• বাঁধ সংস্কারে তৎপর হয়েছে সালেপুর-১ পঞ্চায়েত
    বর্তমান | ২৫ নভেম্বর ২০২২
  • প্রদীপ্ত দত্ত, আরামবাগ: ভাঙন কবলিত এলাকা। ফি বছর বন্যায় ফসল নষ্ট হয়। সেই সমস্যা মেটাতে তৎপর হয়েছে আরামবাগের সালেপুর-১ পঞ্চায়েত। যা এবার পঞ্চায়েত ভোটে ইস্যু করতে চলেছে তৃণমূল। তার সঙ্গে রাস্তাঘাট ঢালাই, পাকা ড্রেন, সৌর বিদ্যুতের আলোর ব্যবস্থা তো আছেই। গত বিধানসভা ভোটে এই পঞ্চায়েত এলাকায় ভালো ভোট পেয়েছিল বিজেপি। সেই কাঁটা দূর করতে উন্নয়ন অস্ত্রেই শান দিচ্ছে শাসকদল তৃণমূল। বিরোধীরা অবশ্য, অনিয়ম, অনুন্নয়ন ও তৃণমূল নেতাদের ফুলেফেঁপে ওঠাকেই ইস্যু করে প্রচারে নামতে চলেছে। 

    এই পঞ্চায়েতের ১৩টি আসনই তৃণমূলের দখলে থাকলেও গত বিধানসভা নির্বাচনে পঞ্চায়েত এলাকায় ভালো ভোট পায় বিজেপি। সেই কাঁটা দূর করতে উন্নয়নকেই ঢাল করেছে তৃণমূল। জোর কদমে শুরু হয়েছে প্রচার। বিজেপি বিধায়ককে এলাকায় পাওয়া যায় না বলে দাবি বাসিন্দাদের। যা নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে। যার প্রভাব ভোটে পড়তে চলছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। যদিও বিজেপি বিধায়ক সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

    গত পাঁচ বছরে সালেপুর-১ গ্ৰাম পঞ্চায়েত এলাকায় সবচেয়ে বেশি জোর দেওয়া হয়েছে ঢালাই রাস্তা, পাকা ড্রেন তৈরি ও নদী বাঁধ সংস্কারের কাজে। এই পঞ্চায়েতের হাত ধরে একাধিক কাঁচা রাস্তা ঢালাই ও পিচের হয়েছে। পানীয় জলের সমস্যা মেটাতে টিউবওয়েল ও সাবমার্সিবল বসানো হয়েছে। বেশ কয়েকটি জায়গায় সৌর বিদ্যুতের আলোও বসেছে। যদিও পানীয় জলের সমস্যা এখনও বেশ কিছু এলাকায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন বাসিন্দারা।

    রামনগর গ্ৰামের বাসিন্দা জোৎস্না কোটাল বলেন, আমাদের এলাকায় একটিমাত্র টিউবওয়েল আছে। আর একটা টিউবওয়েল হলে পানীয় জলের সমস্যা মিটবে। তবে স্থানীয় নেতারা সমস্যা হলে মেটানোর চেষ্টা করেন।

    মোবারকপুর গ্ৰামের বাসিন্দা করালি খামরুই বলেন, এলাকার গির্জাতলা থেকে রায়পুর স্লুইস গেটের রাস্তা খুব খারাপ। এই রাস্তাটির দ্রুত সংস্কার প্রয়োজন। রাস্তাটি ঠিক হলে বন্দর, পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল যাতায়াত সহজ হবে।

    পঞ্চায়েতের প্রধান সরস্বতী সোরেন বলেন, পঞ্চায়েতের মাধ্যমে এলাকার উন্নয়নের কাজ যেমন চলছে, তেমন রাজ্য সরকারের প্রকল্পের সুবিধাও ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আমরা বিপদে আপদে এলাকার মানুষের পাশে থাকি। এলাকার বাইশ হাজার বাসিন্দার মধ্যে ইতিমধ্যেই পাঁচ হাজার মহিলা লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা পাচ্ছেন। কৃষি প্রধান এলাকার সাত থেকে আট হাজার চাষি কৃষকবন্ধু প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন। এলাকার পাশ দিয়ে দ্বারকেশ্বর নদ বয়ে গিয়েছে। বর্ষায় নিয়ম করে এই এলাকার মানুষ বন্যার কবলে পড়তেন। সেই সমস্যার সমাধানে বাঁধ সংস্কারের কাজে জোর দেওয়া হয়েছে। যে কাজগুলি এখনও বাকি রয়েছে, তা দ্রুত শেষ করা হবে।

    আরামবাগের পোড়খাওয়া সিপিএম নেতা শক্তিমোহন মালিক বলেন, পঞ্চায়েতের দুর্নীতি নিয়ে মানুষ ক্ষুব্ধ। তা আমরা প্রচারে গিয়ে টের পাচ্ছি। সুষ্ঠুভাবে ভোট হলে এই পঞ্চায়েত আমাদের দখলে আসবে।

    আরামবাগের বিজেপি বিধায়ক মধুসূদন বাগ বলেন, এলাকার অধিকাংশ গ্রামীণ রাস্তার সংস্কার হয়নি। বহু বাসিন্দা আবাস যোজনার বাড়ি ও শৌচালয় পাচ্ছে না। পানীয় জলের সমস্যাও আছে। তৃণমূল যতটা উন্নয়নের ঢাক পেটাচ্ছে, তার সিকিভাগও কাজ হয়নি। বাসিন্দারাই জানেন, আমি তাঁদের সঙ্গে থাকি। তাই কে কী বলল, তাতে ভোটে কোনও প্রভাব পড়বে না। আরামবাগ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি গুণধর খাঁড়া বলেন, সিপিএমের অত্যাচার এখানকার মানুষ দেখেছেন। অত্যাচারের সেই দিনগুলির ছবি মুছে যায়নি। যুব সমাজের একাংশ গত বিধানসভা নির্বাচনে আমাদের কাছ থেকে সরে গিয়েছিল। তারা আবার ফিরে আসছে। এখনও অনেক কাজ বাকি আছে। ধীরে ধীরে সব কাজ হবে।
  • Link to this news (বর্তমান)