• আট মৎস্যজীবীর দেহ বন্ধ কেবিনে! ৩৬ ঘণ্টা পর কাকদ্বীপের উল্টে যাওয়া ট্রলার পারে আনা গেল
    আনন্দবাজার | ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • ৩৬ ঘণ্টা রুদ্ধশ্বাস লড়াই করেও বাঁচানো গেল না মৎস্যজীবীদের। কাকদ্বীপে ট্রলার-ডুবির ঘটনায় আট জন মৎস্যজীবীর দেহ উদ্ধার হল। এখনও এক মৎস্যজীবী নিখোঁজ। জানা গিয়েছে, নিখোঁজ মৎস্যজীবীর নাম নিরঞ্জন দাস। শুক্রবার মাঝরাতে কাকদ্বীপের বাঘের চর থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে বঙ্গোপসাগরে উল্টে যায় মাছ ধরার একটি ট্রলার। সেই ট্রলারে থাকা আট জনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা গেলেও নিখোঁজ ছিলেন ন’জন। তাঁদের সন্ধানে শনিবার সকাল থেকেই সমুদ্রে তল্লাশি অভিযান শুরু হয়। রবিবার উল্টে যাওয়া ট্রলারটিকে টেনে পারে নিয়ে আসা হয়। নিখোঁজ থাকা ন’জনের মধ্যে আট জনের দেহ ট্রলারের বন্ধ কেবিন থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। বাকি এক জনের এখনও খোঁজ পাওয়া যায়নি।

    প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার গভীর রাতে সমুদ্রে উল্টে যায় এফবি গোবিন্দ নামে একটি মাছ ধরার ট্রলার। সেই ট্রলারে ছিলেন ১৭ জন মৎস্যজীবী। আচমকা দমকা হাওয়ার কারণে ট্রলারটি উল্টে যায়। ট্রলার উল্টে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সমুদ্রে ভেসে যান মৎস্যজীবীরা। চার ঘণ্টারও বেশি সময় জলে ভেসে থাকার পর একটি ট্রলার দেখে চিৎকার করেন তাঁরা। সেই চিৎকার শুনে আট জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়। তবে বাকি মৎস্যজীবীদের খোঁজে তল্লাশি অভিযান চলছিল।

    রবিবার বঙ্গোপসাগর থেকে ওই ট্রলাটি টেনে আনা হয় লুথিয়ান দ্বীপের কাছে। সেখান থেকে স্পিডবোট এবং ছোট নৌকার মাধ্যমে মৎস্যজীবীদের দেহগুলি আনা হয় হরিপুর খেয়া ঘাটে। লুথিয়ান দ্বীপে উদ্ধার কাজে যান সুন্দরবন পুলিশ জেলার এসপি কোটেশ্বর রাও এবং এসডিপিও প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন মথুরাপুর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ বাপি হালদার। দেহগুলি হরিপুরের ঘাটে নৌকায় করে নিয়ে আসা হয়।

    এখনও পর্যন্ত এক জনের কোনও সন্ধান মেলেনি বলে জানিয়েছেন সুন্দরবন পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার। মৃতদেহগুলি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে কাকদ্বীপে। তার আগে প্রশাসনের তরফে ওই দেহগুলি শনাক্ত করার জন্য পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আসা হয়। পরে সকলের হাতে সরকারি কাগজপত্র তুলে দেওয়া হয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে। মৃত মৎস্যজীবীদের পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা করবে রাজ্য সরকার এমনটাই জানান সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা।

    মথুরাপুর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ বাপি জানান, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মতো তাঁর একটি দল এই উদ্ধার কাজের পুরো বিষয়টি তদারকি করেছে। মৃত মৎস্যজীবী পরিবারদের যাতে আর্থিক সহযোগিতা করা যায় এবং তাঁদের যাতে কোনও সমস্যা না হয় সে ব্যাপারেও আশ্বাস দেন তিনি। হাসপাতাল চত্বরে মৃত মৎস্যজীবী পরিবারের সদস্যেরা কান্নায় ভেঙে পড়েন।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)