খুনকে ‘আত্মহত্যা’ বলে চালানোর চেষ্টা? ঘটনায় আরও কেউ? সন্দীপ-প্রশ্নে আরও তদন্ত চায় সিবিআই
আনন্দবাজার | ০৪ অক্টোবর ২০২৪
আরজি করের মহিলা পড়ুয়া চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় ধৃত সন্দীপ ঘোষ এবং টালা থানার তৎকালীন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলের জেল হেফাজতের আবেদন করল সিবিআই। আদালতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা দাবি করেছে, এই মামলায় ধৃতেরা জানেন কোন পথে তদন্ত চলছে। তাই তাঁরা এ সময় জামিনে বাইরে গেলে তথ্যপ্রমাণ নষ্ট করতে পারেন। ধর্ষণ-খুনের ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল। সেই মর্মে সাক্ষীদের বয়ান রেকর্ড করা হচ্ছে।
শুক্রবার শিয়ালদহ আদালতে সিবিআই জানিয়েছে, গত ১ অক্টোবর থেকে ৩ অক্টোবর পর্যন্ত জেলে ছিলেন সন্দীপ এবং অভিজিৎ। কিন্তু জেলে গিয়ে তাঁদের জেরা করা হয়েছিল। তবে জেরাতে অসহযোগিতা করেছেন বলে অভিযোগ সিবিআইয়ের। উল্টে এমন কিছু বলেছেন, তা পরীক্ষা করে দেখার প্রয়োজন রয়েছে।
সিবিআই আরও জানিয়েছে, এই মামলায় ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ারের ভূমিকাও খতিয়েও দেখা হচ্ছে। এই মামলায় আর কে কে জড়িত, ওই ভলান্টিয়ারকে কেউ সাহায্য করেছিলেন কি না, তা-ও তদন্ত করে দেখার প্রয়োজন আছে বলে আদালতে জানিয়েছে সিবিআই। বস্তুত, আরজি কর-কাণ্ডে সন্দীপকে দীর্ঘ দিন সিজিও কমপ্লেক্সে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল সিবিআই। তার পর হাসপাতালে আর্থিক দুর্নীতির মামলায় তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। পরে ধর্ষণ-খুনের মামলাতেও ১৫ সেপ্টেম্বর সন্দীপকে গ্রেফতার করে কেন্দ্রীয় সংস্থা। এ ছাড়া, অভিজিৎকে ওই মামলায় গ্রেফতার করা হয় ১৪ সেপ্টেম্বর। তাঁদের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রমাণ লোপাটের মতো গুরুতর অভিযোগ তোলা হয়েছিল। ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সিবিআই হেফাজতে ছিলেন সন্দীপেরা। তার পর আদালত ৪ অক্টোবর পর্যন্ত জেল হেফাজতে পাঠায়।
শুক্রবার সন্দীপদের জেল হেফাজতের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। তাঁদের আবার ১৪ দিন জেল হেফাজতে পাঠানোর আবেদন করেছে সিবিআই। সেই সঙ্গে জেলে গিয়ে জেরা করার অনুমতি চেয়েছে তারা। সিবিআই আরও জানিয়েছে, ঘটনার পর সন্দীপ এবং অভিজিতের সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছিল। এ ছাড়াও আর কাদের সঙ্গে কথোপকথন হয়, তা খতিয়ে দেখার প্রয়োজন রয়েছে বলে আদালতে জানায় সিবিআই।
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা জানিয়েছে, তারা একই সঙ্গে দুই মামলার তদন্ত করছে। এক, আরজি করের চিকিৎসক খুন-ধর্ষণের মামলা এবং দুই, আরজি করের আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ। সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর মামলার শুনানিতে এই বিষয়টি জানানো হয়েছে। তবে এই দুই মামলা একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কিত না কি আলাদা— তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।