নবরাত্রি শুরুর অনেক আগে থেকেই মুসলিমদের ব্যাপারে মহিলাদের সতর্ক করার পাশাপাশি অনুষ্ঠান চত্বরে ঢুকতে গেলে পরিচয়পত্র দেখানোর মতো নিয়ম জারি করে উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি। পাশাপাশি গরবা অনুষ্ঠানের চত্বরে কোনও মুসলিমকে দেখলে যে ছাড়া হবে না, সে ব্যাপারেও হুঁশিয়ারি দিয়েছিল তারা। নবরাত্রি চলাকালীনই হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা পুলিশের ভূমিকায় নেমে একাধিক মুসলিম ব্যক্তিকে নানা কারণে মারধর করে। চলতি সপ্তাহের গোড়ার দিকে গুজরাতের খেড়া জেলার উন্ধেলা গ্রামে গরবা নাচের আসরে ঢিল ছোড়ার অভিযোগ এনে পাকড়াও করা হয় একাধিক মুসলিম যুবককে। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, এক এক করে কয়েক জন যুবককে বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে লাঠিপেটা করছে কয়েক জন। সেখানে উপস্থিত মহিলারা হাততালি দিয়ে উৎসাও দিচ্ছেন। মার খেতে খেতে অনেক যুবক ক্ষমাপ্রার্থনা করলেও লাঠির বাড়ি থামেনি। মারের পরে তাদের ধাক্কা দিয়ে পুলিশ ভ্যানে তোলা হয়।
এই ভিডিয়োটি ছড়িয়ে পড়ার পরেই সমালোচনায় মুখর হন নেটিজ়েনরা। তাঁদের অভিযোগ, পুলিশ এ ভাবে প্রকাশ্যে কাউকে মারধর করতে পারে কি? বিষয়টি নিয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশনের হস্তক্ষেপও দাবি করা হয়। কিন্তু তা হয়নি। অবশেষে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কাছে দরবার করল তৃণমূল।
ভাইরাল হওয়া ভিডিয়োয় পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ এবং সর্বস্তরে নিন্দার মুখে নড়ে বসেছে গুজরাতের বিজেপি সরকারের পুলিশ। রাজ্য পুলিশের প্রধান আশিস ভাটিয়া জানিয়েছেন, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘ইতিমধ্যেই জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়েছে। ঘটনার বিশদ তদন্ত করতে নির্দেশ দিয়েছি। গুরুত্ব অনুযায়ী প্রত্যেককে শাস্তি দেওয়া হবে।’’ বলা হয়েছে, ভিডিয়োগুলির সত্যতা যাচাই করার পরে ব্যবস্থা নেওয়া হবে অভিযুক্ত পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে।
যদিও সে কাজ কতটা হবে, তা নিয়ে সন্দেহ তৈরি করে রাজ্যের বিজেপি সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্ষ সাংভি পুলিশের বেত মারার প্রশংসা করেছেন। এ নিয়ে মানবাধিকার সংগঠনগুলির কাজের সমালোচনাও করেন তিনি।