• নিয়োগ নেই মালির পদে, ধুঁকছে শহরের ৭০০ পুর উদ্যান
    আনন্দবাজার | ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • থাকার কথা ২৮৪ জন। আছেন মাত্র ৩২ জন। কলকাতা পুরসভা পরিচালিত শহরের প্রায় ৭০০টি উদ্যান মিলিয়ে স্থায়ী মালির সংখ্যা এটাই। দীর্ঘ বছর এই পদে নিয়োগ না হওয়ায় পরিচর্যার অভাবে ধুঁকছে উদ্যানগুলি। অবস্থা সামাল দিতে বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে নিযুক্ত অস্থায়ী মজদুরদের দিয়ে মালির কাজ করানো হচ্ছে। পুরসভার উদ্যান বিভাগের আধিকারিকেরা স্বীকার করে নিচ্ছেন, এ ভাবে পরিস্থিতি সামলানো জোড়াতালি দিয়ে কাজ করারই নামান্তর। স্থায়ী মালি না থাকায় বহু গাছ রক্ষণাবেক্ষণে যে সমস্যা হচ্ছে, তা মেনে নিয়েছেন মেয়র পারিষদ (উদ্যান) দেবাশিস কুমারও। তিনি বলেন, ‘‘গাছ বাঁচাতে ধৈর্য ধরে কাজ করতে হয়। সেই কাজটা মালিরাই করে থাকেন। এখন তাঁদের পরিবর্তে অন্যেরা কাজ করলে সমস্যা তো হবেই।’’

    প্রসঙ্গত, ১৯৮৫ সালের পরে কলকাতা পুরসভার উদ্যান বিভাগ পৃথক ভাবে গঠিত হয়। তার আগে এই বিভাগ ছিল রাস্তা দফতরের অধীনে। পুরসভা সূত্রের খবর, উদ্যান বিভাগ পৃথক ভাবে গঠিত হওয়ার পরে মালির ২৮০টি স্থায়ী পদ তৈরি করা হয়। প্রথম দিকে সব পদেই মালিরা ছিলেন। সমস্যার সূত্রপাত ২০১০ সালের পরে। অনেক মালি অবসর নিলেও স্থায়ী নিয়োগ আর হয়নি। মালির সঙ্কট মেটাতে বছর দুয়েক আগে পুরসভার ১৪৪ জন পুরপ্রতিনিধিকে চিঠি পাঠিয়ে বলা হয়েছিল, তাঁরা যেন তাঁদের ওয়ার্ড থেকে চার জন করে ১০০ দিনের কর্মীকে বেছে দেন, যাঁদের প্রশিক্ষণ দিয়ে মালির কাজ করাবে উদ্যান বিভাগ। সেই পরিকল্পনাও বাস্তবায়িত হয়নি।

    বর্তমান পুর বোর্ড সবুজায়নে জোর দিচ্ছে। মেয়র ফিরহাদ হাকিমও সবুজ রক্ষায় বেশি করে গাছ লাগানোর কথা ঘোষণা করেছেন। পুরসভার উদ্যান বিভাগের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘শুধু গাছ লাগালেই তো হবে না। সেগুলি ঠিক মতো পরিচর্যাও প্রয়োজন। স্থায়ী মালি না থাকায় গাছ বাঁচানোই কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে।’’

    পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, উদ্যান বিভাগে এক সময়ে উদ্যানপালকের ছ’টি স্থায়ী পদ ছিল। তাঁরা অবসর নেওয়ার পরে ওই
    পদেও নিয়োগ হয়নি। পরিবর্তে ২০১৩ সালে ছ’জন অস্থায়ী উদ্ভিদবিজ্ঞানী নিযুক্ত করে পুরসভা। পুর উদ্যান বিভাগের এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, ‘‘গাছ বাঁচানো ও সেগুলির পরিচর্যায় ছ’জন অস্থায়ী উদ্ভিদবিজ্ঞানী কাজ করলেও তাঁরা বেতন বৈষম্যের শিকার।’’ পুর কর্তৃপক্ষ অবশ্য আশ্বাস দিয়েছেন, স্থায়ী মালির পদে দ্রুত নিয়োগ হবে। সেই সঙ্গে অস্থায়ী উদ্ভিদবিজ্ঞানীদের বেতন বৃদ্ধির কথাও ভাবা হচ্ছে।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)