২০২১ সালে করোনার সময়ে আছড়ে পড়েছিল ঘূর্ণিঝড় ‘আমপান’। পরিস্থিতি সামাল দিতে কলকাতা পুরসভাকে বেগ পেতে হয়। তা থেকে শিক্ষা নিয়ে সতর্ক পুর কর্তৃপক্ষ। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার মধ্যরাতের আশপাশে ওড়িশার ভিতরকণিকা এবং ধামারা দিয়ে স্থলভাগে প্রবেশ করতে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’। পূর্বাভাস অনুযায়ী গতিপথ ধরে বয়ে গেলে কলকাতায় ঘূর্ণিঝড়ের প্রত্যক্ষ প্রভাব তেমন পড়বে না বলে মত আবহবিদদের একাংশের। তবে, ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকছেই।
তবে, সব রকম পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত পুরসভা। পুর কমিশনার ধবল জৈনকে নোডাল অফিসার করে বোরো এবং ওয়ার্ডভিত্তিক দল গঠন করা হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এনডিআরএফ)-এর দলকে। কলকাতা পুরসভার একটি সূত্র জানাচ্ছে, পুরসভার সদর দফতরে ২৪ ঘণ্টা কন্ট্রোল রুম খোলা থাকবে। সেখান থেকে সিসিটিভির মাধ্যমে শহর জুড়ে চলবে নজরদারি। ঘূর্ণিঝড়ের জন্য বুধবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত সব কন্ট্রোলিং অফিসার এবং জরুরি বিভাগের কর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। বুধবার থেকে বন্ধ করা হয়েছে শহরের সব ত্রিফলা আলো। ঝড়বৃষ্টির সময়ে শর্ট সার্কিট থেকে দুর্ঘটনা এড়াতে এই সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছেন পুরসভার আধিকারিকেরা। পাশাপাশি, জল জমে এমন এলাকাগুলিতে ইলেকট্রিক ফিডার বক্সের সুইচ বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। এই মর্মে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে সিইএসসিকেও।
রাস্তায় গাছ ভেঙে পড়লে তা দ্রুত সরানোর জন্য হাইড্রোলিক ল্যাডার, ক্রেন, পে লোডার, ডাম্পারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। কলকাতার ১৬টি বোরো অফিসে পুরসভার একটি বিশেষ প্রতিনিধি দল তৈরি থাকছে। যে কোনও প্রয়োজনে পরিস্থিতি মোকাবিলায় তাদের দেওয়া হয়েছে প্রশিক্ষণও। অন্য দিকে, জল জমার সমস্যা এড়াতে নিকাশি বিভাগকে প্রস্তুত থাকতে বলেছেন মেয়র পারিষদ (নিকাশি) তারক সিংহ। শহরের বুস্টার পাম্পিং স্টেশনগুলিতেও সব রকম প্রস্তুতি সেরে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। ২৮১টি নিকাশি মেশিন এবং ৪৫২টি পাম্প সক্রিয় রাখা হয়েছে।
বিপজ্জনক বা ভগ্নপ্রায় বাড়িগুলির বাসিন্দাদের সতর্ক করে মাইকে প্রচার চলছে। সেখানকার বাসিন্দাদের ২৪, ২৫ এবং ২৬ অক্টোবর কলকাতা পুরসভার আশ্রয় শিবিরে থাকার পরামর্শও দেওয়া হচ্ছে।