• শিলিগুড়ি হাসপাতালে সদ্যোজাতের মৃত্যু
    বর্তমান | ২৯ নভেম্বর ২০২২
  • সংবাদদাতা, শিলিগুড়ি: চিকিৎসকের গাফিলতিতে সদ্যোজাতের মৃত্যুর অভিযোগে বিতর্কে জড়াল শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতাল। কায়াকল্প রাজ্যের সেরা স্বীকৃতি পাওয়া হাসপাতালে এমন ঘটনায় সোমবার শিলিগুড়ি শহরে চাঞ্চল্য ছড়ায়। হাসপাতালের পক্ষ থেকে বিষয়টি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের নজরে আনা হয়। জেলা হাসপাতালের সুপার ডাঃ চন্দন ঘোষ জানিয়েছেন, মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। 

    সমরনগরের বাসিন্দা ঝন্টু মণ্ডল, তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী কল্পনা মণ্ডলকে গত বৃহস্পতিবার জেলা হাসপাতালে ভর্তি করান। ঝন্টুবাবুর অভিযোগ, ভর্তির পরের দিন স্ত্রীর প্রসবযন্ত্রণা উঠলেও  দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক একবারও স্ত্রীকে দেখতে আসেননি। নার্সদের একাধিকবার বলার পরও স্ত্রীকে সিজার করা হয়নি। হাসপাতাল থেকে বারবার ওই চিকিৎসককে ফোন করা হয়। দীর্ঘক্ষণ চেষ্টার পরও চিকিৎসক ফোন না তোলায় পরিস্থিতি জটিল বুঝে তড়িঘড়ি স্বাভাবিক প্রসব করানোর চেষ্টা করেন নার্সরা। তাতে শিশুটির মাথা আটকে যায়। ওভাবে কিছুক্ষণ থাকার পর হাসপাতালের অন্য এক চিকিৎসক এসে সিজার করে শিশুটিতে ভূমিষ্ট করান। সফল অস্ত্রোপচারে পুত্রসন্তানের জন্ম হলেও শিশুটি সঙ্কটজনক ছিল। 

    সোমবার ঝন্টু মণ্ডল বলেন, যে চিকিৎসক স্ত্রীর সিজার করেন, তিনি জানান সময়মতো সিজার করা হলে এই জটিলতা এড়ানো যেত। শিশুটিও সুস্থ থাকত। এ কথা জানার পর আমি হাসপাতাল সুপারের কাছে ওই ডাক্তারের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় গাফিতির অভিযোগ জানিয়েছিলাম। 

    এদিকে, জন্মের সঙ্গে সঙ্গে শিশুটিকে  সিক নিওনেটাল কেয়ার ইউনিটে ভর্তি করে চিকিৎসা শুরু করা হয়। কিন্তু, সোমবার ভোররাতে শিশুটি মারা যায়। ঝন্টু মণ্ডলকে হাসপাতাল থেকে এ খবর দিয়ে তার মৃত শিশুকে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলা হয়। কিন্তু, তিনি  সদ্যোজাতের মৃত্যুর জন্য অভিযুক্ত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে শাস্তির দাবিতে হাসপাতালেই দীর্ঘক্ষণ বসে থাকেন। পরে  হাসপাতাল সুপার ডাঃ চন্দন ঘোষের সঙ্গে দেখা করে লিখিত অভিযোগ জানান। শিলিগুড়ি থানাতেও ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের সুপার ডাঃ চন্দন ঘোষ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, ঝন্টু মণ্ডলের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়েছি। আমাদের হাসপাতালে নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে, এটা দুঃখজনক ঘটনা। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। তদন্তে দোষ প্রমাণিত হলে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। 

    হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ রয়েছে। বিভিন্ন সময়ে তিনি হাসপাতালে আসছেন, মর্জিমতো রোগী দেখছেন।  কখনও কখনও রোগী না দেখেই হাসপাতাল থেকে উধাও হয়ে যাচ্ছেন। যদিও এ ব্যাপারে সুপার কিছু বলতে চাননি। তিনি বলেন, ওই চিকিৎসকের ব্যাপারে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে সবটাই জানানো হয়েছে। তিনি বিষয়টি দেখছেন। 
  • Link to this news (বর্তমান)