• TMC Candidate : 'উধাও' বিধায়কের জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা প্রার্থীর, শোরগোল মালদায়
    এই সময় | ১৭ মার্চ ২০২৪
  • মানস রায়, মালদা: সুজাপুরের মানুষের ক্ষোভে প্রলেপ দিলেন দক্ষিণ মালদা লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী শাহনওয়াজ আলি রায়হান। আগেভাগেই বললেন, ‘সুজাপুরে দলীয় বিধায়কের ভূমিকার জন্য ভোটারদের কাছে হাত জোড় করে ক্ষমা চাইব।’ বিজেপি এটাকে ‘চাল’ হিসেবে দেখলেও আসলে সুজাপুরের তৃণমূল বিধায়ক মহম্মদ আব্দুল গনির জন্য চাপে পড়ে গিয়েছেন তিনি।কথায় বলে, ‘ঘর পোড়া গোরু সিঁদুরে মেঘ দেখলে ভয় পায়’। আব্দুল গনির জন্য রায়হানকে নিয়েও ভয় পেতে শুরু করেছেন সুজাপুরের ভোটাররা। এই লোকসভার মধ্যে সুজাপুর। ঘটনা হলো, সুজাপুরের বিধায়ক প্রাক্তন বিচারপতি তথা রাজ্য ওয়াকফ বোর্ডের চেয়ারম্যান আব্দুল গনি জন্মসূত্রে সুজাপুরের ভূমিপুত্র। গত বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের গড় ভাঙতে তাঁকে সুজাপুর থেকে প্রার্থী করেছিল তৃণমূল।

    ১ লাখ ৩০ হাজারের বেশি ভোটে জিতেও যান তিনি। কিন্তু এর পরে কলকাতা থেকে তাঁকে আর এলাকায় আসতে দেখা যায়নি বলে অভিযোগ। এমনকী কিছুদিন আগে মুখ্যমন্ত্রীর মালদায় প্রশাসনিক সভাতেও গরহাজির ছিলেন তিনি। যা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী।

    এ বার মালদা জেলার কোনও নেতার উপর ভরসা না করে দক্ষিণ মালদা লোকসভা কেন্দ্রে শাহনওয়াজ আলি রায়হানকে প্রার্থী করেছে তৃণমূল। যে এলাকার অন্যতম বিধানসভা কেন্দ্র সুজাপুর। রায়হান সুজাপুর বিধানসভা এলাকার ভূমিপুত্র হলেও দীর্ঘদিন গ্রামছাড়া। প্রথমে কলকাতা। পরে লন্ডন। সেখান থেকেই দেশে ফিরেছেন প্রার্থী হওয়ার জন্য।

    প্রচারে নেমে নিজের জন্মভূমিতে না গিয়েও টের পেয়েছেন, দলের বিধায়কের কল্যাণে তাঁকেও বিড়ম্বনায় পড়তে হতে পারে। সাধারণ মানুষ ইতিমধ্যে বলতে শুরু করেছেন, ‘ফরেনার প্রার্থীকে জিতিয়ে কী লাভ?’ শুক্রবার সাংবাদিক সন্মেলনে তাই রায়হান অকপটে বলেই ফেললেন, ‘ভোটে জিতে এলাকার সঙ্গে সম্পর্ক না রাখাটা প্রতারণা। আমি নিজে বিধায়ককে ফোন করেছিলাম, কিন্তু আশানুরূপ সাড়া পাইনি। সুজাপুরে গিয়ে প্রথম কাজই হবে আমাদের বিধায়কের কাজের জন্য ক্ষমা চাওয়া। হাতজোড় করে বলব, আমিই সাংসদ এবং বিধায়কের দায়িত্ব পালন করব। যতদিন না বিধানসভার ভোট হচ্ছে ততদিন সুজাপুরের মানুষের কথা বিধানসভায় পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব নেব।’

    বিজেপির দক্ষিণ মালদা সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক অম্লান ভাদুড়ী অবশ্য বলেছেন, ‘ক্ষমা চাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করাটা আসলে সাধারণ মানুষকে বোকা বানিয়ে ভোটের সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা। নিজে বিপাকে পড়েছেন বলে দলের বিধায়কের অক্ষমতা নিয়ে এই মন্তব্য করেছেন তিনি।’

    শুধু সুজাপুর নয়, রায়হানকে ভাবাচ্ছে ইংরেজবাজারও। পুরসভা নির্বাচনে তৃণমূল বিপুল ভোটে জিতলেও লোকসভা ও বিধানসভার ভোটের নিরিখে বিজেপি এগিয়ে। এটা সাবোতাজ বলে মনে করেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘এই বিষয়টি নিয়ে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব ওয়াকিবহাল। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং ইংরেজবাজার নিয়ে সতর্ক করেছেন। আশ্বাস দিয়ে বলেছেন, দল সবরকম ভাবে নজর রাখবে।’
  • Link to this news (এই সময়)