• Covid 19 Vaccine : নেওয়ার আগ্রহ নেই, করোনার টিকা শেষ হচ্ছে জানুয়ারিতেই
    এই সময় | ২৮ নভেম্বর ২০২২
  • অনির্বাণ ঘোষ

    বাংলার ভাঁড়ারে তলানিতে করোনার টিকা। ফুরোচ্ছে ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে। তার পর আর বিনামূ্ল্যে মিলবে না কোভিড ভ্যাকসিন। স্বাস্থ্যকর্তারা জানাচ্ছেন, টিকাও যেমন বাড়ন্ত, তেমনই টিকা নেওয়ার লোকও একপ্রকার অমিল। একটা সময় ছিল, যখন করোনার টিকা নেবেন বলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকত লোকে। রাজ্যের ১০০০-১২০০ টিকাকেন্দ্রের প্রতিটি থেকেই গড়ে ৩-৪ হাজার ডোজ় করে টিকা খরচ হতো রোজ। এমনও দিন গিয়েছে যখন একদিনেই সর্বোচ্চ ১৪ লক্ষ মানুষও টিকা নিয়েছে। কিন্তু এখন পরিস্থিতি বদলেছে। কোভিডকে আর ডরাচ্ছে না কেউ। ফলে টিকা নেওয়ার লাইনেও চরম ভাটা। রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের তথ্য বলছে, গড়ে সারা রাজ্যের মাত্র ৫৪টি টিকাকেন্দ্র থেকে এখন কোভিডের প্রতিষেধক দেওয়া হচ্ছে। দৈনিক প্রাপকের সংখ্যাও গড়ে হাজার দুয়েক। এবং রাজ্যের ভাঁড়ারে আর মাত্র আড়াই লক্ষ ডোজ় টিকা পড়ে রয়েছে। বন্ধ হয়ে গিয়েছে কেন্দ্রের টিকা পাঠানোও। বাংলায় টিকাকরণের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত স্বাস্থ্য অধিকর্তা (পরিবার কল্যাণ) অসীম দাস মালাকার বলেন, 'কোভিড ভ্যাকসিন প্রায় শেষ। কোভিশিল্ড-কোভ্যাক্সিন মিলিয়ে বড়জোর আর আড়াই লক্ষ ডোজ় মতো পড়ে রয়েছে। অন্য কোনও ব্র্যান্ড আর নেই। কেন্দ্রও পুজোর আগে শেষ বার টিকা পাঠিয়েছে। আর পাঠাবে না।'

    বিশেষজ্ঞদের একাংশ যদিও প্রশ্ন তুলছে, এত তাড়াতাড়ি টিকা বন্ধ করে দেওয়া কি আদৌ বিচক্ষণতা? কেননা, কোভিডের বিদায়লগ্ন আসন্ন হলেও অতিমারী বিদায় নিয়েছে, এমন ঘোষণা এখনও করেনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। চিন-সহ বিশ্বের কয়েকটি দেশে ফের করোনা মাথাচাড়া দিচ্ছে নতুন করে। চিনের একাধিক প্রদেশে জলঘোলা চলছে লকডাউন নিয়েও। এমন সন্ধিক্ষণে টিকা বন্ধ হয়ে যাওয়া উচিত নয়। যদিও স্বাস্থ্যভবনের কর্তারা জানাচ্ছেন, বাড়লেও এ দেশে বা রাজ্যে করোনা একবারেই তলানিতে। বাংলায় দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ইদানিং ১০-ও টপকাচ্ছে না। এবং সবচেয়ে বড় কথা, মানুষও টিকা নিতে আর আগ্রহী নয়।

    যদিও অসীম জানাচ্ছেন, কেন্দ্র নতুন করে টিকা কেনা বন্ধ করে দিয়েছে ঠিকই। কিন্তু তেমন পরিস্থিতি হলে, কেন্দ্রের থেকে চাইলে অন্য রাজ্যের স্টক থেকে এ রাজ্যে টিকা পাঠিয়েও দেবে বলা হয়েছে। এখন রাজ্যের ভাঁড়ারে কোভ্যাক্সিন রয়েছে ২.২ লক্ষ ডোজ় যার মেয়াদ ফুরোচ্ছে ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে। আর রয়েছে মাত্র ২০ হাজার ডোজ় যার মেয়ার ফুরোচ্ছে ডিসেম্বেরই।

    টিকা নেওয়ার ব্যাপারে এই অনীহা কেবলমাত্র বাংলাতেই নয়, দেখা যাচ্ছে গোটা দেশেই। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যকর্তারা জানাচ্ছেন, একটা সময় ছিল যখন এক-একদিনে গোটা দেশে এক কোটিরও বেশি মানুষ একদিনে টিকা নিয়েছেন। কিন্তু এখন গড়ে সেই সংখ্যাটা নেমে এসে এক লক্ষেরও কম হয়ে গিয়েছে। সারা দেশেও করোনা এখন তলানিতে। এবং গোটা দেশেই দেখা যাচ্ছে, নিতে একেবারেই আগ্রহ নেই মানুষের। তাই নতুন করে আর কেন্দ্রীয় ভাবে টিকা সরবরাহ করা হচ্ছে না
  • Link to this news (এই সময়)