• বেলদায় অভিযানে উদ্ধার কোটি টাকা মূল্যের গাঁজা, গ্রেপ্তার পাঁচ
    বর্তমান | ১২ এপ্রিল ২০২৪
  • সংবাদদাতা, বেলদা: ওড়িশা বর্ডার থেকে বনগাঁ সীমান্ত ধরে বাংলাদেশে পাচারের আগে এসটিএফ ও পুলিসের যৌথ অভিযানে উদ্ধার প্রায় কোটি টাকার গাঁজা। জাতীয় সড়কে বেলদা থানার শ্যামপুরা এলাকায় পেঁয়াজ বোঝাই লরির ভেতর থেকে উদ্ধার হয় এই গাঁজা। পাশাপাশি সঙ্গের একটি প্রাইভেট কার থেকেও উদ্ধার হয় গাঁজা। ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিস। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে পাচারের কাজে ব্যবহৃত গাড়ি দু’টি।

    খড়্গপুর-বালেশ্বর জাতীয় সড়ক ধরে প্রতিদিনই যাতায়াত করে বহু পণ্যবাহী লরি। আর সেই লরিতে বিভিন্ন পণ্যের মাঝে লুকিয়ে পাচার হচ্ছে মাদকদ্রব্য। মাঝেমধ্যেই অভিযান চালিয়ে ওড়িশা সীমানা সংলগ্ন দাঁতন, বেলদা, নারায়ণগড় থানা এলাকায় নাকা পয়েন্ট ও টোল প্লাজাতে ওই গাড়িগুলি থেকে উদ্ধার হচ্ছিল মাদকদ্রব্য। পুলিসের একটা সূত্র জানাচ্ছে, বেশ কয়েক মাস ধরে সড়কপথকে এড়িয়ে রেলপথ ব্যবহার করতে শুরু করেছিল পাচারকারীরা। কয়েকদিন আগে দাঁতন ও খড়্গপুর স্টেশনে উদ্ধার হয়েছিল গাঁজা। নির্বাচন ঘোষণার পর সীমান্তে এই মাদকদ্রব্য পাচার রোধে আরও বেশি সতর্ক পুলিস। বুধবার রাতে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিসের স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের কাছে খবর আসে ওড়িশা থেকে একটি গাঁজার বড়সড়  কনসাইনমেন্ট রাজ্যে প্রবেশ করছে। এরপরই শ্যামপুরার কাছে একটি পেঁয়াজ বোঝাই লরি ও একটি প্রাইভেট কারকে ধরা হয়। দু’টি গাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার হয় প্যাকেট বন্দি বিপুল পরিমাণ গাঁজা। এর ওজন ৫ কুইন্টাল ১ কেজি, আনুমানিক মূল্য প্রায় এক কোটি টাকা। লরি থেকে তিন যুবক ও প্রাইভেট কার থেকে আরও দুই যুবককে গ্রেপ্তার করে পুলিস। ধৃতদের নাম শামিম মণ্ডল (৩৭), জুলফিকার মণ্ডল (৩০) দু’জনের বাড়ি বনগাঁ এলাকায়। বাকি তিনজন হল হাসান মোল্লা (২৯), সৌমেন দাস (২১), প্রসেনজিৎ সরদার (২১)। এদের বাড়ি উত্তর চব্বিশ পরগনার হাবড়াতে। 

    পুলিস সূত্রে জানা গেছে, প্রথম দু’জন যুবক উত্তর ২৪ পরগনা এলাকা থেকে একটি লরি ভাড়া করে ওড়িশার অন্ধ্রপ্রদেশ সীমান্ত এলাকায় নিয়ে যায়। সেখান থেকে ওই বিপুল পরিমাণ গাঁজা লরিতে লোড করে তার ওপরে পেঁয়াজের বস্তা চাপিয়ে দেয়। প্রাইভেট কারেও বেশ কিছু প্যাকেট লোড করে লরির সামনে সামনে চলতে থাকে। তদন্তকারী এক আধিকারিক বলেন, প্রাইভেট কারটি প্রথমে রাস্তায় আগে গিয়ে খোঁজ নিত কোথায় কেমন পুলিসের নাকা রয়েছে। সেই মোতাবেক প্রায় দশ কিলোমিটার পেছনে থাকত লরিটি। প্রাইভেট কারে থাকা যুবকরা খবর দিলে লরি নিয়ে এগত বাকিরা। কখনও পেঁয়াজ, কখন তরমুজ, কখনও চালের বস্তার আড়ালে পাচার করত গাঁজা। বুধবার রাতে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে প্রথমে প্রাইভেট কারটি ও পরে লরিটিকে ধরে ফেলে পুলিস। এই যুবকদের সঙ্গে আন্তঃরাজ্য পাচার চক্রের আর কারা জড়িত, তার সন্ধান চালাচ্ছে পুলিস। ধৃতদের বৃহস্পতিবার পেশ করা হয় মেদিনীপুর আদালতে। এদিন স্পেশাল কোর্ট বন্ধ থাকায় তাদের একদিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। আজ ফের ধৃতদের তোলা হবে স্পেশাল কোর্টে।
  • Link to this news (বর্তমান)