হেলদোল নেই প্রশাসনের, চাঁদা তুলে খাল সংস্কারে হাত দিলেন স্থানীয় কৃষকরা
বর্তমান | ২৫ নভেম্বর ২০২২
সংবাদদাতা, কল্যাণী: চাঁদুড়িয়া-১ নম্বর পঞ্চায়েতের মলিচাগর এলাকায় চাঁদা তুলে খাল সংস্কারে হাত দিলেন স্থানীয় কৃষকরা। দীর্ঘদিন ধরে খাল মজে যাওয়ায় জলের অভাব হচ্ছিল। ফলে চাষের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছিল। প্রশাসনকে বারবার জানিয়েও খাল সংস্কার হচ্ছিল না। ফলে নিজেরাই সংস্কারের কাজে হাত দিলেন বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। তাঁদের বক্তব্য, খাল সংস্কার হয়ে গেলে ফের বইবে জোয়ার ভাটা। সেচের জল মিললে ফসলও উৎপন্ন হবে। আর অনাহারে কাটাতে হবে না চাষীদের।
চাঁদুড়িয়া-২ নম্বর পঞ্চায়েতের মলিচাগরের কিছু অংশ এবং চাঁদুড়িয়া-২ পঞ্চায়েতের বাবলাতলা ও বালাপাড়ায় এই সরু খালের প্রায় তিন কিলোমিটার অংশ সংস্কারে উদ্যোগী হয়েছেন স্থানীয় কৃষকরা। এই কাজে প্রায় আশি হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। খালের গভীরতা বাড়াতে জমে থাকা পলি জেসিবির সাহায্যে তুলে ফেলা হচ্ছে। কচুরিপানাও পরিষ্কার করা হচ্ছে। এই খালটি হুগলি নদীতে মিশেছে। দীর্ঘদিন সংস্কার হয়নি বলে কৃষকদের অভিযোগ। যার ফলে জল ঠিকমতো বইতে পারত না। এই বিস্তীর্ণ এলাকার জমি বর্ষায় আবার খালের উপচে পড়া জলে ডুবে যেত। তাতেও চাষের কাজ ব্যাহত হত। খাল সংস্কার হওয়ার পর কৃষকরা আশ্বস্ত হয়েছেন। নিজেরা দাঁড়িয়ে খাল সংস্কারের কাজ তদারকি করেছেন। খালের আশপাশে প্রায় ৫০০ বিঘা চাষের জমি রয়েছে। স্থানীয় মানুষরা জানাচ্ছেন, খালে পর্যাপ্ত জল থাকলে স্যালো মেশিন দিয়ে সেই জল চাষের কাজে ব্যবহার করা যাবে। তাতে এলাকার মৎস্যজীবীরাও উপকৃত হবেন।
রফিক মণ্ডল নামে এক কৃষক বলেছেন, ‘আমার বিঘে দেড়েক চাষের জমি আছে। খাল সংস্কারের জন্য আমার টাকা খরচ হয়েছে ঠিকই কিন্তু কাজ হওয়ার পর বছরে দু’বার চাষ তো করতে পারব। স্বাগতম বালা নামে বালাপাড়ার এক বাসিন্দা বলেছেন, ‘দীর্ঘদিন প্রশাসনের কাছে দরবার করা হলেও খাল সংস্কারে হাত দেওয়া হয়নি। তাই আমরা উদ্যোগ নিয়ে নিজেদের টাকা খরচ করে একপ্রকার বাধ্য হয়ে খাল সংস্কারের কাজ করেছি।’ চাঁদুড়িয়া-১ নম্বর পঞ্চায়েতের প্রধান সঞ্জয় বিশ্বাস এ প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘ খাল সংস্কার করার জন্য জেলা প্রশাসনের কাছে প্রস্তাব আগেই পাঠানো হয়েছে। তার আগে চাষীরা খাল সংস্কার করেছেন যাতে বৃষ্টির জল বেরিয়ে যেতে পারে।’ - নিজস্ব চিত্র