পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রের খবর, মৃত ছাত্রীর বাড়ি ধাত্রীগ্রামে। তিনি কৃষ্ণদেবপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে বিজ্ঞান বিভাগে পড়তেন। প্রতি দিনই মায়ের সঙ্গে কালনায় এক শিক্ষকের কাছে ইংরেজি পড়তে আসতেন। শুক্রবারও পড়তে এসেছিলেন। কিন্তু অন্য দিন যে সময় পড়া শেষ হয়, শুক্রবার তার কিছুটা আগেই শিক্ষকের বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান ছাত্রীটি। তার কিছু ক্ষণ পরেই মায়ের কাছে ফোন করেন ছাত্রীটি। তখন তিনি তাঁর মাকে বলেন, ‘‘ওরা আমাকে বাঁচতে দেবে না।’’ তার পরই ফোন কেটে যায় বলে দাবি ছাত্রীর মায়ের। তার পর থেকে ফোন করে গেলেও ছাত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
এর পরই কালনা থানার দ্বারস্থ হয় ছাত্রীর পরিবার। একটি নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। অভিযোগ পেয়েই ছাত্রীর খোঁজে তল্লাশি শুরু করে পুলিশ। সন্ধ্যা ৭টার কিছু পরে রেলপুলিশের (জিআরপি) কাছ থেকে কালনা থানায় খবর আসে কালনা স্টেশন থেকে কিছুটা দূরে এক কিশোরীর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে। তার পরই ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ এবং ছাত্রীর পরিবার। ছাত্রীটিকে শনাক্ত করা হয়।
এই ঘটনার পরই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, পড়া শেষ হয়ে যাওয়ার পর কেন কালনা স্টেশনের দিকে গিয়েছিলেন ছাত্রী? কেন হঠাৎ মাকে ফোন করে বললেন, ‘‘ওরা আমাকে বাঁচাতে দেবে না।’’ ‘ওরা’ বলতে কাদের কথা বলতে চেয়েছিলেন তিনি? টিউশন থেকে কেনই বা আধ ঘণ্টা আগে বেরিয়েছিলেন তিনি? পুলিশ জানিয়েছে, সিসিটিভি ফুটেজে শুক্রবার সন্ধ্যায় কালনায় প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছিল ছাত্রীকে। ওভারব্রিজে উঠে আবার নেমে যান তিনি। মায়ের সঙ্গে প্রতি দিনই পড়তে আসতেন ছাত্রীটি। বাড়ির দিকে না গিয়ে দেড় কিলোমিটার উল্টো দিকের রাস্তায় কেন গিয়েছিলেন, তার উত্তর খুঁজছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা ৩৮ মিনিটে কালনা স্টেশনে আসেন তিনি। ৬টা ৫২ মিনিটে মাকে ফোন করেন। পরিবারের অভিযোগ, আত্মহত্যা নয়, ছাত্রীটিকে খুন করা হয়েছে। ছাত্রীর কাকার দাবি, ‘‘শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় শিক্ষকের বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল ও। তার পরই মাকে ফোন করে বলে, ‘ওরা আমাকে বাঁচতে দেবে না।’ কোনও আত্মহত্যা নয়। ওকে খুন করা হয়েছে।’’