• Court: চিকিৎসায় গাফিলতি, ক্ষতিপূরণের নির্দেশ ক্রেতা আদালতের
    আজকাল | ২৫ নভেম্বর ২০২২
  • মিল্টন সেন, হুগলি‌: পেটে ব্যথা নিয়ে চিকিৎসক দুর্গাপদ মুখার্জির শরণাপন্ন হয়েছিলেন নদিয়া জেলার শান্তিপুর এলাকার বাসিন্দা পাপিয়া বিশ্বাস।

    দুর্গাপদ বাবু ইএসআই হাসপাতালের চিকিৎসক। একইসঙ্গে তিনি ভদ্রেশ্বরে প্রাইভেট প্র্যাকটিস করতেন। ক্রেতা আদালতের আইনজীবী সুরজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ব্যথা নিরাময়ের জন্য চিকিৎসক দুর্গাপদ বাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি আগের চিকিৎসার যাবতীয় কাগজপত্র খতিয়ে দেখেন। তার পর পাপিয়া দেবীকে হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন। পরীক্ষার পর জানিয়ে দেন পাপিয়া দেবীর গল ব্লাডারে পাথর জমেছে। ডাঃ দুর্গাপদ মুখার্জি এবং ডাঃ সুশান্ত দে পাপিয়া বিশ্বাসের অস্ত্রোপচার করেন। গত ২০১১ সালের ২৯ আগস্ট হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরেও নানান সমস্যায় ভুগতে থাকেন পাপিয়া দেবী। বিশেষ করে বারবার প্রস্রাব এবং বমির সমস্যা প্রকট হয়ে ওঠে। সমস্যা নিয়ে পাপিয়া দেবী একাধিকবার ডাঃ সুশান্ত দে’‌কে জানান। ডাক্তারবাবু পাপিয়া দেবীকে পুনরায় কিছু পরীক্ষার পরামর্শ দেন, তবে লাভ হয়নি। এরপর পাপিয়া দেবী কল্যানীর ডাঃ এস এন বসুর সঙ্গে পরামর্শ করেন। ডাক্তার বসু সব দেখে শুনে পাপিয়া দেবীকে পুনরায় অস্ত্রোপচার করার পরামর্শ দেন। আইনজীবী সুরজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন, দেখা যায় আগের অস্ত্রোপচারে গোটা অন্ত্রটাই কেটে বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এরপর কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালের পর পর দু’‌বার পাপিয়া দেবীর অস্ত্রোপচার হয়। চিকিৎসক জে কে সাউ অস্ত্রোপচার করেন। গত ২১ সেপ্টেম্বর ২০১১ তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর পুনরায় চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ডাঃ উত্তম লোধ পাপিয়া দেবীর অস্ত্রোপচার করেন। তারপর তিনি সুস্থ হন। গত ১৯ মার্চ ২০১২ চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে হুগলি জেলা ক্রেতা আদালতের দ্বারস্থ হন পাপিয়া দেবী। এবং ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের দাবি করে মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ দশ বছর ধরে চলে মামলা। চলতি মাসে হুগলি জেলা ক্রেতা আদালতের নিষ্পত্তি কমিশমের প্রধান বিচারক দেবাশীস বন্দোপাধ্যায় এবং দুই সদস্য বিচারক মীনাক্ষী চক্রবর্তী ও দেবাশীস ভট্টাচার্য সহমত হন। চিকিৎসক দুর্গাপদ মুখার্জি এবং চিকিৎসক সুশান্ত দে’‌কে চিকিৎসায় গাফিলতির জন্য মামলার খরচ ১০ হাজার টাকা সহ মোট ২ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা দেওয়ার নির্দেশ দেন। সঙ্গে রায় দানের ৬০ দিনের মধ্যে সেই ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেন। জানিয়ে দেন প্রত্যেক চিকিৎসক ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা করে দেবেন। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্দেশ পালন না করা হলে উভয়কে আরও ৫ হাজার টাকা অতিরিক্ত উপভোক্তা আইনি সহায়ক তহবিলে জমা দিতে হবে। আইনজীবী সুরজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন, দেরিতে হলেও ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন পাপিয়া দেবী। তবে বর্তমানে কর্মক্ষমতা হারিয়ে শয্যাশায়ী তিনি।
  • Link to this news (আজকাল)