• শ্রদ্ধার সোনার আংটি ডাক্তার বান্ধবীকে উপহার আফতাবের পুলিস ভ্যানে হামলা, দেহ টুকরো করতে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার
    বর্তমান | ২৯ নভেম্বর ২০২২
  • নয়াদিল্লি: দিল্লিতে শ্রদ্ধা ওয়াকারকে খুনের মামলায় নতুন মোড়। খুনের পর তাঁর দেহ টুকরো করার কাজে ব্যবহৃত অস্ত্র অবশেষে উদ্ধার হয়েছে। দিল্লি পুলিস জানিয়েছে, লিভ-ইন পার্টনার শ্রদ্ধাকে খুনের পর তাঁর দেহ টুকরো করার কাজে এই অস্ত্রটিই ব্যবহার করেছিল অভিযুক্ত আফতাব পুনাওয়ালা। গত সপ্তাহেই আফতাবেরফ্ল্যাট থেকে পাঁচ থেকে ছ’ইঞ্চি লম্বা পাঁচটি ছুরি উদ্ধার হয়েছিল। ইতিমধ্যেই সেগুলি ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। এদিকে, এদিন ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরি থেকে আফতাবকে নিয়ে ফেরার পথে পুলিস ভ্যান আক্রান্ত হয়। তরবারি নিয়ে ভ্যানের উপর চড়াও হয় অনেকে। যদিও পুলিস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। আফতাব নিরাপদ রয়েছে।  

    শুধু তাই নয়, আফতাবকে জেরা করে আরও এক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে। জানা দিয়েছে, শ্রদ্ধাকে খুনের পর তাঁর হাতের সোনার আংটি খুলে সে এক ডাক্তার বান্ধবীকে উপহার দিয়েছিল।যত দিন যাচ্ছে, আফতাবের কাছ থেকে ততই নিত্যনতুন তথ্য জানতে পারছেন তদন্তকারী অফিসাররা। আর ততই যেন অবাক হওয়ার পালা। দিল্লি পুলিস সূত্রে খবর, মোবাইল ডেটিং অ্যাপ ‘বাম্বল’-এর মাধ্যমে তাদের আলাপ হয়েছিল। ওই ডাক্তার বান্ধবীকে জেরা করে জানা গিয়েছে, আফতাবের সঙ্গে দেখা করতে ওই ফ্ল্যাটেই গিয়েছিলেন তিনি। আর তখনই আফতাব ওই সোনার আংটিটি তাঁকে উপহার দেন। শ্রদ্ধাকে খুনের পর আংটিটি সে নিজের কাছেই রেখে দিয়েছিল। শ্রদ্ধার বাবা পুলিসকে জানিয়েছেন, জন্মদিনে এই আংটিই তিনি মেয়েকে উপহার দিয়েছিলেন। প্রসঙ্গত,মাস ছ’য়েক আগে ১৮ মে দিল্লির মেহরৌলির ফ্ল্যাটে আফতাবলিভ-ইন পার্টনার শ্রদ্ধাকে খুন করে বলে অভিযোগ। খুনের পর সে শ্রদ্ধার দেহ ৩৫ টুকরো করে ৩০০ লিটার ফ্রিজে লুকিয়ে রাখে। তারপর সময় সুযোগ মত তা ফেলে আসে ছতরপুর ছিটমহলের জঙ্গলে। শ্রদ্ধার বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে ১২ নভেম্বর আফতাবকে গ্রেপ্তারকরা হয়। এরপরই হাড়হিম করা একাধিক তথ্য জানা যায়। 

    সোমবার সকালে পলিগ্রাফ টেস্টের জন্য তিহার জেল থেকে রোহিনীর ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরি (এফএসএল)-তে আনা হয় আফতাবকে। সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে তাকে আনা হয়। পলিগ্রাফ টেস্ট শুরু হয় সকাল ১১টায়। এর আগে তিনবার আফতাবের পলিগ্রাফ টেস্ট করা হয়েছে। এফএসএল-এর ক্রাইম সিন ম্যানেজমেন্টের প্রধান সঞ্জীব গুপ্ত জানিয়েছেন, ‘শেষবার পলিগ্রাফ টেস্টের সময় আফতাবের শারীরিক সমস্যা হয়েছিল। তাই, পরীক্ষার ফল সন্তোষজনক ছিল না। এবার প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।’ 

    এদিকে, তিহার জেলে আফতাবের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। তাকে আলাদা কুঠুরিতে রাখা হয়েছে। সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে চলছে ২৪ঘণ্টা নজরদারি। জেলের জনসংযোগ অফিসার ধীরাজ মাথুর জানিয়েছেন, জেলে আসার পরই আফতাবের স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়েছে। কোনও অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করা যায়নি। কিন্তু, নিয়মিত পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। আফতাব কি তদন্তে সাহায্য করছে? তদন্তকারী অফিসাররা এই বিষয়ে মুখ খুলতে চাননি। 
  • Link to this news (বর্তমান)