• নেশার টাকা পেতে ১৩ ক্রেট ডিম চুরি, ধৃত ২ তাজ্জব পুলিস
    বর্তমান | ২৮ নভেম্বর ২০২২
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: গাড়ি থেকে চুরি গিয়েছে তেরো ক্রেট ডিম। এই ডিম উদ্ধার করে দিতে হবে। এই আব্দার নিয়ে হেস্টিংস থানায় এসে হাজির হন এক ব্যক্তি। তাঁর অভিযোগ শুনে আকাশ থেকে পড়েন থানার অফিসাররা। এতদিন মানিব্যাগ, মোবাইল ফোন, সোনার গয়না ইত্যাদি চুরি যাওয়ার অভিযোগ শুনতে অভ্যস্ত ছিলেন তাঁরা। তাই বলে ডিম চোর ধরতে হবে! অভিযোগকারীর কথা শুনে কার্যত হকচকিয়ে যান তাঁরা। সব ডিমের ক্রেটই তো একরকম দেখতে। আর ডিমের রকমফেরই বা তাঁরা বুঝবেন কী করে? কিন্তু কী আর করা! অভিযোগ যখন এসেছে, তখন তদন্ত তো করতেই হবে। শেষমেশ ডিম উদ্ধার অভিযানে নেমে সন্দেহের বশে দু’জনকে পাকড়াও করে নিয়ে আসেন পুলিসকর্মীরা। জেরা করতেই জানা যায়, নেশার টাকা জোগাড় করতেই ডিম চুরি করেছে তারা। আর তা কম দামে বেচে দিয়েছে বাজারে। এরপর তাদের গ্রেপ্তার করে হেস্টিংস থানার পুলিস। ধৃতদের নাম রাজবীর ভট্টাচার্য ও ইন্দ্রপ্রসাদ ভুঁইঞা।

    পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, হেস্টিংস থানা এলাকায় শনিবার গভীর রাতে ডিম বোঝাই একটি গাড়ি দাঁড়িয়েছিল। চালক বসেছিলেন তাঁর আসনেই। সেই সময় সেখানে ঘুরঘুর করছিল দুই যুবক। তারা চোখের নিমেষে ওই গাড়ি থেকে ডিমের ১৩টি ক্রেট নামিয়ে চম্পট দেয়। গাড়ির চালক বিষয়টি দেখার পর গাড়ি থেকে নেমে ধাওয়া করলেও ধরতে পারেননি তাদের। এরপরই তিনি সোজা থানায় গিয়ে অভিযোগ জানান। তদন্তে নেমে পুলিস সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে ওই দুই যুবককে চিহ্নিত করে। জানা যায়, তারা হেস্টিংস এলাকারই বাসিন্দা। নেশাগ্রস্ত এই দু’জন চুরি করে বেড়ায়। কেউ কম দামে ডিম বিক্রি করে গিয়েছে কি না, তা জানতে রাতেই স্থানীয় বাজারে গিয়ে খোঁজ নেন অফিসাররা। জানা যায়, দুই যুবক এসে কয়েক ক্রেট ডিম বিক্রি করে গিয়েছে। সোর্স লাগিয়ে পুলিস জানতে পারে, অভিযুক্তরা এলাকাতেই রয়েছে। এরপর রবিবার সকালে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এই ডিমগুলি তারা কোথায় বিক্রি করেছে, সেই তথ্য পুলিসকে জানিয়েছে ধৃতরা। 

    ধৃতদের জেরা করে জানা যায়, ডিমের গাড়ি তারা টার্গেট করত। এরজন্য বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়াত। চালক বা অন্য সওয়ারির অন্যমনস্কতার সুযোগ নিয়ে ডিম চুরি করত তারা। ওই ডিম বাজারে বিক্রি করতে পারলে মিলবে নগদ টাকা। আর চুরি করা ডিমের ক্রেট অন্য ক্রেটের সঙ্গে মিশে গেলে কেউ ধরতেই পারবে না। অভিযোগ, ডিম চুরির পর তারা তা বিভিন্ন বাজারে কম দামে বিক্রি করত। ওই টাকা দিয়ে কিনত নেশার সামগ্রী। অভিযুক্তদের দাবি, নেশার টাকা জোগাড় করতেই ডিম চুরির পথে নেমেছে তারা।
  • Link to this news (বর্তমান)