• কবে সরবে জল! উদ্বেগে পুজোর আয়োজকেরা
    আনন্দবাজার | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • ঘাটালে বন্যা পরিস্থিতির ক্রমশ উন্নতি হলেও জনজীবন এখনও ছন্দে ফেরেনি। শহরে এখনও অনেক জায়গায় কোমর সমান জল। কোথাও আবার জলের উচ্চতা সাত ফুট। এদিকে পুজোরও আর বেশি দেরি নেই। এই পরিস্থিতিতে চিন্তায় ঘুম উড়েছে ঘাটালের পুজো উদ্যোক্তাদের। ঘাটাল শহর ও গ্রামের একাধিক পুজো মণ্ডপ এখনও জলের নিচে। সঙ্কটে প্রতিমা শিল্পীরাও।

    টানা বৃষ্টি এবং বিভিন্ন জলাধারের ছাড়া জলে শিলাবতী, রূপনারায়ণ, কংসাবতী, ঝুমি নদী-সহ বিভিন্ন খাল ফুলে উঠেছিল। তার জেরে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল ঘাটালে। কয়েক দিন ধরে আবহাওয়া পরিষ্কার হওয়ায় ঘাটালের বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হতে শুরু করেছে। নদীর জলস্তরও কমছে। রাস্তাগুলি থেকে জল নামতে শুরু করেছে। বিদ্যুৎ পরিষেবাও স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। জল এখনও পুরোপুরি নামেনি। ঘাটাল পুর শহরের ১২টি ওয়ার্ডেই জল রয়েছে। ঘাটাল, দাসপুরের প্রত্যন্ত গ্রামগুলিও জলমগ্ন। জল পুরো নামতে এখনও সাত থেকে দশ দিন সময় লাগবে বলে খবর। তার আগে যদি বৃষ্টি হয় তো পরিস্থিতির অবনতি হবে।

    এই পরিস্থিতিতে মণ্ডপ সময়ে শেষ করার সঙ্গেই বাজেট নিয়েও আশঙ্কা বাড়ছে পুজো উদ্যোক্তাদের। ঘাটাল শহরে বেশ কয়েকটি বড় মাপের মণ্ডপ হয়। শহরের পূব পাড় ছাড়াও পশ্চিম পাড়ে একাধিক মণ্ডপ হয়। এই বন্যায় শহরের পশ্চিম পাড়ের পুজো উদ্যোক্তারাই মূলত সমস্যায় পড়েছেন। ঘাটাল শহরের শুকচন্দ্রপুর, রামচন্দ্রপুর, চাউলি, সিংহপুর, বানেশ্বর মন্দির, তিনের পল্লি, ছয়ের পল্লি, সাতের পল্লি, গ্রামীণ এলাকার মধ্যে মনসুকার দীর্ঘগ্রাম, যদুপুর, দেওয়ানচক এলাকায় একাধিক মণ্ডপে জল রয়েছে। সেখানে সব কাজও বন্ধ।

    ঘাটাল শহরের শুকচন্দ্রপুর পুজো কমিটির কর্মকর্তা জগদীশ শাসমল বলছিলেন, “আমাদের মণ্ডপের ভিতরে কোমর সমান জল। বাঁশ, দড়ি সব ভাসছে।” ছ’য়ের পল্লির কর্মকর্তা শান্তনু পালের আক্ষেপ, “আমাদের মণ্ডপের কাজ শুরু হয়েছিল। বাঁশ বাঁধা চলছিল। তারপরেই বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। এখনও জল নামেনি। সময়ে কী ভাবে কাজ শেষ হবে জানি না।” চাউলি যুব সঙ্ঘের কর্মকর্তা সুজিত জানা বলেন, “আমাদের মণ্ডপের কাঠামো তৈরির কাজ শেষ হয়েছিল। এবার থিমের কাজ শুরু হত। তার আগেই মণ্ডপ জলে ডুবে যায়। এখনও জল।”

    চিন্তা বাড়ছে প্রতিমা শিল্পীদেরও। ঘাটাল শহরের রথতলার প্রতিমা শিল্পী সৌমেন দে-র কথায়, “এখন দুর্গা প্রতিমা ছাড়াও লক্ষ্মী-সহ অনান্য প্রতিমা তৈরির কাজ চলছিল। বন্যার জল তো সব এলোমেলো করে দিয়েছে। কী করে সব সামলাব বুঝতে পারছি না!”
  • Link to this news (আনন্দবাজার)