• ৭৫ মিনিট ধরে শৌচাগারে! তাই সিবিআইকে বাড়ির বাইরে অপেক্ষা করাতে বাধ্য হন, জানিয়েছেন সন্দীপ
    আনন্দবাজার | ২৮ আগস্ট ২০২৪
  • ‘‘শৌচাগারে ছিলাম, তাই শুনতে পাইনি।’’ বাড়ির বাইরে সিবিআই কর্তাদের ৭৫ মিনিট দাঁড় করিয়ে রাখার এমনই কারণ দর্শালেন আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। জানালেন, কেন্দ্রীয় সংস্থার আধিকারিকেরা বাড়ির বাইরে অপেক্ষারত, তা তিনি বুঝতেই পারেননি। যদিও তাঁর এ হেন ‘অজুহাত’-এর আদৌ সত্যতা রয়েছে কি না, খতিয়ে দেখছে সিবিআই। দেখা হচ্ছে তাঁর বাড়ির সিসিটিভি ফুটেজও।

    রবিবার সকালে সন্দীপের বেলেঘাটার বাড়িতে হানা দিয়েছিল সিবিআইয়ের একটি দল। সকাল ৬টা ৫০ মিনিট নাগাদ দলটি সন্দীপের বাড়ির সামনে পৌঁছে যায়। দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে শুরু হয় ডাকাডাকি। কিন্তু দরজা খোলেনি। মেলেনি সাড়াশব্দও। ক্রমে বাড়ির বাইরে স্থানীয়দের ভিড় জমতে শুরু করে। পেরিয়ে যায় এক ঘণ্টা। এর মাঝে সন্দীপকে একাধিক বার ফোনও করেন সিবিআই কর্তারা। সূত্রের খবর, উত্তর মেলেনি। অবশেষে প্রায় ৭৫ মিনিট পর দরজা খুলে বেরিয়ে আসেন সন্দীপ। পরনে পরিপাটি পোশাক, আঁচড়ানো চুল— তৈরি হয়েই দরজা খোলেন তিনি। এক ঘণ্টারও বেশি সময় অপেক্ষার পর সকাল ৮টা ৬ মিনিট নাগাদ ভিতরে ঢোকেন সিবিআই কর্তারা।

    সূত্রের খবর, সন্দীপের দাবি, বাড়ির বাইরে সিবিআই আধিকারিকদের উপস্থিতি টের পাননি তিনি। ৭৫ মিনিট ধরে নাকি শৌচাগারেই ছিলেন! ফলে ডাকাডাকি কিংবা ফোন— কিছুই শুনতে পাননি। বাইরে বেরোনোর জন্য দরজা খুলতেই টের পান, দুয়ারে সিবিআই।

    সূত্রের খবর, চারতলা বাড়ির বিভিন্ন দিকে একাধিক সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে। ভিতরে নাকি রয়েছে লিফ্‌টও! চোখধাঁধানো বাড়ির অন্দরসজ্জা। রবিবার ভিতরে প্রবেশের প্রায় ১৩ ঘণ্টা পর রাত ৮টা ৪৬ মিনিটে সেই বাড়ি থেকে বেরিয়েছে সিবিআই। সন্দীপের বাড়ি থেকে তদন্তে সহায়ক একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নথি মিলেছে বলে সিবিআই সূত্রে খবর।

    গত দু’সপ্তাহ ধরে কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে আরজি করে মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার তদন্ত করছে সিবিআই। বর্তমানে মামলা সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। এ ছাড়া, ওই হাসপাতালে আর্থিক অনিয়মের মামলার তদন্তভারও সিবিআইয়ের হাতে দিয়েছে হাই কোর্ট। দু’টি মামলাতেই আপাতত কেন্দ্রীয় সংস্থার জোড়া আতশকাচের নীচে রয়েছেন আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ। আর্থিক অনিয়মের মামলায় শনিবার এফআইআর দায়ের করেছে সিবিআই। সন্দীপের বিরুদ্ধে ওই এফআইআরে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২০বি এবং ৪২০ ধারার পাশাপাশি প্রতারণার ধারাও (৪৬৭) যোগ করতে চায় তারা। সেই মতো আদালতে আবেদনও করা হয়েছে। সূত্রের খবর, সেই এফআইআরের ভিত্তিতেই রবিবার সন্দীপের বাড়িতে পৌঁছেছিল সিবিআইয়ের দল। ইতিমধ্যেই সন্দীপ-সহ মোট সাত জনের পলিগ্রাফ পরীক্ষা করিয়েছে সিবিআই। এ ছাড়া ‘দুর্নীতি’ বিষয়ক মামলায় সন্দীপ এখন রয়েছেন ইডির নিশানাতেও।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)