• FIFA World Cup 2022, POR vs URU: জোড়া গোলে উরুগুয়কে হারিয়ে চার বছর আগের বদলা নিলেন ব্রুনো, নক আউটে রোনাল্ডোর পর্তুগাল
    ২৪ ঘন্টা | ২৯ নভেম্বর ২০২২
  • সব্যসাচী বাগচী 

    পর্তুগাল : ২  ('৫৪, '৯৩ ব্রুনো ফার্নান্দেজ)

    উরুগুয়ে:  ০ 

    চার বছর আগের ক্ষত বুকে নিয়ে উরুগুয়ের (Uruguay) বিরুদ্ধে নেমেছিল পর্তুগাল (Portugal)। কোপা আমেরিকার দলের বিরুদ্ধে বদলার ম্যাচে জিততে পারলেই চলতি বিশ্বকাপে (FIFA World Cup 2022) শেষ ১৬-তে চলে যাওয়ার সুযোগ ছিল। প্রথমার্ধে একাধিক গোলের সুযোগ নষ্ট করেছিল পর্তুগাল। ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো ( (Cristiano Ronaldo) নিজেও ফ্রি-কিক কাজে লাগাতে পারেননি। তবে 'সি আর সেভেন'-এর (CR 7) প্রধান হাতিয়ার ব্রুনো ফার্নান্দেজই (Bruno Fernandes) তাঁর দলের ও পর্তুগীজদের ত্রাতা হয়ে উঠলেন। ব্রুনোর জোড়া গোলেই চার বছর আগে উরুগুয়ের কাছে হারের জ্বালা মিটিয়ে নিল পর্তুগাল। গত ম্যাচে ঘানাকে ২-৩ ব্যবধানে হারানোর পর এবার উরুগুয়ের বিরুদ্ধে ০-২ গোলে জয়। ফলে দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে নামার আগেই নক আউটে কোয়ালিফাই করে গেল ফার্নান্দো স্যান্টোসের (Fernando Santos) দল।  

    রোনাল্ডো বনাম লুইস সুয়ারেজের (Luis Suarez) ডুয়েল দেখার জন্য লুসেল স্টেডিয়ামের গ্যালারি ভরে গিয়েছিল। তবে সবাইকে চমকে দিয়ে উরুগুয়ের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ফুটবলার সুয়ারেজকে রিজার্ভে রেখে দেন কোচ দিয়েগো আলান্সো (Diego Alonso)। ফলে ব্রুনো ফার্নান্দেজ (Bruno Fernandes) বনাম এডিনসন কাভানির (Edinson Cavani) লড়াই দেখাই ছিল ভরসা। মনে হচ্ছিল ম্যাচ এত ম্যাড়ম্যাড়ে ভাবে শেষ হবে। তবে লুসেল স্টেডিয়ামের গ্যালারি ভরিয়ে তোলা অগণিত পর্তুগীজ সমর্থকদের মুখে হাসি ফুটল। ৫৪ মিনিটে বিপক্ষের জালে বল জড়াতেই গোটা দুনিয়ায় ছড়িয়ে থাকা রোনাল্ডোপ্রেমীরা সেলিব্রেট করতে শুরু করে দিলেন। এরপর ম্যাচের একেবারে শেষ দিকে পেনাল্টি পেল পর্তুগাল। সেই সুযোগ হারাননি ব্রুনো। ফলে ৯৩ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করে দলকে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে দেওয়ার সঙ্গে, উরুগুয়ের কফিনে শেষ পেরেক পুঁতে দেন তিনি। 

