• পাত্রীর ইচ্ছায় পুলিস পাহারায় ঘোড়ায় চড়ে বিয়ে করতে গেলেন দলিত যুবক উচ্চবর্ণের ফতোয়া উপেক্ষা
    বর্তমান | ২৮ নভেম্বর ২০২২
  • বেরিলি: সব মেয়েরই তাঁর বিয়ে নিয়ে একটা স্বপ্ন থাকে। উত্তরপ্রদেশের গুন্নৌরের লোহাওয়াই গ্রামের ২১ বছরের রবিনার স্বপ্ন ছিল, ঘোড়ায় চড়ে বর আসবে তাঁর বাড়িতে। আর ডিজে বাজিয়ে আসবেন বরযাত্রীরা। কিন্তু পছন্দের পাত্রের সঙ্গে বিয়ে ঠিক হলেও শেষ মুহূর্তে তাঁর স্বপ্নভঙ্গ হতে বসেছিল। কারণ, পাত্র রামকিষান দলিত। আর কোনও দলিত যুবক শোভাযাত্রা করে বিয়ে করতে যাবে, তা কোনওমতেই মেনে নিতে পারেনি সমাজের উচ্চবর্ণের ‘মাতব্বর’রা। ফলে এনিয়ে তাঁরা কড়া ফতোয়া জারি করে। তাছাড়া উচ্চবর্ণের পাত্রী বিয়ে করছেন নিম্নবর্ণের পাত্রকে, সেটাও ছিল মাতব্বরদের গাত্রদাহের আরও একটি কারণ।

    ইচ্ছাপূরণ হবে না ভেবে মনখারাপ হয়ে যায় কনের। যা দেখে মোটেই ভালো লাগেনি পাত্রীর পরিবারের। সটান থানায় গিয়ে গোটা বিষয়টি জানান তাঁরা। এতেই রাতারাতি ‘ভিআইপি’ হয়ে ওঠেন রবিনার হবু বর। ঘোড়ায় চড়ে শোভাযাত্রা করে তাঁর বিয়ে করতে আসা নিয়ে যাতে কোনওরকম সমস্যা সৃষ্টি না হয়, সেজন্য নির্দেশ আসে পুলিসের উপর মহল থেকে। তারপরই রামকিষানকে ‘এসকর্ট’ করে কনের বাড়িতে নিয়ে আসেন ৪৪ জন কনস্টেবল, ১৪ জন সাব ইনসপেক্টর, একজন ইনসপেক্টর ও একজন সার্কেল ইনসপেক্টর। ২৫ নভেম্বর পুলিস পাহারায় ব্যান্ড পার্টি নিয়ে, ডিজে বাজিয়ে উল্লাস করতে করতে আসেন বরযাত্রীরাও। শুধু কনের ইচ্ছাপূরণই নয়, এই বিয়েতে ১১ হাজার টাকা ‘উপহার’ও দেওয়া হয়েছে পুলিসের তরফে। পুলিসের এই ভূমিকায় খুশি পাত্রীর পরিবার। 

    পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, পাত্রীর কাকা রাজেন্দ্র বাল্মীকি চিঠি লিখে সাম্ভালের জেলাশাসককে গোটা বিষয়টি জানিয়েছিলেন। গত ৩১ অক্টোবর লেখা ওই চিঠিতে তিনি জানান, ভাইঝির ইচ্ছে, তাঁর হবু বর ঘোড়ায় চড়ে বিয়ে করতে আসবে। কিন্তু উচ্চবর্ণের মাতব্বররা তাতে বাধা দিচ্ছে। দলিত পাত্র শোভাযাত্রা করে বিয়ে করতে যেতে পারবে না বলে ফরমান জারি করেছে তারা। এরপরই ব্যবস্থা নেয় পুলিস। পাত্রীর মা ঊর্মিলা বাল্মীকি বলেন, ‘আমার মেয়ের স্বপ্নপূরণ হয়েছে। সে খুব খুশি। এজন্য পুলিসকে ধন্যবাদ।’

     
  • Link to this news (বর্তমান)