• নদীয়া ও কিষানগঞ্জে বিস্ফোরক তৈরি করছে মাওবাদীরা, রিপোর্ট এনআইএর
    বর্তমান | ২৮ নভেম্বর ২০২২
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গে ফের বিস্ফোরক এবং আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির কাজে হাত দিয়েছে মাওবাদীরা। একটি পুরনো মামলার তদন্তে নেমে সম্প্রতি এই চাঞ্চল্যকর তথ্য জানতে পেরেছেন জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা বা এনআইএর গোয়েন্দারা। এ সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে পাঠানো হয়েছে। দিল্লিতে পাঠানো ওই গোয়েন্দা রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, নদীয়া জেলার পাশাপাশি বাংলা–বিহার সীমান্তে কিষানগঞ্জে বিস্ফোরক এবং আগ্নেয়াস্ত্র তৈরি করছে মাওবাদীরা। বিষয়টি উদ্বেগজনক। অন্যতম নিষিদ্ধ সংগঠন সিপিআই (মাওবাদী) দলের স্কোয়াড সদস্যদের আইইডি, ল্যান্ড মাইনের মতো বিস্ফোরক তৈরির প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। লালগড় আন্দোলনের সময় এ রাজ্যের জঙ্গলমহলে মাওবাদীরা এমন বিস্ফোরক তৈরি করত।

    কিষেণজির মৃত্যুর পর লালগড় আন্দোলন স্তিমিত হয়ে যেতেই বাংলায় মাওবাদীদের অস্ত্র এবং বিস্ফোরক তৈরির কাজও বন্ধ হয়ে যায়। নতুন করে মাওবাদীরা সেই কাজ শুরু করায় চিন্তা বেড়েছে এনআইএ’র গোয়েন্দাদের। তাঁদের আশঙ্কা, আগামী দিনে বাংলায় ফের বড়সড় নাশকতার পাশাপাশি আন্দোলনের ছক তৈরি করছে মাওবাদীরা। 

    ওই গোয়েন্দা রিপোর্টে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, নদীয়া, মুর্শিদাবাদ এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার মতো কয়েকটি জেলায় মাওবাদীদের কার্যকলাপ ও সক্রিয়তা লক্ষ্য করা গিয়েছে। অতি সম্প্রতি ‘মাওবাদী নেত্রী’ জয়িতা দাসকে নদীয়া থেকে গ্রেপ্তার করে কলকাতা পুলিসের এসটিএফ। অন্যদিকে, পশ্চিমবঙ্গের ভূমিপুত্র তথা অসমের ‘মাওবাদী নেতা’ নির্মাণকেও নদীয়া থেকে গ্রেপ্তার করেছে এনআইএ। মাওবাদীদের একটি সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, উমপুন ঘূর্ণিঝড়ের পর মাওবাদীরা দক্ষিণ ২৪ পরগনার দুর্গম এলাকা সুন্দরবনে জমি তৈরির কাজে হাত দিয়েছিল। মূলত দুর্গত মানুষের মধ্যে ত্রাণ বিলিকে সামনে রেখে সেখানে যাতায়াত শুরু করে মাওবাদী নেতৃত্ব। এমনকী, সেখানে গরিব ছাত্রছাত্রীদের জন্য অবৈতনিক স্কুল চালাতে দলের ছাত্র সংগঠনের তরফে একটি দল ঘাঁটি গেড়েছিল। যদিও প্রতিকূল পরিবেশ এবং এলাকার বাসিন্দাদের কাছ থেকে তেমন সাড়া না মেলায় সেই চেষ্টা ভেস্তে গিয়েছে বলে জানা যায়। চলতি বছরের মার্চ মাসের গোড়ায় অসমে ধৃত প্রবীণ মাওবাদী নেতা কাঞ্চনদার সঙ্গে গ্রেপ্তার হন অর্জুন। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে অন্য একটি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা জানতে পারে, জঙ্গলমহল ছাড়া এ রাজ্যের নদীয়ার বার্নিয়া, বারাসতের শাসন, মুর্শিদাবাদের নওদা, দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুর এলাকায় মাওবাদীদের গোপন ডেরা রয়েছে। সেই সূত্র ধরে তদন্ত চালিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র ও বিস্ফোরক তৈরির কাজ পুনরায় শুরু হওয়ার খবর পান গোয়েন্দারা।
  • Link to this news (বর্তমান)