• Jobs in Abroad: টার্গেট পূরণ না করলেই ইলেকট্রিক শক! বিদেশে মোটা মাইনের চাকরির ফাঁদে ভারতীয় যুবকরা
    এই সময় | ০৮ অক্টোবর ২০২২
  • বিদেশে চাকরি করতে গিয়ে ভয়াবহ অভিজ্ঞতা ৮০০ জনেরও বেশি ভারতীয় যুবকের। চাকরির ভুয়ো টোপ দিয়ে বেআইনি কাজ করানোর অভিযোগ। সঙ্গে নৃশংস অত্যাচারের অভিযোগ। টার্গেট পূরণ না হলে ইলেকট্রিক শক দেওয়ার অভিযোগ। মায়ানমার (Mayanmar), Bangkok থেকে বিদেশ মন্ত্রালয়ের হস্তক্ষেপে উদ্ধার নির্যাতিত ৪৫ জন যুবকের অভিজ্ঞতার কথা শুনে শিউরে উঠছেন সকলে। জানা গিয়েছে, বিদেশে আইটি-তে মোটা মাইনের চাকরির টোপ দিয়ে নিয়ে গিয়ে সাইবার ক্রাইমের কাজ করানো হত হতভাগ্য ভারতীয় যুবকদের। পাসপোর্ট কেড়ে নিয়ে রীতিমতো দাস বানিয়ে রাখা হয়েছিল।

    ''যে মুহূর্তে মায়ানমারের সেনা আধিকারিকরা ওই অফিসের দরজা ভেঙে ঢুকলেন, যেখানে আমাদের বন্দি করে রাখা হয়েছিল, আমি তখনই প্রথমবার মুক্তি স্বাদ কী বুঝেছিলাম।'' কথা বলতে গিয়ে এখনও গলা কাঁপছে তামিলনাড়ুর ২৯ বছরের টেকি সি স্টিফেন ওয়েসলি (C Stephen Weasly)। মায়ানমার থেকে উদ্ধার হওয়া ৪৫ যুবকের মধ্যে একজন সি স্টিফেন। বেঙ্গালুরুতে গ্রাফিক্স ডিজাইনারের কাজ করতেন তিনি। অতিমারির সময়ে মোটা টাকার অফার পেয়ে বেঙ্গালুরুর চাকরি ছেড়ে ফ্রিলান্স কনসালটান্ট হিসেবে কম্বোডিয়া (Combodia) যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। চাকরিটি একটি নিয়োগ সংস্থার মাধ্যমে পেয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন এই যুবক। তারপরই ওই সংস্থার তরফে দুবাইতে এক ইন্টারভিউয়ের জন্য পাঠায়। যেখানে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে এবং মুখোমুখি ইন্টারভিউ নেন ছয়জন ভদ্রলোক ও ভদ্রমহিলা। সেখানে পাস করার পর তাঁকে জানানো হয় থাইল্যান্ডের এক কোম্পানিতে তাঁকে নিযুক্ত করা হয়।

    তামিলনাড়ুর যুবক জানিয়েছেন তাঁর সঙ্গে আরও সাত যুবক সেখানে ছিল। তাঁরা ১৫ দিন দুবাইতে কাটানোর পর তাদের ব্যাঙ্কক নিয়ে যাওয়া হয়। স্টিফেন জানিয়েছেন, যদিও থাইল্যান্ডে কাজ করার জন্য তাদের কাছে কোনও ওয়ার্ক ভিসা ছিল না। এয়ারপোর্টে নামার পর স্থানীয় কিছু লোক তাদের নিতে আসে এবং সেখানে তাদের অ্যারাইভ্যাল ভিসা দেওয়া হয়। এরপরই শুরু হয় দুঃস্বপ্ন।

    স্টিফেন ও বাকি উদ্ধার হওয়া তরুণদের বয়ান অনুযায়ী, তাদের এয়ারপোর্ট থেকে অনেক দূরে জঙ্গলের মধ্যে একজায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর বন্দুকধারী দুই জন লোক তাদের জোর করে নদী পার করে আরও গভীর জঙ্গলে নিয়ে যায়। তারপর গন্তব্যে পৌঁছনোর পর কেড়ে নেওয়া হয় তাদের পাসপোর্ট। এরপর রীতিমতো বন্দি করে রাখা হত তাদের। জোর করে বেআইনি কাজ করানো হত। ডেটিং অ্যাপসে মডেলদের ফেক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে বড়লোক ব্যবসায়ীদের স্টক মার্কেটে বিনিয়োগ করাতে রাজি করাতে হত। এছাড়াও থাকত আরও বেআইনি কাজের দাবি। কেউ বড় অ্যামাউন্টের টাকা বিনিয়োগ করলেই সেই টাকা চুরি করে ব্লক করে দেওয়া হত সেই গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট। প্রত্যেক কর্মচারীদের নির্দিষ্ট টার্গেট ছিল। সেই লক্ষ্য পূরণ না করলেই জুটত ইলেকট্রিক ব্যাটনের শক। কেউ কাজ না করতে চাইলেও কপালে জুটত এমনই বিদ্যুতের ঝটকা।

    মাসের পর মাস এমন অমানুষিক অত্যাচারের পর চলতি বছরের ১৫ অগাস্ট ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের হস্তক্ষেপে সেখানকার সেনা উদ্ধার করে এই বন্দি কর্মচারীদের। দীর্ঘদিন বাড়ির লোক খোঁজ না পেয়ে দায়ের হয়েছিল রিপোর্ট। সেখান থেকেই পর্দাফাঁস এই চক্রের। তবে ফেরার আগেও একাধিক আইনি ঝামেলা পোহাতে হয়েছে এই ৪৫ ভারতীয়কে।

    দেশের আরও খবরের জন্য ক্লিক করুন । প্রতি মুহূর্তে খবরের আপডেটের জন্য চোখ রাখুন এই সময় ডিজিটালে।
  • Link to this news (এই সময়)