মত্ত অবস্থায় নার্সিং হস্টেলে ঢুকে নার্সদের উদ্দেশ্য করে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি এবং বাইরে শুকোতে দেওয়া পোশাক চুরি করে নেওয়ার অভিযোগ উঠল হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির কর্মীর পুত্রের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত নিজে একটি অ্যাম্বুল্যান্সের মালিকও। আরজি কর-কাণ্ডের প্রেক্ষিতে যখন চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তার দাবিতে আন্দোলন চলছে, তখনই এমন অভিযোগে শোরগোল পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে। হাসপাতালের নার্সেরা জানাচ্ছেন, তাঁরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সূত্রে খবর, ইতিমধ্যে সুপারের অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে কাটোয়া থানার পুলিশ।
কাটোয়া মহকুমা হাসপাতাল চত্বরেই রয়েছে নার্সদের হস্টেল। দোতলা ভবনের দ্বিতলে থাকেন নার্সেরা। কয়েক জন নার্সের অভিযোগ, সোমবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে। এক নার্স বলেন, ‘‘পাশাপাশি ঘরে আমরা দু’জন নার্স দরজা বন্ধ করে বিশ্রাম নিচ্ছিলাম। হঠাৎ দরজায় ধাক্কা দেওয়ার শব্দ শুনি। উঠে দরজা খুলে বাইরে বেরিয়ে আসি। তখন দেখি মুন্না আমাদের বাথরুম থেকে বার হচ্ছে। মত্ত অবস্থায় ছিল ও। ভয়ে আমি দরজা বন্ধ করে পাশের ঘরে থাকা সহকর্মীকে চিৎকার করে ডাকি। তখনও মুন্না বাইরে দাঁড়িয়ে ছিল। পরে বেরিয়ে যায়। কিন্তু যাওয়ার সময় দোতলায় এবং নীচে আমাদের অন্তর্বাস শুকোতে দেওয়া ছিল, সেগুলি নিয়ে পালিয়ে যায়। পুরো ঘটনার কথা হাসপাতালের সুপারকে জানাই।’’ হাসপাতাল সূত্রে খবর, সুপার বিপ্লব মণ্ডল নার্সদের কাছ থেকে ঘটনার বিবরণ শোনার পর পুলিশের দ্বারস্থ হন। অভিযোগ পেয়ে রাতেই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
হাসপাতাল এবং স্থানীয় সূত্রে খবর,অভিযুক্তের বাবা হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণি কর্মী। তাঁদের জন্য নির্দিষ্ট কোয়ার্টারে থাকেন। তাঁর কাছেই থাকেন বছর পঁয়ত্রিশের পুত্র। বাবার কিনে দেওয়া অ্যাম্বুল্যান্স চালান মুন্না। ছেলের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ নিয়ে ওই হাসপাতালের কর্মী কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে সোমবারের ঘটনা ঘিরে হাসপাতালের কর্মীদের মধ্যে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। নার্স হস্টেলে দিনের বেলাতেই কী ভাবে বহিরাগতেরা ঢুকে পড়ছেন এবং এমন গর্হিত কাজ করছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। হাসপাতাল সুপার অবশ্য জানাচ্ছেন, নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশ জানিয়েছে ধৃতের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত চলছে। মঙ্গলবার ধৃতকে কাটোয়া আদালতে হাজির করানো হলে তাঁর পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।