বৃহস্পতিবার রাতেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়েছে সর্বভারতীয় চিকিৎসক সংগঠন ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ)। একই মর্মে প্রশাসনকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে আইএমএ বেঙ্গলও। এ বার ফের ‘চরমতম পদক্ষেপ’ করার ‘হুমকি’ দিল আইএমএ।
শুক্রবারই দিল্লি থেকে আইএমএ-র প্রেসিডেন্ট আরভি অশোকান আসছেন ধর্মতলায় আন্দোলনরত চিকিৎসকদের অনশনমঞ্চে। আরজি করে চিকিৎসাধীন আর এক অনশনকারী জুনিয়র চিকিৎসক অনিকেত মাহাতোর সঙ্গেও দেখা করবেন তিনি। এর পর আইএমএ-র তরফে একটি সাংবাদিক বৈঠকও করা হবে। আইএমএ বেঙ্গল-এর কার্যনির্বাহী দলের চেয়ারম্যান সৌরভ দত্ত বলেন, ‘‘আমাদের ভাই-বোনেরা এ ভাবে অনশনে বসে জীবন বাজি রেখে লড়ছেন। অথচ উল্টো দিকে সরকারের তরফে এখনও পর্যন্ত কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। আমরা শুধু চূড়ান্ত হতাশই নই, বরং ক্ষিপ্ত। আজ বিকেলের মধ্যে যদি সরকারের তরফে কোনও সদর্থক ভূমিকা না নেওয়া হয়, তা হলে আমরা চরম সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হব। আমরা গত কালও চিঠিতে এ কথা জানিয়েছিলাম। সরকার পদক্ষেপ না করলে আমরা আজই সাংবাদিক বৈঠকে সেই সিদ্ধান্ত জানাব।’’
কী হতে পারে সেই সিদ্ধান্ত? সৌরভ বলছেন, ‘‘এ বিষয়ে এখনই কিছু বলতে পারছি না। কিন্তু এটুকু বলতে পারি, সেই সিদ্ধান্ত সত্যিই চরম সিদ্ধান্ত হতে চলেছে। সেই সিদ্ধান্ত পুরো স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে নড়িয়ে দেবে।’’
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ প্রেস বিবৃতিতে রাজ্য প্রশাসনকে একই ধাঁচে বার্তা দেয় আইএমএ বেঙ্গল। ওই বিবৃতিতে বলা হয়, জুনিয়র ডাক্তারদের আমরণ অনশন চলছে। একে একে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন অনশনরত চিকিৎসকেরা। তাঁদের স্বাস্থ্যের অবনতি নিয়ে উদ্বিগ্ন গোটা চিকিৎসক সমাজ। এই পরিস্থিতিতে প্রশাসন অবিলম্বে চিকিৎসকদের সমস্যা সমাধানে নামুক। রাজ্য প্রশাসনকে হুঁশিয়ারিও দেন আইএমএ রাজ্য শাখার চিকিৎসকেরা। জানিয়ে দেন, প্রশাসন উদ্যোগী না হলে চরম পদক্ষেপ করবেন তাঁরা।
শুক্রবার সপ্তম দিনে পা রেখেছে ধর্মতলায় জুনিয়র ডাক্তারদের আমরণ অনশন। গত শনিবার রাত থেকে অনশনে বসেছেন তাঁরা। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার আরজি করের ডাক্তার অনিকেত মাহাতোর শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় রাতে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। এর পরেই অবিলম্বে মীমাংসা চেয়ে প্রশাসনকে বার্তা দেয় আইএমএ। উল্লেখ্য, একই দিনে সর্বভারতীয় রেসিডেন্ট ডাক্তারদের সংগঠন ‘ফেডারেশন অফ অল ইন্ডিয়া মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন’ (এফএআইএমএ) থেকেও মমতাকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। সেই চিঠিতেও রয়েছে হুঁশিয়ারি। দাবি না মানলে দেশ জুড়ে চিকিৎসা পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন এফএআইএমএ-র সদস্যেরা। এমন একের পর এক চিঠিতে সরকারের উপর ‘চাপ’ বাড়ছে।