• বাংলাদেশের ঘটনা নিয়ে অভিষেকের সুরই শোনা গেল তৃণমূলনেত্রীর কণ্ঠে, জানালেন দলের অবস্থান
    আনন্দবাজার | ২৯ নভেম্বর ২০২৪
  • বাংলাদেশ নিয়ে ভারত সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে, তাকেই সমর্থন করবেন তিনি। বৃহস্পতিবার বিধানসভার অধিবেশনে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে এ কথা জানালেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘কলকাতার ইসকনের সঙ্গে দু’বার কথা বলেছি। এটা অন‍্য দেশের বিষয়। এ ক্ষেত্রে দেশের সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে আমি তার সঙ্গে আছি।’’ বুধবার সংসদের বাইরে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে প্রায় একই কথা বলেছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি, বাংলাদেশের ঘটনাকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলেও মন্তব্য করেছিলেন তিনি। অভিষেকের সেই মন্তব্যের সুরেই বাংলাদেশ প্রসঙ্গে এ বার দলের অবস্থান জানালেন মমতা। বাংলাদেশের নাম উল্লেখ না-করে তৃণমূলনেত্রী এটাও জানিয়েছেন যে, কোনও ধর্মের উপর অত্যাচার তিনি মানবেন না। তা যদি অন্য দেশেও হয় তা-ও মানবেন না।

    গত সোমবার মমতার কালীঘাটের বাড়িতে তৃণমূলের জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠক বসেছিল। সেই বৈঠকে অভিষেকও ছিলেন। বৈঠকের নানাবিধ সিদ্ধান্ত থেকে স্পষ্ট হয়েছিল, তৃণমূলের সংগঠনে মমতাই নিরঙ্কুশ। একমেবাদ্বিতীয়ম! ওই বৈঠকের পর দলেরই কারও কারও মনে হয়েছে, অভিষেকের ভূমিকাকে ‘গৌণ’ করে দেওয়া হয়েছে। যা নিয়ে শাসকদলের মধ্যে আলোচনাও শুরু হয়ে যায়। তবে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে এ বার মমতা এবং অভিষেককে একই সুরে কথা বলতে শোনা গেল।

    সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে যোগ দিতে অভিষেক এখন দিল্লিতে। অধিবেশনের পর বাংলাদেশ নিয়ে অভিষেক বুধবার বলেন, ‘‘এটা বিদেশের ব্যাপার। এটা নিয়ে আমরা কোনও মন্তব্য করব না। তবে তৃণমূলের অবস্থান এ বিষয়ে খুব স্পষ্ট। বিদেশে এই ধরনের কোনও ঘটনা ঘটলে ভারত সরকার যে অবস্থান নেবে, তৃণমূল তাকে সমর্থন করবে। বাংলাদেশে যা হয়েছে, তা দুর্ভাগ্যজনক।’’

    বাংলাদেশ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে নয়াদিল্লিও। বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠকে বসেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। সংখ্যালঘু নেতা চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারি নিয়ে উত্তাল গোটা বাংলাদেশ। জায়গায় জায়গায় বিক্ষোভ চলছে। হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশজোড়া অশান্তির আবহে বেশ কিছু ধর্মীয় সংগঠন মিলে তৈরি করে সনাতনী জাগরণ মঞ্চ। মঞ্চের মুখপাত্র নির্বাচিত হয়েছিলেন চিন্ময়। তাঁরই ডাকে ঢাকার শহিদ মিনার, চট্টগ্রাম ইত্যাদি নানা এলাকায় সমাবেশে যোগ দেন হাজার হাজার সংখ্যালঘু। চট্টগ্রামে সমাবেশের পর তাঁর বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের মামলা করেছিলেন স্থানীয় এক বিএনপি নেতা। ওই মামলাতেই সোমবার তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। চিন্ময়কৃষ্ণের গ্রেফতারির পর বাংলাদেশে ইসকনের তরফে বিক্ষোভ শুরু হয়, যার নেতৃত্ব দেন চিন্ময়কৃষ্ণের অনুরাগীরাই। চিন্ময়ের মুক্তির দাবিতে মূলত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ পথে নেমেছেন। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের হাই কোর্টে আবেদন জানানো হয়, ইসকনকে নিষিদ্ধ করা হোক। জরুরি অবস্থা জারি করা হোক চট্টগ্রাম এবং রংপুরে। মঙ্গলবার চিন্ময়কৃষ্ণকে আদালত থেকে বার করার সময় আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী এবং আইনজীবীদের সঙ্গে তাঁর অনুগামীদের সংঘর্ষ বাধে। ঘটনায় এক আইনজীবীও নিহত হন।

  • Link to this news (আনন্দবাজার)