জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে ১২ ঘণ্টার প্রতীকী অনশনে শামিল হয়েছেন চিকিৎসকেরা। সেই মঞ্চেই হাজির হয়ে তাঁদের সমর্থন জানালেন তৃণমূল বিধায়ক তথা চিকিৎসক প্রদীপকুমার বর্মা। গত শনিবার, ৫ অক্টোবর রাত সাড়ে ৮টা থেকে ১০ দফা দাবিতে ধর্মতলায় ‘আমরণ অনশন’ শুরু করেছেন কলকাতার বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র চিকিৎসকেরা। শুক্রবার জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালেও অনশন হয়। সেখানে জামায় ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ লেখা ব্যাজ পরে দীর্ঘ ক্ষণ সভামঞ্চে বসেছিলেন প্রদীপ। শাসকদলের নেতারা যখন পালা করে জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলনকে কটাক্ষ করে যাচ্ছেন, সেই সময় দলীয় অবস্থানের বিরুদ্ধে চিকিৎসকের প্রতিবাদমঞ্চে হাজির হয়ে তৃণমূল বিধায়ক শাসকদলের ‘অস্বস্তি’ বাড়িয়ে দিলেন বলে মনে করা হচ্ছে।
নিজের অবস্থান প্রসঙ্গে আনন্দবাজার অনলাইনকে প্রদীপ বলেন, ‘‘বিবেকের তাড়নায় এখান এসেছি। আমাদের মেয়ের বয়সি একটি মেয়ের সঙ্গে যে জঘন্য কাণ্ড ঘটে গিয়েছে, সেই ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে আমরা এখানে উপস্থিত হয়েছি।’’ তিনি কি দলীয় অনুমোদন নিয়ে এই মঞ্চে এসেছেন? প্রশ্নের জবাবে জলপাইগুড়ি বিধায়ক বলেন, ‘‘সামাজিক দায়িত্ব ও রাজনৈতিক কর্তব্যের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। দু’টিকে এক করে দেখা উচিত নয়। আমি আমার চিকিৎসক সত্তা থেকে তাগিদ অনুভব করেই এখানে এসেছি। এ ক্ষেত্রে দলের অনুমতি নিইনি।’’
এর আগে তৃণমূলের রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ জহর সরকার আরজি কর হাসপাতালের নৃশংস হত্যার প্রতিবাদ জানিয়ে নিজের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। তৃণমূলের আরও এক রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় ৯ অগস্টের ওই ঘটনার পর বার বার দলবিরোধী মন্তব্য করে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের ‘অস্বস্তি’ বাড়িয়েছেন। আবার তিনি দলীয় মুখপত্রের সম্পাদক পদও ছেড়ে দিয়েছেন। তাই স্বাভাবিক কারণে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে যে, জহর-সুখেন্দুর ‘বিদ্রোহ’-এর পর কি জলপাইগুড়ির চিকিৎসকও একই পথের পথিক হবেন?