্য যাত্রীদের কাছে বাতিল ট্রেনের তালিকা থাকায় সেই মতোই সকলে পরিকল্পনা করে আগেই বেরিয়েছিলেন। অভিযোগ, এদিন সকাল থেকেই পুরো ট্রেন চলাচল ব্যবস্থাটিই ঘেঁটে যায়। তার ফলে ধৈর্য্যচ্যুতি ঘটে যাত্রীদের। বেশ কিছু স্টেশনে যাত্রীরা বিক্ষোভও দেখান।
বেলা বাড়লে দুর্ভোগ কমার বদলে ট্রেনের সংখ্যা কমে ভোগান্তির মাত্রা বাড়ে। বারাসতে যে ট্রেনের ঢোকার কথা দুপুর দেড়টায়, তা ঢোকে নির্দিষ্ট সময়ের ৪৫ মিনিট পরে। এক যাত্রী জানান, এর পরে প্রতিটি স্টেশনে সেই ট্রেন ১০-১৫ মিনিট করে দাঁড়াতে শুরু করে। অনেকে দমদম ক্যান্টনমেন্টের বদলে দুর্গানগর স্টেশনে নেমে অটোতে করে নোয়াপাড়া চলে যান। সেখান থেকে মেট্রোতে পৌঁছন কর্মস্থলে। আবার অনেকে বাসে করে পৌঁছন কর্মস্থলে।