• হাওড়ায় কারখানায় ভাঙচুর ও মারধরে অভিযুক্ত তৃণমূল
    আনন্দবাজার | ১৯ অক্টোবর ২০২৪
  • আগে দাবি মতো চাঁদা না দিলে কারখানার মালিক ও কর্মীদের মারধর করা হত। অথবা সারা রাত ধরে কারখানার মেশিন চলায় সেই আওয়াজে আশপাশের বাসিন্দাদের ঘুম না হওয়ার অভিযোগ তুলে হামলা করা হত। এ বার কারখানার সামনে লরির চাকায় পিষ্ট হয়ে বৃহস্পতিবার সকালে এক শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় কারখানা কর্তৃপক্ষকে দায়ী করে ওই দিন গভীর রাতে হামলা, মারধর ও ভাঙচুর করার অভিযোগ উঠল শাসকদল তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। ঘটনাস্থল হাওড়ার লিলুয়া থানা এলাকার জাতীয় সড়ক ঘেঁষা চামরাইল।

    ওই ঘটনার পরে শুক্রবার কারখানা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছেন আতঙ্কিত কারখানা কর্তৃপক্ষ। ঘটনার পরে পুলিশ সেখানে গিয়ে তদন্ত শুরু করলেও শুক্রবার রাত পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।

    হাওড়ার ১৬ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে চামরাইল এলাকায় খালের পাশে গজিয়ে উঠেছে সারের একাধিক কারখানা ও গুদাম। বাসিন্দাদের অভিযোগ, মূলত জাতীয় সড়কের ধারের নতুন এই শিল্পতালুক হয়ে উঠেছে দুষ্কৃতীদের তোলাবাজির মুক্তাঞ্চল। এলাকার বিভিন্ন কারখানার মালিকদের অভিযোগ, কোনও না কোনও অজুহাতে জাতীয় সড়ক ঘেঁষা এই শিল্পতালুকের উপরে শাসকদলের মদতপুষ্ট দুষ্কৃতীদের দাদাগিরি যে ভাবে বাড়ছে, তাতে সকলে আতঙ্কিত। অভিযোগ, যখন তখন চাঁদার জুলুম তো আছেই, সেই সঙ্গে রয়েছে মারধর, এমনকি প্রাণনাশের হুমকির প্রবণতা। পুলিশকে বার বার জানিয়েও সুরাহা হয়নি। বরং অত্যাচার উত্তরোত্তর বাড়ছে।

    যে কারখানায় বৃহস্পতিবার রাতে হামলা হয়, সেই কারখানার ম্যানেজার সুধীর আগরওয়াল বলেন, ‘‘সকালে আমাদের কারখানার সামনে একটা দুর্ঘটনা ঘটেছিল। তখন কিছু হয়নি। কিন্তু সারাদিন পরে ওই রাতে ৩০-৪০ জন যুবক কারখানায় ঢুকে আমাদের দারোয়ানকে প্রথমে মারধর করে। এর পরে সব কর্মীদের কারখানার ভিতরে বন্ধ করে দিয়ে প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে অবাধে তাণ্ডব চালিয়ে চলে যায়।’’

    সুধীরের অভিযোগ, কোনও না কোনও কারণে এ ভাবেই কারখানাগুলির উপরে আক্রমণ চলছে। এ জন্য কারখানা চালাতে ভয় পাচ্ছেন কর্তৃপক্ষ। এলাকার অন্য কারখানার মালিকদের অভিযোগ, গত রাতে কারখানায় হামলার ঘটনা ঘটেছে স্থানীয় দুই তৃণমূল নেতা বিকাশ আইন ও জীবন আইনের উপস্থিতিতে। কারখানার সিসি ক্যামেরার ফুটেজেও দেখা গিয়েছে তাঁদের মারধর করতে। তার পরেও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।

    তবে শুক্রবার ওই কারখানায় হামলার কথা স্বীকার করেননি দুই নেতা। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘এই সব কারখানার শব্দের অত্যাচারে সাধারণ মানুষ রাতে ঘুমোতে পারছেন না। আমরা সেটাই বোঝাতে গিয়েছিলাম। কাউকে মারধর করা হয়নি। ভাঙচুরও হয়নি।’’

  • Link to this news (আনন্দবাজার)