বাস্তবে দেখা গেল, কালীপুজোর রাত গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সেই আশঙ্কাই সত্যি হল। আগের দিন থেকে ফাটতে থাকা দেদার শব্দবাজি ধরতে বৃহস্পতিবারেও একই ভাবে নাস্তানাবুদ হল পুলিশ। কিছু জায়গায় ধরপাকড় হলেও শহর বাজির তাণ্ডব-মুক্ত হল না। যা নিয়ে পরিবেশকর্মী তথা সবুজ মঞ্চের আহ্বায়ক নব দত্ত বললেন, ‘‘আমরা যা যা অভিযোগ পাচ্ছি, সেগুলি মারাত্মক। আমাদের কাছেই যদি এই পরিমাণ অভিযোগ আসে, তা হলে পুলিশের কাছে নিশ্চয়ই আরও বেশি অভিযোগ এসেছে। কিন্তু দিনের শেষে পুলিশ-প্রশাসন এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ ছেলেখেলা করেছে।’’
সচেতন নাগরিকদের অনেকের অভিযোগ, এমনই ‘ছেলেখেলা’র চিত্র দেখা গিয়েছে কসবায়। রাসবিহারী কানেক্টরের উপরে বাজি বসিয়ে আগুন ধরাতে দেখা গিয়েছে কয়েক জনকে। সেখান দিয়ে দ্রুত গতিতে যাওয়া একটি গাড়ি ব্রেক কষে দুর্ঘটনা এড়িয়েছে। কিছু গাড়িতে আবার চকলেট বোমা জ্বালিয়ে ছুড়ে দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে। কাছেই কর্তব্যরত পুলিশকর্মী স্রেফ দর্শকের ভূমিকায় থেকেছেন বলে অভিযোগ। বাজির তাণ্ডবের নিরিখে ‘কালো তালিকাভুক্ত’ কসবার মতোই বেশ কিছু এলাকা, যেমন বেহালা, বালিগঞ্জের একাংশ, চেতলা, কালীঘাট, প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডের কিছু অংশ, বেলেঘাটা, তপসিয়া, তিলজলা, কাশীপুর, বেলগাছিয়াতেও একই চিত্র দেখা গিয়েছে। হাজরা মোড়ের কাছে এক জায়গায় মধ্যরাত থেকে বাজির দাপটে অতিষ্ঠ হয়ে পুলিশে অভিযোগ করেছিলেন এক প্রবীণ। অভিযোগ, তিনি সুরাহা তো পানইনি, উল্টে বাড়ি এসে শাসিয়ে যাওয়া হয়েছে।
এ নিয়ে লালবাজারের কর্তাদের কেউ প্রকাশ্যে প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি। তবে ১০০ ডায়ালে ফোন করে জানতে চাওয়া হলে বলা হয়, ‘‘এলাকায় এলাকায় পুলিশের গাড়ি ঘুরছে। অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’ এ দিনও বিভিন্ন জায়গায় বেআইনি বাজি বিক্রির বিষয়ে পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘পুলিশের ভাবমূর্তি আর যাতে খারাপ না হয়, সেই নির্দেশ রয়েছে। ফলে, ধরপাকড়ের চেয়ে বুঝিয়ে কার্যোদ্ধারের চেষ্টাই হচ্ছে।’’ কিন্তু তাতে কাজ হচ্ছে কই? এ দিন রাত ৮টা পর্যন্ত বিভিন্ন অভিযোগে ৩৩ জনকে ধরেছে পুলিশ। তাঁদের মধ্যে সাত জনকে ধরা হয়েছে নিষিদ্ধ শব্দবাজি ফাটানোর অভিযোগে।