নিজস্ব প্রতিনিধি, মালদহ এবং সংবাদদাতা, পুরাতন মালদহ: প্রায় এক পক্ষকাল মালদহবাসীকে আতঙ্কে রাখার পর বনদপ্তরের জালে ধরা পড়ল পূর্ণবয়স্ক কুমির। মানিকচক, ইংলিশবাজার, পুরাতন মালদহ, হবিবপুর সহ জেলার একাধিক ব্লক ও শহর এলাকার বাসিন্দারা কুমিরটির ভয়ে তটস্থ হয়েছিলেন। কালিন্দ্রী, মহানন্দা, পুনর্ভবা নদী দাপিয়ে বেড়ানোর পর বৃহস্পতিবার দুপুরে হবিবপুরে সেটি জালবন্দি হয়। কুমিরটি মিষ্টি জলের বলে বনদপ্তরের আধিকারিকদের অনুমান। হবিবপুর ব্লকের অন্তর্গত শ্রীরামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘাটকালী এলাকায় পুনর্ভবা নদীর জলে কুমিরটিকে স্থানীয় বাসিন্দারা দেখতে পান। সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা বনদপ্তরে খবর দেন। বেশ কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় বনদপ্তর কুমিরটিকে বাগে আনে। তাদের জালে কুমির বন্দি হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকাবাসী আতঙ্কমুক্ত হয়। বনদপ্তর এবং পুলিস-প্রশাসনের কর্তারাও হাঁফ ছাড়েন।
উল্লেখ্য, সপ্তাহ দুয়েক আগে মানিকচকে প্রথম কুমিরটি দেখা যায়। তারপর সেটি কয়েকদিন ধরে মহানন্দা নদীতে ঘোরাফেরা করছিল। ইংলিশবাজার শহরে চরম আতঙ্ক ছড়ায়। নদীতে নামা কার্যত বন্ধ হয়ে যায়। পুলিসের তরফে এলাকায় মাইকিং করে বাসিন্দাদের সতর্ক করা হয়। গত দু’দিন ধরে ওই কুমিরটিকে হবিবপুর ব্লক এলাকায় পুনর্ভবা নদীতে দেখা যাচ্ছিল। ফলে এলাকার বাসিন্দারা আতঙ্কে নদীতে নামতে পারছিলেন না। এদিন কুমিরটি উদ্ধার হওয়ায় সকলেই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন। জাল থেকে বের করে কুমিরটিকে মাথা থেকে লেজ পর্যন্ত দড়ি দিয়ে বেঁধে ফেলা হয়। পরে বনকর্মীরা সেটিকে পিকআপ ভ্যানে চাপিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য নিয়ে যান। বাসিন্দারা কুমির দেখতে ভিড় জমান।
বনদপ্তরের আধিকারিকদের অনুমান, ওই কুমিরটি বাংলাদেশ থেকে পুনর্ভবা হয়ে প্রথমে মহানন্দা নদীতে পৌঁছায়। তারপর কালিন্দ্রী নদীতে সেটি চলে গিয়েছিল। পরে ফের সেটি মহানন্দা নদী হয়ে পুনর্ভবায় চলে আসে। তবে গঙ্গা থেকে কোনওভাবে জেলায় কুমিরটি ঢুকে থাকতে পারে বলেও বাসিন্দাদের একাংশ মনে করছেন।