তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় চলমান আন্দোলন সম্পর্কে লাগাতার প্রশ্ন তুলে চলেছে তৃণমূল। বিশেষ করে, জুনিয়র চিকিৎসকদের অনশন কর্মসূচি শুরু হওয়ার পরে সরাসরি রাজনীতি করার অভিযোগ তুলেছে তারা। সেই আন্দোলনের সমর্থক দুই সিনিয়র চিকিৎসককে নিয়েও এখন প্রশ্ন তোলা শুরু হয়েছে। তৃণমূলের অভিযোগ, ছাত্রাবস্থায় আর জি কর হাসপাতালে বহু ‘অনিয়ম’ প্রসঙ্গে অভিযোগ উঠেছিল সুবর্ণের বিরুদ্ধে। আর জি করে ২০০১ সালে সৌমিত্র বিশ্বাস নামে এক চিকিৎসক-ছাত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনাতেও সুবর্ণের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। সমাজমাধ্যমে তৃণমূলের দাবি, মৃত ছাত্রের পরিবারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ২৩ বছর আগের মামলা আবার তদন্ত করে দেখা হোক।
যদিও চিকিৎসক সুবর্ণের পাল্টা প্রশ্ন, “রাজ্যে ১৩ বছর ধরে তৃণমূলের সরকার রয়েছে। সরকার কি ২০০১-র ঘটনাটি নিয়ে এত দিন ঘুমোচ্ছিল? তাদের হাতেই তো পুলিশ, সিআইডি রয়েছে। তা হলে এত দিনে কিছু করার থাকলে করতে পারতেন। এমনকি, গত ৯ অগস্ট থেকেও ওই বিষয়টি মনে আসেনি সরকারের!” সুবর্ণের আরও বক্তব্য, “যখন আমরা বিপুল জনসমর্থন নিয়ে ‘দ্রোহের কার্নিভাল’ করে সরকারের মুখে ঝামা ঘষে দিলাম, তখন এ সব শুরু করেছে। ওরা পুলিশ, সিআইডি, আদালত কোথাও কিছু যাচ্ছে না। শুধু সমাজমাধ্যমে বদনাম করার চেষ্টা করছে। কুৎসা করে আন্দোলনের সামনের সারি থেকে হটানো যাবে না। আমরা আন্দোলন তীব্রতর করব!”
চিকিৎসক অভিজিতের সঙ্গে ভুঁইফোঁড় অর্থলগ্নি সংস্থা ‘সারদা’র সম্পর্ক নিয়ে সিবিআইয়ের কাছে বৃহস্পতিবার একগুচ্ছ প্রশ্ন জমা দিয়েছেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। অভিজিতের মাধ্যমে সিপিএমের সঙ্গে সারদা-কর্তা সুদীপ্ত সেনের যোগাযোগের ইঙ্গিতও দিয়েছেন তিনি। সেই সূত্রে সিবিআইয়ের উদ্দেশে কুণালের দাবি, অভিজিত ও তাঁর চিকিৎসা-প্রতিষ্ঠানের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট পরীক্ষা করা হোক। চিকিৎসক অভিজিৎও পাল্টা বলেছেন, “আন্দোলনের চাপে অপ্রকৃতিস্থ হয়ে প্রলাপ বকছেন!”
সিনিয়র চিকিৎসক সরকারি দায়িত্বেই আছেন। চিকিৎসক অভিজিৎ করোনা-কালে সরকারের অন্যতম উপদেষ্টা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। আর জি কর-কাণ্ডের প্রেক্ষিতে আন্দোলনের আবহে প্রতিবাদী সরকারি চিকিৎসকদেরই যে ভাবে শাসক দলের নিশানার মুখে পড়তে হচ্ছে, তা নজিরবিহীন বলেই চর্চা হচ্ছে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক শিবিরের একাংশে।