সাসপেন্ড হওয়া চিকিৎসকদের আইনজীবী মঙ্গলবার আদালতে অভিযোগ করেন, কেন তাঁর মক্কেলদের কলেজ কর্তৃপক্ষ সাসপেন্ড করেছেন তা নিয়ে স্পষ্ট করে রেজোলিউশনে কিছু বলা হয়নি। তাঁর আরও অভিযোগ, ওই ৫১ জনকে সঙ্গত কারণ ছাড়াই সাসপেন্ড করা হয়েছে। আরজি করের আইনজীবী দাবি করেন, কর্তৃপক্ষ কাউকে সাসপেন্ড করেননি। ওই রেজোলিউশন রাজ্যের কাছে পাঠানো হবে। রাজ্য সরকার এই নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।
সোমবার নবান্নের বৈঠকে এই প্রসঙ্গ উঠে এসেছিল। মুখ্যমন্ত্রী বৈঠকে বলেন, আলোচনা ছাড়াই ওই জুনিয়র ডাক্তারদের সাসপেন্ড করা হয়েছে। এটাও কি এক ধরনের ‘থ্রেট কালচার’ নয়, সেই প্রশ্নও তোলেন তিনি। এ জন্য আরজি করের অধ্যক্ষকে ‘ধমক’ও দিয়েছিলেন। সেই সময় আরজি করের জুনিয়র ডাক্তার অনিকেত মাহাতো দাবি করেন, নির্দিষ্ট কমিটি তদন্ত করে ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী যদিও স্পষ্ট জানিয়ে দেন, কোনও রকম পক্ষপাতিত্ব চলবে না। তিনি বলেন, ‘‘এটা কি থ্রেট কালচার নয়? তদন্ত না করে কাউকে সাসপেন্ড করা যায় না। ইচ্ছে মতো কাজ করবেন না। কেউ কাউকে থ্রেট করবেন না। আমি ক্ষমতায় রয়েছি বলে থ্রেট করতে পারি না।’’
মঙ্গলবার হাই কোর্টে আরজি করের আইনজীবী দাবি করেন, কর্তৃপক্ষ কাউকে সাসপেন্ড করেননি। রেজোলিউশন রাজ্যের কাছে পাঠানো হবে। তার পরেই বিচারপতি চন্দ জানান, এই সাসপেনশন নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে রাজ্য সরকার।
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে এক চিকিৎসক-পড়ুয়াকে ধর্ষণ এবং খুনের অভিযোগ ওঠে। সেই আবহে পড়ুয়ারা হাসপাতালের ‘থ্রেট কালচার’ নিয়ে সরব হয়ে আন্দোলনে নামেন। গত সেপ্টেম্বরে আরজি কর হাসপাতালের কলেজ কাউন্সিল ৫১ জন চিকিৎসককে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নেয়। এই ৫১ জনের বিরুদ্ধে হাসপাতালে থ্রেট কালচার চালানো, আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করারও অভিযোগ রয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে জমা পড়ে জুনিয়র ডাক্তারদের অভিযোগ। অভিযুক্ত কয়েক জনের নামের তালিকাও দেওয়া হয়। সেই তালিকায় থাকা অভিযুক্তদের তলব করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তার পর তাঁদের সাসপেন্ড করা হয়। কয়েক জনকে ঢুকতে বারণ করা হয় হস্টেলেও। সাসপেনশনের বিরুদ্ধে সরব হয়ে ওই ৫১ জনই হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন। অন্য দিকে, হস্টেলে ঢুকতে বারণ করায় গত ১৮ অক্টোবর হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন ৩১ জন জুনিয়র ডাক্তার। তাঁরা অভিযোগ করেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁদের সাসপেন্ড করায় পুলিশ হস্টেলে ঢুকতে দিচ্ছে না। সেই মামলা দায়ের করারও অনুমতি দেওয়া হয়। এ বার হাই কোর্ট জানাল, সমস্ত সিদ্ধান্তই নেবে রাজ্য।