    ২০১৮ বিশ্বকাপে শেষ ১৬-র লড়াইয়ে উরুগুয়ের কাছে হেরে বিদায় নিয়েছিল রোনাল্ডো বাহিনী। উরুগুয়ের পক্ষে স্কোর লাইন ছিল ২-১।‌ জোড়া গোল করেছিলেন কাভানি। চোখের জলে বিদায় নিতে হয়েছিল পর্তুগালকে। চার বছর সেই যন্ত্রণা চেপে রেখে ৯০ মিনিটের যুদ্ধে নেমেছিল পর্তুগাল। রাশিয়া বিশ্বকাপের স্বপ্নভঙ্গের বদলা নিতে মাঠে নামতে তৈরি ফার্নান্দো স্যান্টোসের দল। ২-০ ব্যবধানে জিতে সেই বদলা নেওয়া হল। এবং এক ম্যাচ বাকি থাকতেই নক আউটের টিকিট কনফার্ম করে নিল পর্তুগাল। 

    কিন্তু প্রথমার্ধে গোল এল কোথায়! দুটি দল রক্ষণ জমাট বেধে নামার জন্য কেউই গোলের মুখ খুলতে পারেনি। আক্রমণ, প্রতি আক্রমণের খেলা চলেছে। দু’দলই গোল করার মরিয়া চেষ্টা করেছে। উরুগুয়ে দুই প্রান্ত ধরে আক্রমণ করার চেষ্টা করলেও, বল পজেশন বেশি রাখা পর্তুগালের হয়ে আক্রমণের ক্ষেত্রে ভূমিকা নিচ্ছিলেন ব্রুনো এবং বের্নার্দো। ১৮ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে ফ্রি-কিক পেয়েছিলেন পর্তুগীজ অধিনায়ক। কিন্তু ওয়ালে লেগে তাঁর শট কর্নার হয়ে যায়। 

    আরও পড়ুন: 

    আরও পড়ুন: 

    এরমধ্যে ৩২ মিনিটে অল্পের জন্য গোল খাওয়া থেকে বেঁচে যায় পর্তুগাল। বল নিয়ে একাই এগিয়ে গিয়েছিলেন রদ্রিগো বেন্তাঙ্কুর। তাঁকে পর্তুগালের ডিফেন্ডাররা আটকাতে পারেননি। তবে গোলকিপার দিয়োগো কোস্তার হাতে আটকে গেলেন তিনি। এরপর গোলের জন্য এগিয়ে গেলেও বিপক্ষের রক্ষণ ভাঙতে পারেনি 'সি আর সেভেন'-এর দল। ফাইনাল থার্ডে গিয়ে আটকে গিয়েছে তাঁর দল। ফলে প্রথমার্ধ গোলশূন্যভাবে শেষ হয়। 

    তবে ফের খেলা শুরু হতেই ৫৪ মিনিটে এগিয়ে যায় পর্তুগাল। বাঁ দিক থেকে ক্রস তুলেছিলেন ব্রুনো। হেড করলেন রোনাল্ডো। বল জড়িয়ে যায় জালে। তবে বল রোনাল্ডোর মাথায় লেগেছে কিনা সেটা নিয়ে সন্দেহ ছিল। কারণ বল রোনাল্ডোর মাথা স্পর্শ করেনি। সেক্ষেত্রে ফিফা-র নিয়ম অনুসারে গোলদাতা হিসেবে ব্রুনোর নামই লেখা হল। 

    সমতা ফেরানোর লক্ষ্য নিয়ে কাভানির জায়গায় সুয়ারেজকে নামিয়ে দেওয়া হল। এরপর একের পর এক আক্রমণ তুলতে থাকে দিয়েগো আলান্সোর ছেলেরা। তবে প্রতিবারই জোড়া গ্লাভস নিয়ে রুখে দাঁড়ান পর্তুগীজ গোলকিপার দিয়োগো কোস্তা। তবে এখানেই ম্যাচ শেষ হয়ে যায়নি। রোমাঞ্চের আরও বাকি ছিল। বক্সে ট্যাকল করতে গিয়ে হাতে বল লাগল জিমেনেজের। পেনাল্টি থেকে গোল করলেন ব্রুনো। এরপর আর উরুগুয়ে ঘুড়ে দাঁড়াতে পারেনি। ফলে চার বছর আগের বদলা নিয়ে তিন পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়ল রোনাল্ডোর দল। 
  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)