• জুয়া খেলবে স্বামী! বাপের বাড়ি থেকে টাকা না আনায় বধূকে নির্মম অত্যাচারের অভিযোগ
    এই সময় | ২৮ নভেম্বর ২০২২
  • Jaipaiguri News জুয়ার নেশায় মত্ত স্বামী। বাপের বাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য স্ত্রীকে চাপ দেওয়ার অভিযোগ। রাজি না হওয়ায় 'উচিত শিক্ষা' দিতে স্ত্রীকে ঘরের মধ্যে দড়ি দিয়ে বেঁধে নির্মম অত্যাচারের অভিযোগ স্বামীর বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) ধূপগুড়ি ব্লকের গাড়িয়ালটারি গ্রামে।

    অভিযোগ, জুয়া খেলার জন্য নিত্য টাকা যোগাতে স্ত্রীকে চাপ দিতেন গাড়িয়ালটারির (West Bengal News) বাসিন্দা শ্যামল রায়। স্ত্রী চন্দনা রায় রাজি না হওয়ায় তার চলত নিত্য অত্যাচার। এদিন চরমে ওঠে অত্যাচার বলে অভিযোগ। টাকা আনতে না পারায় গামছা দিয়ে হাত বেঁধে, ঘরে আটকে স্ত্রীকে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। শুধু স্বামীই নয়, অত্যাচারের অভিযোগ শ্বশুর, শাশুড়ি ও ননদের বিরুদ্ধেও। এতটাই নির্মমভাবে অত্যাচার করা হয়েছে যে নিগৃহীত মহিলা নিজের পায়ে দাঁড়াতেও পারছেন না। চলাফেরার জন্য প্রয়োজন হচ্ছে অন্যের সাহায্যে। সারা শরীর জুড়ে মারের আঘাতে পড়ে গিয়েছে কালশিটে, চাকা চাকা দাগ। ঘটনায় স্বামী সহ শ্বশুর, শাশুড়ি ও ননদের বিরুদ্ধে থানায় (Domestic Violence) অভিযোগ দায়ের করেন গুরুতর আহত স্ত্রী চন্দনা।

    ছয় বছর আগে ধূপগুড়ি ব্লকের গাড়িয়ালটারির বাসিন্দা শ্যামল রায়ের সাথে চামটিমুখির বাসিন্দা চন্দনা রায়ের বিয়ে হয় । তাদের একটি পুত্র সন্তানও রয়েছে। নিজের জমিতে কৃষিকাজ করেন শ্যামল। বিয়ের পর চন্দনা জানতে জানতে পারেন যে, জুয়ায় নেশায় আসক্ত তাঁর স্বামী শ্যামল। তিনি ভেবেছিলেন, হয়তো বিয়ের পর সংসারে মন হলে জুয়া খেলা ছেড়ে দেবে স্বামী । কিন্তু চন্দনার সমস্ত ধারণা ভুল প্রমাণ করে বিয়ের কিছুদিন যেতেই বাপের বাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য চাপ দিতে শুরু করে শ্যামল বলে অভিযোগ। এমনকি টাকা আনতে না পারলে মাঝেমধ্যেই গালিগালাজ ও চলত মারধর। তবে ছেলের মুখ চেয়ে সবকিছুই সহ্য করত চন্দনা।

    তবে চন্দনা জানিয়েছেন, এর আগে অত্যাচারের মাত্রা বাড়তে গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যকে বিষয়টি বলেছিলেন। তবে পঞ্চায়েত সদস্যকে লজ্জার কারণে সারা শরীরে যে মারের দাগ ছিল তা দেখাতে পারেননি। পরে পঞ্চায়েত সদস্যর স্ত্রীকে দেখিয়েছিলেন কিভাবে মারা হয়েছে। এই নিয়ে সালিশি সভাও হয়েছিল। যদিও শ্বশুরবাড়িতে অত্যাচারিত হলেও চন্দনা বিষয়টি সে তার বাবা মাকে সেভাবে জানায়নি।

    চন্দনা রায়ের অভিযোগ সম্প্রতি পাড়ায় একটি অনুষ্ঠান উপলক্ষে জুয়ার আসর বসে। আর সেখানে জুয়া খেলবে বলেই শ্যামল তার স্ত্রীকে শ্বশুড়বাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য চাপ দিতে থাকে। এদিকে চন্দনার বাড়ির আর্থিক অবস্থাও ভালো নয় তাছাড়া সামনেই তাঁর বোনের বিয়ে । তাই তার বাবার বাড়ি থেকে টাকা আনতে পারেননি চন্দনা। আর স্ত্রী টাকা না আনায় জুয়া খেলার টাকা হাতে না পেয়ে মারমুখী হয়ে ওঠে শ্যামল।

    অভিযোগ, টাকা না পেয়েই স্ত্রীয়ের হাত গামছা দিয়ে পিছমোড়া করে বেঁধে ঘরের মধ্যে আটকে চলে বেধড়ক মারধর । চন্দনার শ্বশুর, শাশুড়ি ও ননদের বিরুদ্ধে শ্যামলকে আটকানো তো দূরস্থান আরও মারধর করতে উৎসাহিত করার অভিযোগ উঠেছে। হাতে, পায়ে, পেটে, পিঠে, উরুতে চলে লাগাতার লাথি, বেধড়ক মারধর । এমনকি উরুতে শ্যামল কামড় দেয় বলেও দাবি চন্দনার। স্বামীর মার থেকে বাঁচতে শ্বশুরমশাইয়ের পায়ে ধরেছিল চন্দনা। সাহায্য করার বদলে তিনি তাঁকে পা দিয়ে লাথি মারেন বলে অভিযোগ। অন্যদিকে, শাশুড়ি চুলের মুঠি ধরে মারে এবং একমাত্র ননদকে জানালে সেও উলটে মারধর করে। এর আগেও তাঁকে একবার ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন স্বামী বলে অভিযোগ চন্দনার। এদিকে অভিযোগ পাওয়ার পর ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্তে নেমেছে ।
  • Link to this news (এই সময়)