• কলকাতা পুলিশ প্রথম থেকে যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছে কাউকে আড়াল করার চেষ্টা করেনি! আমি ক্রুদ্ধ: সিপি
    আনন্দবাজার | ১৪ আগস্ট ২০২৪
  • আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে তাণ্ডবের পর বুধবার গভীর রাতে সেখানে পৌঁছে ক্ষোভে ফেটে পড়লেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। আরজি করের মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার পর সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন ‘গুজব’ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বিনীত বলেন, “আমি ক্রদ্ধ।” ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তিনি আরও বলেন, “ডিসি নর্থ প্রতিবাদকারীদের রক্ষা করতে গিয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন। তিনি অজ্ঞান হয়ে গিয়েছেন। এখানে যা হয়েছে তা ভুল প্রচারের জন্য হয়েছে। কলকাতা পুলিশ এই বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত।” এর পরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন বিনীত। তিনি বলেন, “কলকাতা পুলিশ কী করেনি। আরজি করের ঘটনার তদন্তের জন্য পুলিশ সব কিছু করেছে। আমি দায়িত্ব নিয়ে এই কথা বলছি। আমার সহকর্মীরা দিন-রাত এক করে দিয়ে এই তদন্তের কিনারা করার চেষ্টা করেছেন। তাঁরা প্রমাণ সংগ্রহে কোনও রকম ত্রুটি রাখেননি। ইতিমধ্যেই মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমরা পরিবারের ওই চিকিৎসকের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। নানা রকম গুজব ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কোনও ‘মহাপাত্র’-এর নাম হাওয়ায় ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই ‘মহাপাত্র’-এর রাজনৈতিক যোগ রয়েছে এবং তিনি এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত! যাঁর নামে এই অভিযোগ তোলা হচ্ছে তিনি এক জন ইন্টার্ন। খুব ছোট জায়গা থেকে তিনি উঠে এসেছেন। আমরা সেটি খতিয়ে দেখেছি। তাঁর বাবা এক জন প্রাথমিক শিক্ষক। তাঁর রাজনৈতিক কোনও যোগ নেই। সাধারণ মানুষ এই গুজব ছড়িয়েছেন। এদের মধ্যে ওঁর নিজের বন্ধুরাও রয়েছেন। যা কি না আরও মর্মান্তিক। আমি ক্রুদ্ধ। যা হয়েছে তার জন্য আমি অত্যন্ত ক্রুদ্ধ। আমরা কোনও ভুল করিনি। নানা ভুল এবং ক্ষতিকারকে প্রচারের কলকাতা পুলিশের সম্মানহানি ঘটেছে। মানুষ আমাদের উপর থেকে ভরসা হারিয়ে ফেলেছেন।”

    তিনি আরও বলেন, “আমরা কখনই বলিনি যে আরজি করের ঘটনায় এক জন জড়িত। আমরা সায়েন্টিফিক তথ্যের অপেক্ষা করেছিলাম। যার জন্য সময় লাগত। অভিযুক্ত বার বার বয়ান পরিবর্তন করছিল। আমাদের কাছেও অকাট্য প্রমাণ ছিল না। আমি কোনও গুজবের ভিত্তিতে কোনও পিজি ছাত্রকে গ্রেফতার করতে পারি না। নানাবিধ ভাবে আমাদের উপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছিল। প্রথম থেকেই আমরা স্বচ্ছ্ব ছিলাম। যা যা করা প্রয়োজন ছিল আমরা তাই-ই করেছি। আমাদের হাত থেকে তদন্ত সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। আমরা তা নিয়েও কিছু বলিনি। সিবিআই এখন তদন্ত করছে। আমরা সব রকম ভাবে তাদের সাহায্য করব। আমরা প্রথম থেকেই স্বচ্ছ্ব ভাবে তদন্ত করে আসছি।’’

    নিহত চিকিৎসকের পরিবার এবং সকলের সঙ্গে স্বচ্ছ্বতা বজায় রেখে পুলিশ চলছে বলেও দাবি করেন সিপি। তিনি বলেন, ‘‘ছাত্রদের একটি সাত সদস্যের কমিটি গঠন করে তদন্তে সব রকম তথ্য দিয়ে সাহায্য করতে বলা হয়েছিল। তাঁরা সেটাও করেননি। মৃতার দেহ নিয়েও নানা গুজব ছড়িয়ে পড়ে যার কোনও বিজ্ঞানসম্মত ব্যাখ্যা ছিল না। এই নিয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচারও চালানো হয়েছে। যা কি না শহরের জন্য দুর্ভাগ্যজনক এবং দুঃখজনক। এর ফলে কলকাতা পুলিশের সম্মানহানি হয়েছে। ভ্রান্তিমূলক প্রচার থেকে বিরত থাকলেই এই ধরনের ঘটনা এড়ানো যেত। আমি এটুকু দায়িত্ব নিয়ে বলতে পারি আমরা কাউকে বাঁচানোর চেষ্টা করিনি। যদি সিবিআই প্রমাণ করতে পারে আমরা এ ধরনের কাজে যুক্ত বা প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করেছি তা হলে আমাদের ধারা ২০১ অনুযায়ী শাস্তি দেওয়া হবে।”
  • Link to this news (আনন্দবাজার)