গত ৯ অগস্ট আরজি করের জরুরি বিভাগের চার তলার সেমিনার কক্ষ থেকে উদ্ধার হয়েছিল মহিলা চিকিৎসকের দেহ। তাঁকে ধর্ষণ এবং খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ। প্রথমে বিষয়টির তদন্ত চালাচ্ছিল কলকাতা পুলিশ। পুলিশের ফোর্থ ব্যাটালিয়নের ব্যারাক থেকে অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। পরে হাই কোর্টের নির্দেশে তদন্তভার যায় সিবিআইয়ের হাতে। গত ৭ অক্টোবর চার্জশিট জমা দিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। মহিলা চিকিৎসকের দেহ উদ্ধারের ৫৮ দিনের মাথায় শিয়ালদহ আদালতে জমা পড়েছিল ওই চার্জশিট। সেখানেও অভিযুক্ত হিসাবে শুধুমাত্র ওই সিভিক ভলান্টিয়ারেরই নাম রয়েছে।
আরজি কর-কাণ্ডের ৮৭ দিন এবং সিবিআইয়ের চার্জশিট জমা দেওয়ার ২৮ দিনের মাথায় গত সোমবার ওই মামলায় চার্জ গঠন হয় শিয়ালদহ আদালতে। আদালত জানিয়েছিল, ১১ নভেম্বর থেকে ওই মামলার বিচার প্রক্রিয়া শুরু হবে। রোজ শুনানি চলবে বলেও জানানো হয়েছিল। সিবিআইয়ের আইনজীবী জানিয়েছিলেন, চার্জশিটের ভিত্তিতে আপাতত বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে।
বিচার শুরু হওয়ার মুখেও আরজি কর খুন ও ধর্ষণের মামলায় বিতর্কের শেষ নেই। চার্জ গঠনের পর গত সোমবার অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার আদালত চত্বরে যে দাবি করেছেন, তা হাতিয়ার করেছেন আন্দোলনকারীরা। প্রিজ়ন ভ্যানের ভিতর থেকে চিৎকার করে দাবি করেছেন তিনি ‘নির্দোষ’। তাঁকে ‘ফাঁসানো’ হচ্ছে বলেও দাবি করেছেন অভিযুক্ত। আঙুল তুলেছিলেন সরকারের দিকে। প্রিজ়ন ভ্যানের জানালা থেকে বলেছিলেন, “আমি এত দিন চুপচাপ ছিলাম। আমি কিন্তু রেপ (ধর্ষণ) অ্যান্ড (এবং) মার্ডার (খুন) করিনি। আমার কথা শুনছে না। সরকারই আমাকে ফাঁসাচ্ছে। আমি এত দিন চুপচাপ ছিলাম।” তাঁর দাবি ছিল, ‘আসল’ অভিযুক্তদের বাঁচানোর জন্য তাঁকে ‘ফাঁসানো’ হচ্ছে।
গ্রেফতারির পর থেকে গত সোমবারের আগে পর্যন্ত এ ভাবে সর্বসমক্ষে নিজের সাফাই দিতে দেখা যায়নি অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ারকে। আরজি করের ধর্ষণ ও খুনের মামলায় বিচার প্রক্রিয়া শুরু হলে সেই ‘ফাঁসানো’-র তত্ত্বও আদালতে উঠে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। শিয়ালদহ আদালতে কী কী প্রসঙ্গ উঠবে সোমবার? তা নিয়ে কৌতূহল দানা বাঁধতে শুরু করেছে।
সোমবার শিয়ালদহ আদালতে কী হয়, সে দিকে নজর রাখছেন আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারেরাও। দেহ উদ্ধারের ঘটনার পর থেকে বিভিন্ন সময়ে জুনিয়র ডাক্তারেরা সন্দেহ প্রকাশ করেছেন যে, ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় একাধিক ব্যক্তি জড়িত থাকতে পারেন। তবে শুরুর দিকে পুলিশের তদন্তে বা পরে সিবিআইয়ের তদন্তে এখনও পর্যন্ত এমন কোনও তথ্য মেলেনি।