• বাঁকুড়া জলে ভাল: মুখ্যমন্ত্রী
    আনন্দবাজার | ২৫ জুন ২০২৪
  • জল নিয়ে ভাল করেছে বাঁকুড়া পুরসভা। সোমবার নবান্নে রাজ্যের তৃণমূল পরিচালিত পুরসভাগুলির কাজের পর্যালোচনা বৈঠকে বাঁকুড়া পুরসভার সুনাম শোনা গেল রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে। যা নিয়ে বিরোধীরা প্রশ্ন তুলতে ছাড়ছে না। তবে মুখ্যমন্ত্রীর মুখে কাজের সুনাম শুনে পুরকর্তারা অনেকটাই স্বস্তিতে।

    এ বারের লোকসভা নির্বাচনে বাঁকুড়া কেন্দ্রে তৃণমূল জিতলেও মুখ ফিরিয়েছে বাঁকুড়া শহর। পুরসভার ২৪টি ওয়ার্ডে সামগ্রিক ভাবে প্রায় ১৪ হাজার ভোটে বিজেপি ‘লিড’ পেয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকে তাই পুরকর্তৃপক্ষকে কড়া বার্তা দেওয়া হতে পারে বলে আঁচ করেছিল রাজনৈতিক মহল। তবে বাস্তবে হয়েছে উল্টো। রাজ্যে জল নিয়ে যে পুরসভাগুলি ভাল কাজ করেছে তার মধ্যে বাঁকুড়া অন্যতম বলে মুখ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেছেন। তাতেই স্বস্তিতে পুরকর্তারা।

    ওই বৈঠকে যোগ দেওয়া বাঁকুড়ার পুরপ্রধান অলকা সেন মজুমদার বলেন, “আমি যে কত খুশি তা ভাষায় বোঝাতে পারব না। দিদি বরাবরই বাঁকুড়া শহরের জলকষ্ট নিয়ে ওয়াকিবহাল। আমাদের নতুন বোর্ড দায়িত্ব নেওয়ার পর শহরের প্রতিটি ওয়ার্ডে জলসংযোগ দেওয়ার কাজ আরও দ্রুততার সাথে করেছি। এখন আর জলের সমস্যা নেই। আরও ভাল করে কাজ করতে চাই। বাঁকুড়া শহরবাসীর কাছেও সাহায্য চাই তার জন্য।”

    বিরোধীরা অবশ্য এনিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুনীলরুদ্র মণ্ডল বলেন, “বাঁকুড়া শহরের মানুষ জলকষ্টে প্রায়ই জেরবার হন। তারপরেও মুখ্যমন্ত্রীর এই প্রশংসা শুনে অবাক হচ্ছি। হতে পারে, বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল জিতেছে বলে পুরসভার তারিফ করেছেন। না হলে হয়ত প্রকৃত সত্য তুলে ধরতেন।”

    ফি বছর গ্রীষ্মের মুখে বাঁকুড়া শহরে জলকষ্ট দেখা যেত। এর মূল কারণ ছিল শহর ছুঁয়ে বয়ে চলা দ্বারকেশ্বর ও গন্ধেশ্বরী নদীর জলস্তর কমে যাওয়া। শহরে জলের জন্য এই দু’টি নদ-নদীই ছিল মূল ভরসা। তবে এখন দুর্গাপুর ব্যারাজের নলবাহিত পরিশ্রুত পানীয় জল সরবরাহ প্রকল্পের আওতায় এসেছে বাঁকুড়া শহরের ২৪টি ওয়ার্ডই। এতে দ্বারকেশ্বর-গন্ধেশ্বরীর জলস্তর কমে গেলেও সমস্যা তেমন হচ্ছে না। বাঁকুড়ার উপপুরপ্রধান হিরণ চট্টরাজ বলেন, “শহরের প্রতিটি ওয়ার্ডেই দুর্গাপুরের জল যাচ্ছে। ৯০ শতাংশের বেশি এলাকায় পাইপলাইন বসানো হয়েছে। ঘরে ঘরে পানীয় জলের কল বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। তাই জলকষ্ট আর শহরে নেই।”

    শহরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বধূ ভারতী চট্টোপাধ্যায় বলেন, “জল পর্যাপ্ত পাচ্ছি। তবে জলের গতি আরও একটু বাড়লে ভাল হয়।” শহরের ১০ ও ১২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারাও জানাচ্ছেন, পুরসভার পুরনো পাইপলাইন এবং দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে আনা জল দু’টি থেকেই পর্যাপ্ত জল মিলছে। তবে শহরের ১৪, ১৫ ও ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের কিছু বাসিন্দা জল পেলেও মাত্রায় কম পাওয়ার অভিযোগ তুলছেন। উপপুরপ্রধান হিরণ জানান, ওই তিনটি ওয়ার্ডে যাতে পর্যাপ্ত জল পৌঁছয়, তার জন্য পৃথক জলাধার তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। সেটি তৈরি হয়ে গেলে সমস্যা মিটে যাবে বলেই আশ্বাস পুরসভার।

  • Link to this news (আনন্দবাজার)