দরকারে আরও ৩৩ দিন রাস্তায় পড়ে থাকব, স্বাস্থ্য ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে হুঁশিয়ারি চিকিৎসকদের
আনন্দবাজার | ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
স্বাস্থ্য ভবনের সামনে থেকে আবার সাংবাদিক বৈঠক করলেন আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারেরা। হুঁশিয়ারির সুরে জানালেন, তাঁরা দরকারে আরও ৩৩ দিন রাস্তায় পড়ে থাকবেন।
জুনিয়র ডাক্তারেরা সংবাদমাধ্যমের সামনে বলেন, ‘‘আমরা নবান্নের দুয়ারে পৌঁছে গিয়েছিলাম। কী চেয়েছিলাম? আমাদের বোনের সঙ্গে যে জঘন্য ঘটনা ঘটে গিয়েছে, তার বিচার। ভবিষ্যতে যাতে এমন ঘটনা আর না ঘটে, তার নিশ্চয়তা। তা নিশ্চিত করার জন্য যাঁরা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত, যাঁরা ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে চেয়েছিলেন, তাঁদের শাস্তি চেয়েছিলাম। মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারের উপর ভরসা রেখেই আমরা গিয়েছিলাম।’’
আন্দোলনকারীরা আরও বলেন, ‘‘গত ৩৩ দিন ধরে আমরা রাস্তায়। দরকারে আরও ৩৩ দিন রাস্তায় পড়ে থাকব। কিন্তু বিচার আমাদের চাই। আমরা চেয়ার চাই না।’’
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করতে বৃহস্পতিবার নবান্নে গিয়েছিলেন জুনিয়র চিকিৎসকদের ৩২ জন প্রতিনিধি। তবে বৈঠক হয়নি। নবান্নের দুয়ার থেকে ফিরতে হয়েছে আন্দোলনরত চিকিৎসকদের প্রতিনিধিদের। স্বাস্থ্য ভবনের সামনে অবস্থান মঞ্চেই আবার ফিরে গিয়েছেন তাঁরা। সেখানেই ধর্না চলছে।
বৃহস্পতিবার মমতা আন্দোলনরত ডাক্তারদের কাজে ফেরার অনুরোধ করেছেন। জানিয়েছেন, তাঁদের কর্মবিরতির ফলে ইতিমধ্যে ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে বিনা চিকিৎসায়। সাত লক্ষ মানুষ চিকিৎসা পরিষেবা পাননি। এর পরিপ্রেক্ষিতে জুনিয়র ডাক্তারেরা বলেন, ‘‘যে ভাই মারা গিয়েছে, তার জন্য আমরা দুঃখিত। কিন্তু পরিষেবা চলছে। সিনিয়র ডাক্তারেরা পরিশ্রম করছেন। আমরা এখনও বিশ্বাস করি আলোচনার মাধ্যমেই সমাধানসূত্র বেরিয়ে আসবে।’’
বৃহস্পতিবার নবান্নের তরফে আন্দোলনকারীদের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছিল। জানানো হয়েছিল, মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করবেন। তবে ১৫ জন প্রতিনিধিকে নবান্নে ডাকা হয়েছিল। বৈঠকের সরাসরি সম্প্রচার করা যাবে না, সে কথাও চিঠিতে জানিয়েছিলেন মুখ্যসচিব। তার পরেও নবান্নে যান ডাক্তারদের ৩২ জন প্রতিনিধি। তাঁদের প্রবেশের অনুমতিও দেওয়া হয়। কিন্তু বৈঠকের সরাসরি সম্প্রচারের অনুমতি দেয়নি সরকার। এতে অচলাবস্থা তৈরি হয়। দীর্ঘ ক্ষণ নবান্নের বাইরে অপেক্ষা করেন আন্দোলনকারীরা। সভাঘরে দু’ঘণ্টার বেশি সময় বসে ছিলেন মমতা। বৈঠক ভেস্তে যাওয়ার পর তিনি সাংবাদিক বৈঠক করেন। জানান, তিনি পদত্যাগ করতে রাজি। কিন্তু কিছু মানুষ বিচার চাইছেন না। চেয়ার চাইছেন। অচলাবস্থা কাটাতে না পারার জন্য বাংলার মানুষের কাছে ক্ষমাও চেয়ে নেন মুখ্যমন্ত্রী। এর পরেই নবান্ন থেকে আবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন জুনিয়র ডাক্তারেরা।