• জোর করে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ানোর মাশুল! আলিপুরের হস্টেলে আত্মঘাতী খড়্গপুরের তরুণী
    বর্তমান | ১৩ এপ্রিল ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: কবিতা লেখা ছিল তাঁর নেশা! কিন্তু বাবা-মায়ের ইচ্ছে, তাঁদের মেয়ে ইঞ্জিনিয়ার হবে। মেয়ের তাতে সায় ছিল না মোটেও। একটা সময় বাবা-মায়ের জেদের কাছে হার মানে অষ্টাদশী। শেষ পর্যন্ত ঘটে গেল মর্মান্তিক পরিণতি! অপছন্দের বিষয় নিয়ে পড়তে বাধ্য হওয়ার জেরে মানসিক টানাপোড়েন। আর তার জেরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হলেন সেই মেয়ে। কার্যত অভিভাবকদের ইচ্ছা পূরণের মাশুল দিলেন নিজের জীবনের বিনিময়ে! 

    শুক্রবার সকাল সাড়ে ছ’টা নাগাদ আলিপুর থানার হেস্টিংস হাউসের এই ঘটনা সামনে আসে। হস্টেলের ৩৫ নম্বর রুম থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্রী অনিন্দিতা লাহাকে। সিলিং ফ্যান থেকে বিছানার চাদর ও গামছা দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে ঝুলছিলেন তিনি। তাঁকে উদ্ধার করে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিস। সেখানেই চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আদতে খড়্গপুর লোকাল থানা এলাকার বাসিন্দা অনিন্দিতা কলকাতার যোধপুর পার্কে একটি পলিটেকনিক কলেজে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছিলেন। কিন্তু শুরু থেকেই এই বিষয় নিয়ে পড়াশোনায় তাঁর সায় ছিল না বলে মানসিক হতাশা গ্রাস করেছিল। জোর করে তাঁকে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে বাধ্য করা নিয়ে বাবা-মায়ের সঙ্গে তাঁর মন কষাকষিও চলছিল। কিন্তু তার পরিণতি যে এই জায়গায় গিয়ে দাঁড়াবে, দুঃস্বপ্নেও ভাবতে পারেননি অনিন্দিতার অভিভাবকরা।

     কলকাতা পুলিসের একটি সূত্র জানাচ্ছে, অস্বাভাবিক মৃত্যুর তদন্তে নেমে মহিলা হস্টেলের ঘরে তল্লাশি চালিয়ে তারা একটি খাতা উদ্ধার করে। সেখানে অনিন্দিতা নিজের হাতে লিখে গিয়েছেন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া নিয়ে তাঁর তীব্র অভিমান ও হতাশার কথা। প্রাথমিক তদন্তে পুলিস কোথাও কোনও অসঙ্গতি পায়নি। তবে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। ওই ছাত্রীর পরিবার এদিন সকালেই খড়গপুর থেকে কলকাতায় ছুটে আসে।  শুক্রবার রাত পর্যন্ত এই ঘটনায় আলিপুর থানায় কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি। তবে সবদিক খোলা রেখে তদন্ত চালাচ্ছে কলকাতা পুলিস।
  • Link to this news (বর্তমান)