আসানসোলের ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের রহমানিয়া স্কুল লাগোয়া এলাকায় জল সঙ্কটের অভিযোগ রয়েছে। ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের ঘুষিক গ্রামের বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, এলাকায় পুরসভার জলের পাইপলাইন আছে। কিন্তু জল পড়ে না। গত ২৫ এপ্রিল তাঁরা পুরসভায় বিক্ষোভও দেখান। ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাখোয়া গ্রামেও তীব্র জলসঙ্কট রয়েছে। ৭৫ নম্বরের ওয়ার্ডে বার্নপুরের সাতা গ্রামের বাসিন্দারাও বিক্ষোভ-অবরোধ করেছেন। ১০৩ নম্বর ওয়ার্ডে যশাইডি, বরাকর বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া এলাকাতেও ক্ষোভ-বিক্ষোভ হয়েছে।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত ১০৬টি ওয়ার্ডে পর্যাপ্ত পানীয় জল সরবরাহের জন্য ন’টি জল প্রকল্প রয়েছে। আসানসোলে তিনটি, কুলটিতে চারটি এবং রানিগঞ্জ ও জামুড়িয়ায় একটি করে প্রকল্প আছে। সর্বশেষ কুলটিতে ২০১৮ সালে তৈরি করা হয়েছে প্রায় ২২৯ কোটি টাকার প্রকল্প। এই প্রকল্পটি সময়ে কাজ শুরু না হওয়ার কারণে একাধিক বার টাকা ফিরে গিয়েছে। শেষে পুর কর্তৃপক্ষের চেষ্টায় ২০১৮ সালে প্রকল্প ফিরিয়ে এনে রূপায়ণ করা হয়। পুর কর্তৃপক্ষ জানান, অমরুত প্রকল্পে দ্বিতীয় জলপ্রকল্পটি আসানসোলে শুরু করার জন্য বিশদ রিপোর্ট তৈরি হয়ে গিয়েছে। মেয়র বিধান উপাধ্যায়ের আশ্বাস, ‘‘দ্বিতীয় প্রকল্প শেষ হওয়ার পরে জলের আর কোনও সমস্যা থাকবে না।’’
কিন্তু ন’টি প্রকল্প থাকা সত্ত্বেও শহরাঞ্চলে এত জলের সঙ্কট কেন? পুর কর্তৃপক্ষের ব্যাখ্যা, প্রথমত, গরমে প্রায় আড়াই মাস দামোদর নদে জলের স্তর অস্বাভাবিক ভাবে নেমে যায়। সাবমার্সিবলে পর্যাপ্ত জল ওঠে না। জলাধার পূর্ণ হয় না। এলাকায় জল সরবরাহ কমে যায়। দ্বিতীয়ত, গরমে বিদ্যুৎ সরবরাহে ঘাটতি দেখা দেয়। পাম্প হাউসগুলিতেও বিদ্যুৎ থাকে না। ফলে, সরবরাহে বিঘ্ন ঘটে। তৃতীয়ত, কিছু এলাকায় জলের অপচয় হয়। বাসিন্দাদের একাংশ পাইপ ফাটিয়ে জল নেন। সেই জল বাগান পরিচর্যা, গাড়ি সাফ করার মতো কাজে লাগাতে দেখা গিয়েছে। এ সব বন্ধ করা হলে সঙ্কট কিছুটা মিটবে বলে পুর কর্তাদের-দাবি।
মেয়র জানান, লোকসভা ভোটের মুখে, ৮ মে ৭৪ নম্বর ওয়ার্ডের মিঠানি লাগোয়া রানিসায়ের মোড়ে ইস্কো বাইপাস রোডের ধারে পুরসভার চালু জলের পাইপলাইন ফাটিয়ে অবৈধ সংযোগ নেওয়ার চেষ্টা হচ্ছিল। পুর আধিকারিকেরা গিয়ে তা বন্ধ করেন। বিধান বলেন, ‘‘জলের অপচয় রুখতে পুরসভার তরফে বিশেষ দল গঠন করা হয়েছে। দলটি বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে জলের অপচয় রোখার চেষ্টা করছে। পুর প্রতিনিধিদেরও নজর দিতে বলা হয়েছে।’’ →→ (চলবে)